সাতপাক ঘোরার আগে পরিচালক অয়ন মুখোপাধ্যায়, কর্ণ জোহরের সঙ্গে দেখা হতেই আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন নবদম্পতি। চোখে জল আসে চার জনেরই। আলাদা করে একটি ঘরে খানিক ক্ষণ সময় কাটান চার বন্ধু মিলে। মনের কথা বলে হাল্কা হন প্রত্যেকেই।
নবদম্পতি রূপে আলিয়া-রণবীরের প্রথম ছবি
‘মিস্টার অ্যান্ড মিসেস কপূর’। নতুন জীবন শুরু হল রণবীর কপূর এবং আলিয়া ভট্টের। বলিউডে নতুন তারকা দম্পতি। প্রায় ৫ বছরের প্রেম নতুন মোড় নিল বৃহস্পতিবার। বান্দ্রার ‘বাস্তু’তে এ বার শুরু হবে নতুন সংসার। নতুন জীবনে পা রাখার পরেই প্রকাশ্যে ‘ব্রহ্মাস্ত্র’র নায়ক-নায়িকার প্রথম ‘বিবাহিত’ ছবি। সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরায় ধরা পড়লেন নবদম্পতি। দূরে ছাদে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছিলেন রণবীর-আলিয়া। প্রথম ফ্রেমবন্দি হয় সেই মুহূর্তই।
সেই ছবি খুব স্পষ্ট না হলেও একটা জিনিস পরিষ্কার ছিল— বাঙালি পোশাকশিল্পী সব্যসাচীর পোশাকে সেজে বিয়ে করেছেন বর-কনে। গোলাপি আর সাদা রঙের শেরওয়ানি এবং লেহঙ্গায় সেজেছেন তাঁরা। আলিয়ার চুল খোলা। পাগড়ি মাথায় রণবীর। একে অপরকে ছুঁয়ে দাঁড়িয়ে ছাদের কোণায়।
নবদম্পতি রূপে রণবীর-আলিয়ার প্রথম ছবি
পূর্ব ঘোষণা মতো ইনস্টাগ্রামে নিজেদের ‘বিবাহিত’ ছবি প্রকাশ করেছেন আলিয়া নিজেই। নতুন দম্পতির টাটকা পাঁচটি ছবি দেখে আহ্লাদে আটখানা ভক্তরাও। চোখ রাখা যাক সেই ছবিগুলিতে—
সাতপাক ঘোরার আগে পরিচালক অয়ন মুখোপাধ্যায়, কর্ণ জোহরের সঙ্গে দেখা হতেই আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন নবদম্পতি। চোখে জল আসে চার জনেরই। আলাদা করে একটি ঘরে খানিক ক্ষণ সময় কাটান চার বন্ধু মিলে। মনের কথা বলে হাল্কা হন প্রত্যেকেই।
আলিয়া-রণবীরের প্রিয় বন্ধু অয়ন মুখোপাধ্যায় অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন এই বিয়েতে। দুই তারকার প্রেমের ক্ষেত্রেও যে তাঁর অবদান অপরিসীম। কর্ণের ছবি ‘স্টুডেন্ট অব দ্য ইয়ার’-এই হাতেখড়ি হয় আলিয়ার। তাঁকে বধূবেশে দেখে নিজের আবেগ সামলাতে পারেননি কর্ণ।
ভট্ট এবং কপূর পরিবারের সদস্য এবং বন্ধুবান্ধব মিলিয়ে মোট ৫০ জন অতিথির উপস্থিতিতে বিয়ে হয়েছে 'রণলিয়া'র। তাঁদের সাত পাকের সঙ্গে গায়ত্রী মন্ত্র পড়েছেন চার জন পুরোহিত। বিয়ের মণ্ডপে রণবীরের প্রয়াত বাবা, অভিনেতা ঋষি কপূরের একটি ছবি টাঙানো হয়েছিল। তারই নামে সামনে শপথ গ্রহণ করেছেন বর-কনে। আলিয়ার হাতে প্রথম মেহেন্দি পরিয়েছিলেন কর্ণ। বিয়েতেও রণবীর-আলিয়া গাঁটছড়া বেঁধেছেন পরিচালকই।
জানা গিয়েছে, বিয়ের অনুষ্ঠান পুরোপুরি শেষ হলে নবদম্পতি যাবেন সিদ্ধিবিনায়ক মন্দিরে, ঈশ্বরের আশীর্বাদ নিতে। এরই মধ্যে মা নীতু কপূর জানিয়েছেন, বিয়ের যাবতীয় অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি সারা হয়েছে মাত্র ১০ দিনে!
কেউ পরেছিলেন গোলাপি রঙের পোশাক। কেউ বা সোনালি-সবুজে সেজেছিলেন। অম্বানী পরিবারের তরফে আকাশ অম্বানী এবং শ্লোক অম্বানী উপস্থিত হয়েছিলেন বন্ধু রণবীরের বিয়েতে। কিন্তু এ দিনের তারকা অতিথিদের মধ্যে দু’টি নাম খুবই উল্লেখযোগ্য। যদিও তারা এসে পৌঁছেছে বিয়ের অনুষ্ঠানের পরে হাজির হয়েছে। কিন্তু মামা এবং নতুন মামির বিয়েতে উপস্থিত হতেই তাদের ছেঁকে ধরেছিল পাপারাৎজিরা। তারা করিনা কপূর খান এবং সইফ আলি খানের দুই ছেলে তৈমুর আলি খান এবং জাহাঙ্গীর আলি খান! আয়ার সঙ্গে বিয়ের পরে অনুষ্ঠানে হাজির হয় দুই খুদে। সব মিটতেই বাবার সঙ্গে ফের বাড়ির দিকে রওনা দেয় তৈমুর-জে।
করিনা এবং সইফ অবশ্য অনেক আগেই পারিবারিক বিয়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলেন। গোলাপি রঙের পোশাকে রং-মিলন্তি তারকা দম্পতির। ঋষির দাদা রণধীর কপূর, তাঁর বড় মেয়ে করিশ্মা কপূরও তুতো ভাইয়ের বিয়েতে ঝলমলে পোশাকে সামিল। শাম্মি কপূরের স্ত্রী নীলা দেবী সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘আমার স্বামী রণবীরকে খুব ভালবাসতেন। আমরা খুবই ঘনিষ্ঠ ওর সঙ্গে। সবাইকে সম্মান দিয়ে চলে রণবীর।’’ পরিবারের নতুন সদস্যকে নিয়ে তাঁর বক্তব্য, ‘‘খুব কম দেখা হয়েছে আলিয়ার সঙ্গে। খুবই সুন্দরী, খুবই ভাল মেয়ে। রণবীর আর আলিয়ার সুখী দাম্পত্যের প্রার্থনা করব।’’
মণীশ মলহোত্রার তৈরি সোনালি রঙের লেহঙ্গায় ঝলমলে রণবীরের দিদি ঋদ্ধিমা কপূর সাহানি। বুধবার রাতেই এ বিয়ে ঘিরে তাঁর উত্তেজনা টের পাওয়া যাচ্ছিল দিব্যি। আলিয়ার সম্পর্কে বলেছিলেন, ‘‘আলিয়া খুব মিষ্টি মেয়ে।’’ বৃহস্পতিবার সকালে ইনস্টাগ্রামে নিজের সাজের ছবি দিয়ে ‘ভাইয়ের বিয়ে’ লিখে পোস্টও করেছিলেন ঋদ্ধিমা। তার পরে মা নীতু কপূরের সঙ্গে হাসিমুখে ‘বাস্তু’তে ঢুকতে দেখা যায় তাঁকে।
অমিতাভ বচ্চনের মেয়ে শ্বেতা নন্দার স্বামী নিখিল নন্দা এবং মেয়ে নভ্যা নভেলী নন্দাও রণবীরের বিয়েতে নিমন্ত্রিত ছিলেন। নিখিল নন্দা এবং রণবীর একে অপরের তুতো ভাই।
আলিয়ার বৃদ্ধ দাদু এন রাজদানকে হুইলচেয়ারে করে বিয়ের মণ্ডপে নিয়ে আসা হয়। সাত পাকের সাক্ষী থাকতে একেবারে সামনে বসানো হয় তাঁকে। এন রাজদান নাতনির বিয়ে দেখতে চেয়েছিলেন। তাই তাঁর অসুস্থতার কথা মাথায় রেখে ডিসেম্বর থেকে এপ্রিলে এগিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে রণবীর-আলিয়ার বিয়ে।
পাগড়ি মাথায় বিয়েতে সামিল আলিয়ার বাবা মহেশ ভট্ট। সে ছবি আগেই প্রকাশ পেয়েছে। কিন্তু বিয়ের অনুষ্ঠানের পরে তাঁর সাজে নতুন চমক! বুধবার মেহেন্দির সময়ে নিজের জামাইয়ের নাম নিজের হাতে লিখেছেন মহেশ। পাপারাৎজিদের দৌলতে সে ভিডিয়ো প্রকাশ্যে। দেখা যাচ্ছে, মহেশের হাতে লেখা, ‘রণবীর’। নীচে আবার ভালবাসার চিহ্নও জুড়ে দিয়েছেন শ্বশুরমশাই!