‘বাড়ির মহিলাদের কথা চুপচাপ শোনাই আমার কাজ’

এই মুহূর্তের ব্যস্ততম বলিউড অভিনেতা অক্ষয়কুমারের মুখোমুখি আনন্দ প্লাসআমাদের দেশে এখনও মেয়েদের শিক্ষিকা, ডাক্তার বা নার্স হওয়ার জন্য উৎসাহিত করা হয়। ইঞ্জিনিয়ার বা বৈজ্ঞানিক শুধুমাত্র পুরুষরা।

Advertisement

শ্রাবন্তী চক্রবর্তী

মুম্বই শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০১৯ ০০:০২
Share:

অক্ষয় কুমার। —ফাইল চিত্র।

প্র: স্বাধীনতা দিবস মানেই অক্ষয়কুমার। দেশভক্তিমূলক ছবিগুলো করার পিছনে কি নির্দিষ্ট কোনও কারণ রয়েছে?

Advertisement

উ: যখনই দেশে কোনও সমস্যার সৃষ্টি হয়, আমরা সবাই মিলে টুইট করতে শুরু করে দিই। আমার বক্তব্য একটাই, টুইট না করে আমরা কিছু কাজ তো করতে পারি। আমাদের পরিবারে যখন কোনও বিপদ আসে, আমরা কি বসে বসে টুইট করি? নিজেকে দেশভক্ত প্রমাণ করার কোনও দায় আমার নেই। কাউকে সার্টিফিকেট দেখানোরও প্রয়োজন নেই।

প্র: ‘মিশন মঙ্গল’-এ মহিলা বৈজ্ঞানিকদের কথা বলা হয়েছে। এই ছবির পরে সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি কি বদলাবে?

Advertisement

উ: আমাদের দেশে এখনও মেয়েদের শিক্ষিকা, ডাক্তার বা নার্স হওয়ার জন্য উৎসাহিত করা হয়। ইঞ্জিনিয়ার বা বৈজ্ঞানিক শুধুমাত্র পুরুষরা। খুব অদ্ভুত একটা ধারণা! পাঠ্যপুস্তকেও কৃতী মহিলাদের কাহিনি খুব কম। অথচ সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে মহিলারা দারুণ কাজ করছেন। তবে আগের চেয়ে সময় বদলেছে। আগে মহিলারা শুধুমাত্র হিসেবনিকেশ সামলাতেন। এখন দেখুন, দেশের অর্থমন্ত্রক একজন মহিলা সামলাচ্ছেন! দেখবেন, আগামী সময়ে আরও অনেক পরিবর্তন হবে।

প্র: ‘মিশন মঙ্গল’-এ একাধিক মহিলা অভিনেত্রীকে রাজি করাতে এবং কাজ করাতে অসুবিধে হয়নি?

উ: না। এরা সবাই বুদ্ধিমতী। স্ক্রিপ্ট পড়ে এক বারেই ‘হ্যাঁ’ বলে দিয়েছিল। কাজ করাতেও সমস্যা হয়নি। নাম করতে পারব না, তবে এমন অনেক অভিনেত্রীকে দেখেছি যারা সেটে চুলোচুলি করে!

প্র: আপনার জীবনে মহিলাদের প্রভাব কতটা?

উ: আমি আমার মায়ের সঙ্গে থাকি। আমার স্ত্রী, মেয়ে, শাশুড়ি, ভাগ্নি... বাড়িতে আমি পুরো মহিলা পরিবেষ্টিত। ছেলে এখন লন্ডনে পড়াশোনা করছে। সুতরাং বাড়ির একমাত্র পুরুষ সদস্য হিসেবে আমার অবস্থাটা বুঝতে পারছেন তো? এদের সকলের কথা চুপচাপ শোনাই আমার কাজ।

প্র: রিয়্যালিস্টিক ছবি তৈরির ট্রেন্ডকে কী ভাবে দেখছেন?

উ: নিজেকে খুব লাকি মনে করি যে এ ধরনের ছবির প্রস্তাব আমার কাছে আসে। পছন্দ না হলে, ‘না’ বলে দিই। ‘টয়লেট: এক প্রেম কথা’র প্রস্তাব আমার কাছে আসার আগে অন্যদের কাছে গিয়েছিল। প্রযোজক হিসেবেও আমি রিয়্যালিস্টিক ছবি করতে চাই। তাই ‘মিশন মঙ্গল’-এর প্রযোজক হিসেবে আমি খুব গর্বিত।

প্র: আপনি ছাত্রজীবনে বিজ্ঞানে কতটা পারদর্শী ছিলেন?

উ: খুব একটা ভাল নয়। তবে অঙ্কে ভাল ছিলাম। আমার ১৭৫ টাকার একটা ট্রান‌জিস্টার ছিল। সেটা আমার প্রাণ ছিল। সব সময়ে কানে নিয়ে ঘুরতাম। আমার মনে আছে, একবার ট্রানজিস্টারটা আলমারির গায়ে মেরে ভেঙে ফেলে বাবাকে বলেছিলাম, ‘দেখো, এর মধ্যে চুম্বক আছে। তাই এটা আলমারির গায়ে আটকে গেল।’ বাবা গম্ভীর গলায় বললেন, ‘হ্যাঁ সেটা আমি জানি। কিন্তু সেটা প্রমাণ করতে গিয়ে তুমি ট্রানজিস্টারটা ভেঙে ফেললে?’ বিজ্ঞানের সঙ্গে আমার ওইটুকুই সম্পর্ক (হাসি)!

প্র: এই মুহূর্তে আপনার হাতে সবচেয়ে বেশি ছবি...

উ: আমি খুশি এবং গর্বিত যে, প্রযোজক-পরিচালকেরা আমাকে নিয়ে ছবি ভাবছেন, করছেন। প্রযোজক হিসেবে আমি খুব ভেবেচিন্তে ছবি বানাই। যে ছবি বানালে মুনাফা হবে সেটাই বানাব। আগে আমি এক ধরনের ছবি করতাম। সেটা থেকে অনেকটা সরে এসেছি। আসলে আগে আমার কাছে অন্য ধরনের ছবি করার মতো টাকা ছিল না। চাঁদনি চকের একটা ছেলে মুম্বই এসে নিজের একটা জায়গা করতে পেরেছে, এটা ভাবলে বেশ ভাল লাগে। এই কাজে আমার ভাগ্যও সঙ্গে ছিল।

প্র: আপনি নাকি পারিশ্রমিক বাড়িয়েছেন?

উ: ভুল তথ্য। প্রোডিউসর হিসেবে ছবির মুনাফা অনুযায়ী আমার কমিশন ঠিক হয়। ছবির বাজেটে আমার পারিশ্রমিক ধরা থাকে না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement