ইতিমধ্যেই আগের ওষুধ বদলে নতুন অ্যান্টিবায়োটিক চালু করা হয়েছে অভিনেত্রীর। ফাইল চিত্র।
অবস্থা স্থিতিশীল নয় ঐন্দ্রিলা শর্মার। রক্তচাপ ওঠানামা করছে। ভেন্টিলেশনের মাত্রা বাড়ানো হয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর। মঙ্গলবার স্ক্যান রিপোর্টে দেখা যায়, ব্রেন স্ট্রোকের পর মাথার যে পাশে অস্ত্রোপচার হয়েছিল ঐন্দ্রিলার, তার বিপরীত দিকে রক্ত জমাট বেঁধেছে। যা নতুন করে চিন্তা বাড়াচ্ছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই আগের ওষুধ বদলে নতুন অ্যান্টিবায়োটিক চালু করা হয়েছে অভিনেত্রীর। তাঁর শরীর এতে সাড়া দেয় কি না, তা দেখার জন্য বাড়তি সতর্কতায় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, নতুন করে যে রক্ত জমাট বেঁধেছে, তা আকারে এতই ক্ষুদ্র যে অস্ত্রোপচার করা যাবে না। ওষুধ দিয়ে কমানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। যদিও চিন্তা বাড়াচ্ছে সংক্রমণ। এখনও তা কমার লক্ষ্মণ নেই। তাই জ্বরও কমছে না। পরিস্থিতি আগের থেকে সঙ্কটপূর্ণ বলেই মনে করছেন চিকিৎসকরা।
গত সপ্তাহে ঐন্দ্রিলার দ্রুত সেরে ওঠার আশা দেখা যাচ্ছিল যেখানে, চলতি সপ্তাহের ছবিটা একেবারেই আলাদা। এতে উদ্বেগ বাড়ছে অভিনেত্রীর কাছের মানুষদের। সতীর্থরাও চিন্তিত হয়ে পড়েছিলেন ঐন্দ্রিলার বন্ধু সব্যসাচী চৌধুরীর সোমবারের পোস্ট দেখে। সবাইকে প্রার্থনা করতে বলেছেন তিনি। তা হলে কি আশা কমে আসছে? সঠিক পরিস্থিতি জানতে হাসপাতালে যোগাযোগ করেছিল আনন্দবাজার অনলাইন।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সংক্রমণের মাত্রা দেখতে সব প্রোটোকল মেনে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে। প্রয়োজনে মেডিক্যাল টিম সব রিপোর্ট নিয়ে আলোচনা করবে বলে খবর।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, ঘোরের মধ্যেই রয়েছেন অভিনেত্রী। কখনও ভাল, কখনও আবার মন্দ, ঐন্দ্রিলার শরীর নিয়ে কোনওটাই সঠিক ভাবে বলতে পারছেন না চিকিৎসকরা। ঐন্দ্রিলার বয়স যে হেতু অনেকটাই কম, তাই তিনি লড়তে পারবেন— সেই আশাতেই বুক বেঁধেছেন চিকিৎসক এবং তাঁর প্রিয়জনেরা।
সোমবার সঙ্গী সব্যসাচী চৌধুরী ঐন্দ্রিলার জন্য মন থেকে প্রার্থনার অনুরোধ করেছিলেন নেট মাধ্যমে। চাইছেন, অলৌকিক কিছু হোক। উঠে বসুক ঐন্দ্রিলা। সব্যসাচী লেখেন, ‘‘কোনওদিন এটা এখানে লিখবো ভাবিনি, আজ লিখলাম। ঐন্দ্রিলার জন্য মন থেকে প্রার্থনা করুন।’’
সব্যসাচীর ফেসবুক পোস্ট। ছবি:ফেসবুক।
গত সোমবার আশা দেখেছিলেন সব্যসাচী। সুখবর এসেছিল হাসপাতাল সূত্রেই। বাঁ দিকে সাড় ফিরেছিল ঐন্দ্রিলার। সেই আনন্দে ফেসবুকে সব্যসাচী লেখেন, ‘‘হাসপাতালে ছয় দিন পূর্ণ হলো আজ, ঐন্দ্রিলার এখনও পুরোপুরি জ্ঞান ফেরেনি। তবে ভেন্টিলেশন থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছে, শ্বাসক্রিয়া আগের থেকে অনেকটাই স্বাভাবিক হয়েছে, রক্তচাপও মোটামুটি স্বাভাবিক। জ্বর কমেছে। ’’
বিগত কয়েক দিন এই লড়াইয়ে পাশে ছিলেন ঐন্দ্রিলার বাবা-মাও। এই প্রসঙ্গে সব্যসাচী আরও লেখেন, ‘‘ওর মা যতক্ষণ থাকে, নিজের হাতে ওর ফিজিওথেরাপি করায়, যত্ন নেয়। বাবা আর দিদি ডাক্তারদের সাথে আলোচনা করে। সৌরভ আর দিব্য রোজ রাতে আমার সাথে হাসপাতালে থাকতে আসে। আর আমি দিনে তিনবার করে গল্প করি ঐন্দ্রিলার সাথে। গলা চিনতে পারে, হার্টরেট ১৩০-১৪০ পৌঁছে যায়, দরদর করে ঘাম হয়, হাত মুচড়িয়ে আমার হাত ধরার চেষ্টা করে। প্রথম প্রথম ভয় পেতাম, এখন বুঝি ওটাই ফিরিয়ে আনার এক্সটার্নাল স্টিমুলি।’’
তবে এ বার অলৌকিক কিছু চাইছেন সব্যসাচী। ঐন্দ্রিলার সেরে ওঠা নিয়ে তাঁর মনেও কি দেখা দিচ্ছে সংশয়?