ঐন্দ্রিলার তাই আন্তরিক চাওয়া, ‘‘আমার মতো লড়াই যেন শত্রুকেও লড়তে না হয়। বড্ড কষ্ট! জীবন এমনিতেই সুন্দর। মৃত্যু দেখে, অনিশ্চয়তায় ভুগে জীবনকে না চেনাই ভাল।’’ আপাতত রিয়্যালিটি শো দিয়েই কাজ শুরু করলেন। অভিনেত্রীর বক্তব্য, ‘‘এখনও অনেকেই বুঝতে পারছেন না, আমি কাজ করতে পারব কিনা। আশা, এই শো দেখলে সব দ্বিধা কেটে যাবে।’’
রচনার সঙ্গে ঐন্দ্রিলা। ছবি ফেসবুক।
২০২১-এর ১ মার্চ। ঐন্দ্রিলা শর্মা দিল্লির একটি বেসরকারি হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে। কেমো নিয়ে নিঝুম। বেঁচে ফিরবেন? কেউ জানেন না। ২০২২-এর ১ মার্চ। সেই ঐন্দ্রিলাই ফের ক্যামেরার মুখোমুখি। ভোর ৬টা থেকে রাজারহাটের ডিআরআর স্টুডিয়োয় জি বাংলার ‘দিদি নম্বর ১’-এর শ্যুটে! শুধুই শ্যুট করেননি। বাকি প্রতিযোগীদের সঙ্গে খেলেছেন। দু’হাত ভরে উপহার নিয়ে ফিরেছেন। এবং রিয়্যালিটির শো-এর মঞ্চে তিনিই ‘দিদি নম্বর ১’! দুই সময়ের দুটো ছবি জ্বলজ্বল করছে ঐন্দ্রিলার প্রেমিক সব্যসাচী চৌধুরীর ফেসবুকে। তাঁর বক্তব্য, ‘এ ভাবেই ফিরে আসা যায়।’
শুভেচ্ছা জানাতে বুধবার আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করেছিল ঐন্দ্রিলার সঙ্গে। এক গুচ্ছ প্রশ্নও ছিল। এক বছরেরও বেশি সময় পরে ক্যামেরার মুখোমুখি। ভয় না আনন্দ, কোনটা বেশি গ্রাস করেছিল ‘জিয়ন কাঠি’র নায়িকাকে? ঐন্দ্রিলার দাবি, ‘‘একটু অস্বস্তি ছিল। পাশাপাশি, স্টুডিয়োয় পা দিয়ে কী যে ভাল লাগছিল! মনে হচ্ছিল, এত দিনে সত্যিই যেন জীবনে ফিরলাম।’’ ঐন্দ্রিলার আনন্দ ভীষণ ছোঁয়াচে। তাঁর উদযাপনে তাই সামিল হয়েছিলেন সঞ্চালক-অভিনেত্রী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে সেট, স্টুডিয়োর প্রতি জন। সবাই মাথায় হাত রেখে আশীর্বাদ করেছেন। ভালবাসায় ভরিয়ে দিয়েছেন। সাহস জুগিয়েছেন এগিয়ে চলার।
সোমবার রাত থেকে গোছগাছ শুরু। মঙ্গলবার দুপুর ২টো পর্যন্ত টানা শ্যুট। একটুও ক্লান্ত হননি ঐন্দ্রিলা। তবে নিয়ম মেনে বাইরের নয়, বাড়ির খাবার খেয়েছেন। সব চেয়ে খুশি হয়েছেন ড্রেসিং টেবিল উপহার পেয়ে। অভিনেত্রী যে সাজতে বড় ভালবাসেন! মৃত্যুকে এত কাছ থেকে না দেখলে জীবনকে এ ভাবেও উপভোগ করতে পারতেন? এ বার ধারালো জবাব, ‘‘আমি একেবারেই দুঃখবিলাসী নই। অসুস্থতার আগেও জীবনকে প্রতি মুহূর্তে উপভোগ করতাম। অসুস্থতার পরেও। হ্যাঁ, গত একটি বছর একটু হয়তো টলে গিয়েছিলাম।’’ হারানো বিশ্বাস ফিরে এসেছে? সব্যসাচীর দৌলতে’’, দাবি তাঁর। অভিনেত্রীর মতে, দুই অবস্থার দুটো ছবি তাঁকে মনে পড়িয়ে দিয়েছে, তিনি কতটা লড়াই লড়েছেন। তার আগে তিনিও বুঝতে পারতেন না, আদৌ বেঁচে ফিরবেন তো?
ঐন্দ্রিলার তাই আন্তরিক চাওয়া, ‘‘আমার মতো লড়াই যেন শত্রুকেও লড়তে না হয়। বড্ড কষ্ট! জীবন এমনিতেই সুন্দর। মৃত্যু দেখে, অনিশ্চয়তায় ভুগে জীবনকে না চেনাই ভাল।’’ আপাতত রিয়্যালিটি শো দিয়েই কাজ শুরু করলেন। অভিনেত্রীর বক্তব্য, ‘‘এখনও অনেকেই বুঝতে পারছেন না, আমি কাজ করতে পারব কিনা। আশা, এই শো দেখলে সব দ্বিধা কেটে যাবে।’’
রিয়্যালিটির মঞ্চে দাঁড়িয়ে ঐন্দ্রিলা আবারও বুঝেছেন, এক জন অভিনেত্রীর সত্যিকারের মুক্তি স্টুডিয়োয়, রূপসজ্জা ঘরে। লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশন শব্দগুলোয়।