Zodiac Killer

৫১ বছর পরে রহস্য সমাধানের হদিশ, পরিচালক কি তুলবেন ‘অসমাপ্ত’ ছবির উপসংহার

সান ফ্রান্সিসকো পুলিশের ল এনফোর্সমেন্ট অফিসার ডেভ টোশির প্রায় গোটা জীবন ফুরিয়ে গিয়েছে এই রহস্যের সমাধান করতে করতে। কিন্তু হদিশ মেলেনি ‘রাশিচক্র হত্যাকারী’র।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০২০ ২০:৪৩
Share:

ডেভিড ফিঞ্চারের ছবি ‘জোডিয়াক’।

২০০৭-এ আমেরিকান পরিচালক ডেভিড ফিঞ্চারের ছবি ‘জোডিয়াক’ দর্শক মহলে রীতিমতো শোরগোল ফেলে দিয়েছিল। থ্রিলার গোত্রের এই ছবি ছিল বাস্তবের এক সিরিয়াল কিলারকে নিয়ে। ১৯৬০-এর দশকের অন্তিম ভাগে উত্তর ক্যালিফোর্নিয়ায় একের পর এক খুনের ঘটনাই প্রাণীত করেছিল ফিঞ্চারকে এই ছবি নির্মাণে।

Advertisement

১৯৬৯ সাল থেকে ঘটনার শুরু। অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তি একের পর এক খুন করে চলেছে। তার খুনের মতলব কী, সেটা জানা যাচ্ছে না। কোনও সুত্রই সে রাখছে না। কেবল বিখ্যাত খবরের কাগজ ‘সান ফ্রান্সিসকো ক্রনিকল’-এ কিছু কোড সম্বলিত চিঠি পাঠিয়েছিল সেই সিরিয়াল কিলার। ৩৪০টি সংকেতচিহ্ন সমেত চিঠি সে পাঠিয়েছিল। মনে করা হয়, সেই কোডগুলির পাঠোদ্ধার হলে খুনিকে ধরা যাবে। কিন্তু বছরের পর বছর চলে গেল, পুলিশ আধিকারিকরা কেবল হন্যে হয়ে খুঁজে বেড়াতে লাগলেন। তেমন কিছু বোঝা গেল না তার পাঠানো সংকেতগুলি থেকে। ধরা পড়ল না সেই খুনি। খুনির নাম দেওয়া হল, ‘জোডিয়াক কিলার’। কেন জোডিয়াক? সে যে ধরনের কোড পাঠাত, তা আদপে ১২টি রাশি বা জোডিয়াকের চিহ্নযুক্ত। বাস্তবের মতোই ফিঞ্চারের ছবির শেষেও দেখা যায়, কোনও ভাবেই খুনিকে ধরা গেল না। এক হিসেবে দেখলে, ফিঞ্চারের ছবি শেষ হয়েছিল ‘অসমাপ্ত’ ভাবেই।

সত্য ঘটনার ৫১ বছর পেরিয়ে গেল। তার পর এই করোনা-কালে চাঞ্চল্যকর এক ভিডিয়ো প্রকাশ করলেন তিন ব্যক্তি— সফটওয়্যার ডেভেলপার ডেভিড ওরানচাক, কম্পিউটার প্রোগ্রামার জার্ল ভ্যান এবং অস্ট্রেলীয় গণিতবিদ স্যাম ব্লেক। উদ্ধার করলেন ‘৩৪০ সাইফার’-এর রহস্য। দেখা গেল সেই সব সংকেতের আড়ালে লেখা, ‘কী, আমাকে খুঁজে বের করতে মজা পাচ্ছেন তো? আমি গ্যাস চেম্বারের ভয় পাই না। গ্যাস চেম্বার আদপে আমাকে স্বর্গের কাছাকাছি নিয়ে যাবে। আর পৃথিবীতে আমি একাধিক ক্রীতদাস রেখে যাব। যারা আমার জন্য কাজ করবে।’

Advertisement

আরও পড়ুন: করোনায় অভিনয় ছেড়ে নার্সিং, স্ট্রোকে আক্রান্ত শিখা এখন হাসপাতালে

সান ফ্রান্সিসকো পুলিশের ল এনফোর্সমেন্ট অফিসার ডেভ টোশির প্রায় গোটা জীবন ফুরিয়ে গিয়েছে এই রহস্যের সমাধান করতে করতে। কিন্তু হদিশ মেলেনি ‘রাশিচক্র হত্যাকারী’র।

ওরানচাক, ভ্যান এবং ব্লেক দেখাচ্ছেন, যে ভাবে এত বছর ধরে খুনির রেখে যাওয়া সংকেতের মানে বের করার চেষ্টা হচ্ছিল, সেটা ভুল। ২০০৬ সালে এই কাজে কম্পিউটার কোডিংও ব্যবহার করা হয়েছিল। কিন্তু শেষে জানা গেল, কোনও আধুনিক পদ্ধতির ব্যবহারই করেনি সেই ‘জোডিয়াক কিলার’। সংকেত চিহ্নগুলি কোনাকুনি পড়লে তাদের অর্থ বোঝা যাচ্ছে। এক বার উপর থেকে নীচে আর এক বার নীচ থেকে উপরে পড়ে যেতে হবে এই সংকেত। সংকেত ডিকোড হওয়ার পর ক্যালিফোর্নিয়ার প্রশাসনের চক্ষু চড়কগাছ। আসলে ঠিক এই সাংকেতিক ভাষাই ব্যবহার করত আমেরিকার সেনাবাহিনী ১৯৫০-এর দশকে। কিন্তু ‘জোডিয়াক কিলার’ সেই ভাষা জানল কী করে? সে কি তবে আমেরিকার সেনাবাহিনীর সদস্য ছিল?

আরও পড়ুন: বাংলার হাত ধরল কর্নাটক, আসছে ‘কণ্ঠ ক্লাব’

২০১৪-এ তাঁর সর্বশেষ থ্রিলার ছবি তৈরি করেছেন ফিঞ্চার। ‘গন গার্ল’। আবার কি রহস্য ছবিতে ফিরবেন ৫৮ বছর বয়সি পরিচালক? শেষ করবেন তাঁর ‘অসমাপ্ত’ কাজ? তুলবেন কি ‘জোডিয়াক’-এর উপসংহার? জল্পনা বাড়ছে থ্রিলার-রসিক দর্শকদের মধ্যে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement