আদনান সামি।
পদ্মশ্রী পুরস্কারের জন্য মনোনীত হওয়ার পরেই আদনানকে ঘিরে তৈরি হয়েছিল বিতর্ক। পাকিস্তানি সেনার সন্তান হওয়া সত্ত্বেও কেন তাঁকে পদ্মশ্রীর জন্য বাছা হল, তা নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক মহল থেকে উড়ে আসছিল মন্তব্য। প্রথমে চুপ থাকলেও অবশেষে মুখ খুললেন পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত কিন্তু বর্তমানে ভারতীয় গায়ক আদনান।
আদনানের কথায়, “যারা আমার বিরুদ্ধে এই সব বলছেন তাঁরা তুচ্ছ রাজনীতিবিদ। নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্যই এ সব করে বেড়াচ্ছেন তাঁরা। ওঁদের নিজেদের ‘পলিটিকাল অ্যাজেন্ডা’ রয়েছে। আমি কোনও নেতা নই। আমি একজন শিল্পী। যাঁরা এগুলো বলে বেড়াচ্ছেন, তাঁদের ভারত সরকারের সঙ্গে ব্যক্তিগত সমস্যা রয়েছে। আমার পদ্মশ্রী পাওয়ার ঘটনাকে তাঁরা স্টেপনি হিসেবে ব্যবহার করছেন।”
ঠিক কী হয়েছিল? গত শনিবার পদ্মশ্রী পুরস্কারের জন্য নাম ঘোষণা করা হয় গায়ক আদনান সামির। এর পরই ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়বীর শেরগিল টুইটারে ভারতীয় জনতা পার্টির কাছে কিছু প্রশ্ন রাখেন। টুইটারে একটি লাইভ ভিডিয়োর মাধ্যমে তিনি জিজ্ঞাসা করেছিলেন, “পাকিস্তানি বায়ুসেনার সন্তানকে এত বড় সম্মান কেন দেওয়া হল? সরকারের চামচাগিরি করেছেন বলেই কি তাঁকে এতবড় সম্মান? পদ্মশ্রী পেতে গেলে কি করতে হয়? সমাজের ভাল করা নাকি সরকারের গুণগান?”
আরও পড়ুন-গুরুদ্বারে তাপসীকে যৌন হেনস্থা, পাল্টা ‘শিক্ষা’ দিলেন অভিনেত্রী
দেখুন জয়বীরের টুইট
শুধু জয়বীরই নন। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সভাপতি প্রবীণ তোগাড়িয়াও সরকারের এই সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সোশ্যাল মিডিয়াতেও নেটিজেনদের একাংশ প্রশ্ন তুলছিলেন ক্রমশই। অবশেষে জবাব দিতে মুখ খুললেন আদনান।
কিন্তু তাঁর বাবা তো সত্যিই পাকিস্তানি নাগরিক ছিলেন এবং ১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে বোমাও ফেলেছিলেন তিনি। এই প্রশ্নে আদনানের বক্তব্য, “হ্যাঁ, আমার বাবা পাকিস্তানি বায়ুসেনার একজন একনিষ্ঠ অফিসার ছিলেন। নিজের দেশের জন্য তিনি তাঁর কাজ করেছেন। তাঁর জন্য তাঁকে পুরস্কৃত করা হয়েছে। বাবার পুরস্কারে আমার কোনও লাভ অথবা ক্ষতি হয়নি। ঠিক তেমনই আমার সম্মান পাওয়া নিয়ে আমার বাবাকে জড়ানোও ঠিক নয়। এখানে আবার বাবার পরিচয় আসে কী করে? এই তুলনা অত্যন্ত অপ্রাসঙ্গিক।” জন্মসূত্রে পাকিস্তানি আদনান সামিকে ২০১৬ সালে নাগরিকত্ব দিয়েছে ভারত। তার পর থেকে তিনি ভারতেই থাকেন। যদিও আদনানকে ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়া নিয়েও জলঘোলা কম হয়নি।