advertising

দু’টি বিয়ে ও দীর্ঘ লিভ ইন, এই অ্যাড-গুরুর জীবন ছিল তাঁর তৈরি বিজ্ঞাপনের মতোই বর্ণময়

ভারতীয় বিজ্ঞাপনী জগতে প্রবাদপ্রতিম হিসেবে পরিচিত অ্যালেকের ঝুলিতে রয়েছে অজস্র জনপ্রিয় বিজ্ঞাপন। ভারতীয় বিজ্ঞাপন জগতে ব্র্যান্ড ভ্যালু তৈরিতে তাঁর জুড়ি মেলা ভার।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০২০ ১২:৩৪
Share:
০১ ১৪

তাঁর পূর্বপুরুষরা ছিলেন চারণকবি। পারিবারিক ধারা মেনে তিনিও সৃষ্টিশীল কাজেই কাটিয়েছেন জীবন। বলা হয়, যাঁদের হাতে সাবালক হয়েছে ভারতীয় বিজ্ঞাপন দুনিয়া, অ্যালেক পদমসি তাঁদের অন্যতম। অবশ্য শুধু বিজ্ঞাপন বললে ভুল হবে, স্বল্প সময়ের জন্য হলেও নাটক এবং সিনেমার জগতেও নিজের ছাপ রেখেছিলেন এই অ্যাড গুরু।

০২ ১৪

গুজরাতের কচ্ছ প্রদেশে তাঁর জন্ম ১৯২৮ সালের ৫ মার্চ। অতীতে পারিবারিক পেশা চারণগান ছিল। তাই তাঁদের পদবি ছিল ‘চারণিয়া’। পরে অ্যালেকের ঠাকুরদার সময় থেকে পরিচয়ে যুক্ত হয় নতুন উপাধি।

Advertisement
০৩ ১৪

অ্যালেকের ঠাকুরদা ছিলেন গ্রামপ্রধান। তিনি এক বার দুর্ভিক্ষের সময়ে নিজের শস্যগোলা গ্রামবাসীদের জন্য উজাড় করে খুলে দিয়েছিলেন। তার পর গ্রামের বাসিন্দারাই তাঁকে উপাধি দেন। উচ্চারণভেদে সেটাই হয়ে যায় ‘পদমসি’।

০৪ ১৪

অ্যালেকের বাবা জাফরশেঠ ছিলেন ধনী শিল্পপতি। একাধিক ব্যবসার মালিক জাফরশেঠের মালিকানায় বাড়িই ছিল ১০টি। তাঁদের পরিবার ছিল যথেষ্ট রক্ষণশীল। ছেলেদের জন্য প্রথম থেকেই ইংরেজি মাধ্যমে লেখাপড়া শেখানোর ব্যবস্থা করেন জাফরশেঠ। মুম্বইয়ের সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে পড়াশোনা করা অ্যালেক পরবর্তী কালে পারিবারিক ধারা থেকে সরে এসেছিলেন। নিজেকে নিরীশ্বরবাদী বলে দাবি করা অ্যালেকের কোনও নির্দিষ্ট ধর্মবিশ্বাসও ছিল না।

০৫ ১৪

নিজের হাতে একটু একটু তিনি তৈরি করেন বিজ্ঞাপনী সংস্থা লিন্টাস-কে। বিজ্ঞাপন সংস্থার এই প্রাণপুরুষের হাতে তৈরি হয়েছে একশোটিরও বেশি ব্র্যান্ড। অ্যালেক পদমসি মানেই লিরিল গার্ল, চেরি ব্লসম শু পলিশের চার্লি চ্যাপলিন অ্যাড, সার্ফের সেই ললিতাজি ক্যাম্পেন, হামারা বাজাজের মতো মনে থেকে যাওয়া সব বিজ্ঞাপন। ভারতীয় বিজ্ঞাপন জগতে ব্র্যান্ড ভ্যালু তৈরিতে তাঁর জুড়ি মেলা ভার।

০৬ ১৪

যে আমুলের বিজ্ঞাপন আজও সাড়া ফেলে গোটা দেশে, সেই আমুলের বিজ্ঞাপনে সমসাময়িক বিষয় ব্যবহার করা শুরু করেছিলেন তিনিই। ভারতীয় বিজ্ঞাপনী জগতে প্রবাদপ্রতিম হিসেবে পরিচিত অ্যালেকের ঝুলিতে রয়েছে অজস্র জনপ্রিয় বিজ্ঞাপন। যার মধ্যে অন্যতম আশির দশকের গোড়ায় লিরিল সাবানের বিজ্ঞাপন। ঝর্নার জলে স্বল্প বসনা মেয়ের স্নান তখন ভারতীয় টেলিভিশনে ঝ়ড় তুলেছিল।

০৭ ১৪

তাঁর তৈরি সার্ফের ‘ললিতাজি’ বা বাজাজ স্কুটারের ‘হামারা বাজাজ’-এর মতো বিজ্ঞাপন এখনও ভারতীয় বিনোদন দুনিয়ায় প্রজন্মজয়ী। পাশাপাশি পূজা বেদীকে নিয়ে তাঁর তৈরি কন্ডোমের বিজ্ঞাপনও আলোড়ন ফেলেছিল সে সময়।

০৮ ১৪

কিন্তু শুধুই বিজ্ঞাপনের নিরিখে অ্যালেক পদমসিকে বিচার করলে ভুল হবে। ১৯৮২ সালের ঐতিহাসিক পটভূমিকায় তৈরি সিনেমা ‘গাঁধী’তে মহম্মদ আলি জিন্নার ভূমিকায় তাঁর অভিনয় ছিল এক কথায় অনবদ্য।

০৯ ১৪

ভারতে ইংরেজি ভাষায় থিয়েটারের ক্ষেত্রেও তাঁর অবদান গভীর। শিল্প ও সংস্কৃতি জগতে তাঁর অবদানের জন্য ২০০০ সালে তাঁকে পদ্মশ্রী পুরস্কারে ভূষিত করে ভারত সরকার। ২০১২ সালে পেয়েছিলেন সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমির ‘টেগোর রত্ন’ পুরস্কার।

১০ ১৪

নাটকের সূত্রেই অ্যালেকের আলাপ পার্লের সঙ্গে। ভারতীয় নাট্যজগতে পার্ল-ও উল্লেখযোগ্য নাম। অ্যালেক ছিলেন তাঁর দ্বিতীয় স্বামী। মেয়ে রায়েলের জন্মের পরে বিচ্ছেদ হয়ে যায় অ্যালেক ও পার্লের। পার্লের প্রথম পক্ষের ছেলে অভিনেতা রঞ্জিত চৌধুরি প্রয়াত হয়েছেন কয়েক দিন আগে।

১১ ১৪

পার্লের সঙ্গে বিচ্ছেদের পরে অ্যালেক দীর্ঘদিন লিভ ইন সম্পর্কে ছিলেন আর এক নাট্যব্যক্তিত্ব ডলি ঠাকোরের সঙ্গে। দু’জনের বয়সের ব্যবধান ১৫ বছর। তাঁদের একমাত্র ছেলে কাসার ঠাকোরে পদমসিও এক জন অভিনেতা ও নাট্য পরিচালক।

১২ ১৪

১৯৮২ সালে দ্বিতীয় বার বিয়ে করেন অ্যালেক পদমসি। তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী শ্যারন প্রভাকর গায়িকা এবং নাট্যব্যক্তিত্ব। অ্যালেক পদমসি ও শ্যারন প্রভাকরের বয়সের ব্যবধান ২৭ বছরের। তাঁদের একমাত্র মেয়ে শাহনাজ পদমসিও থিয়েটারের সঙ্গে যুক্ত। দাম্পত্যের কয়েক বছর পরে সম্পর্ক থেকে সরে যান অ্যালেক, শ্যারন, দু’জনেই।

১৩ ১৪

২০১৮ সালে মুম্বইয়ের এক হাসপাতালে প্রয়াত হন বিজ্ঞাপন জগতের এই প্রাণপুরুষ। বয়স হয়েছিল ৯০ বছর।

১৪ ১৪

মুম্বইয়ের অ্যাডভার্টাইজিং ক্লাবের বিচারে তিনি-ই ‘অ্যাডভার্টাইজিং ম্যান অব দ্য সেঞ্চুরি’।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement