অরিন্দম শীলকে নিয়ে প্রথম মুখ খুলেছিলেন রূপাঞ্জনা মিত্র। নিজস্ব চিত্র।
শনিবারের রাত কিছুটা হলেও কি রূপাঞ্জনা মিত্রকে স্বস্তি এনে দিয়েছে? এ দিন পরিচালক অরিন্দম শীলকে ডিরেক্টর্স গিল্ড অনির্দিষ্ট কালের জন্য সাসপেন্ড (নিলম্বিত) করেছে। এক অভিনেত্রী মহিলা কমিশনে পরিচালকের নামে যৌন হেনস্থার অভিযোগ আনার পর তথ্যপ্রমাণ খতিয়ে দেখে সংগঠনের এই সিদ্ধান্ত, আনন্দবাজার অনলাইনকে জানিয়েছেন সভাপতি সুব্রত সেন। যিনি প্রকাশ্যে প্রথম পরিচালকের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিলেন, তাঁর অনুভূতি কী? জানতে আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করেছিল রূপাঞ্জনার সঙ্গে। কাজের সূত্রে পরিচালক স্বামী রাতুল মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে তিনি শহরের বাইরে। জবাবে তিনি বলেছেন, “চার বছর আগে আমি ঠিক ছিলাম, গত রাতে সেটা প্রমাণিত। মনের জোর বেড়ে গিয়েছে। দরকার পড়লে আবারও লড়াইয়ে নামব।”
২০২০-র জানুয়ারি। আনন্দবাজার অনলাইনের কাছে অরিন্দমের বিরুদ্ধে প্রথম মুখ খুলেছিলেন রূপাঞ্জনা। তাঁর অভিযোগ, ইস্টার্ন বাইপাসের কাছে অরিন্দমের অফিসে স্ক্রিপ্ট পড়ে শোনানোর অছিলায় তাঁর সঙ্গে অশালীন আচরণ করেছিলেন পরিচালক। শুধু তা-ই নয়, ঘনিষ্ঠ আলিঙ্গনের মাধ্যমে তাঁকে কদর্য ইঙ্গিতও করেছিলেন তিনি। সেই দিনগুলো অনেক লড়াই করে পেরিয়ে এসেছেন অভিনেত্রী? মনে করিয়ে দিতেই বললেন, “একা মায়ের লড়াইটা তো ব্যতিক্রমী, অন্য রকম। একমাত্র সন্তান রিয়ান আরও ছোট। সমাজমাধ্যমে তখন কটাক্ষের বানভাসি। ব্যক্তিগত জীবনেও তার প্রভাব পড়েছিল। কাজের পরিমাণও সাময়িক ভাবে কমে গিয়েছিল।” কিন্তু তিনি হার মানেননি। সত্যের পথে থাকলে জয় আসবেই, এই বিশ্বাস শ্বাস-প্রশ্বাসে মিশিয়ে নিয়েছিলেন।
অরিন্দমের বিরুদ্ধে অভিযোগ এই প্রথম নয়। বারে বারে তিনি অভিনেত্রীদের প্রতি যৌন হেনস্থার অভিযোগে বিদ্ধ। তবু পদক্ষেপ করতে এত দেরি হল কেন? প্রশ্নের জবাবে রূপাঞ্জনার যুক্তি, সবটাই সময়ের উপরে নির্ভর করে। এখন উপযুক্ত সময় এসেছে। অভিযুক্ত তাই শাস্তি পেলেন। তিনি এ-ও বলেছেন, “করোনা দিয়ে শুরু। তার পর নানা ঘাত-অভিঘাতের মধ্যে দিয়ে জীবন এগিয়ে চলেছে। সে সবকে সঙ্গী করেই লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। এ ছাড়া গতি নেই।” অভিনেত্রীর আরও দাবি, “আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসকের নির্যাতনে মৃত্যু সকলকে কাঁদিয়েছে। সেই জায়গা থেকে ফের নারীশক্তির জাগরণ ঘটেছে। আওয়াজ উঠেছে, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস।’”