অনস্ক্রিন চরিত্রের পক্ষ নিয়ে কথা বললেন রুক্মা।
সৌজন্য-গুনগুনের ‘হব হব’ প্রেমের মাঝে কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়ে সে। সম্পর্কে তুতো বোন হলেও, গুনগুনের সঙ্গে দূর-দূরান্ত অবধি তার মিল খুঁজে পাওয়া দায়! অগোছালো, পড়াশোনায় দুর্বল ‘মুখার্জি বাড়ি’র বউয়ের তুলনায় সে কতটা শিক্ষিত, তা কথায় কথায় মনে করিয়ে দিতে ভোলে না।‘খড়কুটো’ ধারাবাহিকের ‘তিন্নি দিদি’ অর্থাৎ অনন্যা। তার সপাটে ‘অপমান’গুলো যেন গুনগুনকে নয়, টেলিভিশনের পর্দা ভেদ করে সোজা এসে লাগছে দর্শকদের গায়ে। তারপর ক্ষোভ, রাগ, খারাপ লাগা প্রতিফলিত হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রোল বা মিম হয়ে। কিন্তু অভিনেত্রী হিসাবে এত ভালবাসা, এত আবেগ আগে কবে পেয়েছেন তা মনে করতে পারছেন না অনন্যা অর্থাৎ রুক্মা রায়। ‘খড়কুটো’র পাশাপাশি আপাতত তিনি ব্যস্ত নতুন ধারাবাহিক ‘দেশের মাটি’র শ্যুটেও। কাজের ফাঁকেই ফোনে প্রথমবার মুখ খুললেন আনন্দবাজার ডিজিটালের কাছে।
২০২১-র নতুন ‘জুন আন্টি’ হয়ে এল অনন্যা
গলাতে উচ্ছ্বাস স্পষ্ট। সোশ্যাল মিডিয়ায় যে তাকে নিয়ে এত শাপ-শাপান্ত চলছে, সে বিষয়ে বিন্দুমাত্র মাথাব্যথা নেই রুক্মার। এ দিকে সৌজন্যকে ছেড়ে অন্য কারওর সঙ্গে ‘ঘর বাধা’র উপদেশ পাচ্ছেন চারদিক থেকে।কেমন লাগছে তাঁর? তিনি বললেন, “আমার খুবই ভাল লাগছে। অভিনেত্রী হিসাবে যে আমি আমার চরিত্রটা ফুটিয়ে তুলতে পেরেছি তা বুঝতে পারছি। তবে তিন্নি মেয়েটার মন কিন্তু খারাপ নয়। দর্শকরা ভাবছেন মেয়েটা খুব হিংসুটে, ঝগড়ুটে। অনেক ক্রাইসিসের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে বলে ও এ রকম।”
অনস্ক্রিন চরিত্রের পক্ষ নিয়েই রীতিমত কথা বলে গেলেন রুক্মা।
গুনগুনের সঙ্গে ‘ক্যাটফাইট’টা কিন্তু পরিচালক কাট বলা পর্যন্তই
অভিনয় করতে এসেছিলেন ‘অনন্যা’র চরিত্রে। সেটা করতে গিয়ে দুম করে ‘হিংসুটে’ আখ্যা পেয়ে গেলেন! অফিসের সিনিয়র সৌজন্যকে ভালবেসেও পরিস্থিতির জন্য বলতে না পারা মেয়েটা কথায় কথায় সুযোগ খোঁজে গুনগুনকে ছোট করার। অফিসের চৌহদ্দি থেকে বৌভাতের আসর, দুই বোনের বিতণ্ডা স্থান-কাল বিচার করে না। কিন্তু এ যে শুধুই অভিনয় তা আর দর্শককে বোঝায় কে?
রিল লাইফের দ্বৈরথকেই তাই বাস্তব মেনে বসেছেন নেটাগরিকদের একাংশ। রুক্মা বললেন, “পরিচালক অ্যাকশন বলার পরেই ঝগড়া শুরু আমাদের। ক্যামেরা বন্ধ হলে কিন্তু আমরা সকলেই আবার খুব বন্ধু। আর আমাদের সৌজন্য দা মানে কৌশিকের সঙ্গেও আমার খুব মিষ্টি সম্পর্ক। কিন্তু মানুষ সেটা বিশ্বাস করতে চান না।”
‘অনন্যা’র চরিত্রে অভিনয় ‘হিংসুটে’ আখ্যা পেয়ে গেলেন।
এক দিকে যেমন অবিরত মিম, ট্রোল, অন্য দিকে অনুরাগীদের শুভ কামনা। তাঁরা চান, সৌজন্যকে ছেড়ে নতুন করে জীবন শুরু করুক অনন্যা। অন্যান্য ধারাবাহিকের মতো অনন্যার গায়ে ‘তৃতীয় ব্যক্তি’র ট্যাগ গায়ে লাগবে না বলেই বিশ্বাস একদল নেটাগরিকের।
তবে কি অনন্যার জীবনেও আসবে নতুন বসন্ত? সব আশায় জল ঢেলে রুক্মা জানালেন, তিন্নির জীবনে নতুন কেউ আসবে না। সে সৌজন্যকেই ভালবেসে যাবে।
মুখোপাধ্যায় পরিবার তো ছিলই, রাস্তায় বেরলেও কথা শুনতে হচ্ছে ‘তিন্নি দিদি’ কে
‘সৌগুন’এর বৌভাতের এপিসোড মনে আছে? রীতিমত কালো শাড়ি পরে, সেজেগুজে হাতে উপহার নিয়ে হাজির হয়েছিল অনন্যা। সৌজন্যেকে নিয়ে গুনগুনের সঙ্গে ফের ঝগড়া শুরু হতেই কি হেনস্থা হয়েছিল সে! সৌজন্যের বৌদি থেকে পটকা, কথা শোনানোর তালিকায় বাদ ছিল না কেউ! টেলিভিশনে পর্দা,সোশ্যাল মিডিয়ায় স্ট্যাটাস থেকে বেরিয়ে রাস্তাঘাটেও নাকি ‘সাবধানবাণী’ উড়ে আসছে তাঁর দিকে।
“কেন সৌজন্য-গুনগুনের মাঝে আসছো? ওদের জীবন থেকে সরে যাও”, এক দর্শক রাস্তায় পেয়ে রীতিমত শাসিয়েছিলেন রুক্মাকে।
আরও পড়ুন: নিজে না মানলেও সঠিক ‘জ্ঞান’ বিতরণে ওস্তাদ মালাইকা
তিন্নির উপর ক্ষোভ, রাগ, খারাপ লাগা প্রতিফলিত হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রোল বা মিম হয়ে।
অভিনেত্রীর কথায়, “রাস্তাঘাটে বেরোলে অনেকে এখন রেগে রেগে তাকায় আমার দিকে, অনেকে রাগ করে অনেক কথাও বলেন।” কিন্তু সে সবই ভাল লাগে রুক্মার। সব রাগ, ক্ষোভ হেসে উড়িয়ে দেন তিনি।
ধারাবাহিকের ‘নায়িকা’ না হয়েও, আপাত ভাবে নেগেটিভ চরিত্রে অভিনয় করেও দর্শকের মুখে ঘুরছে তাঁর নাম। ভাল লাগছে রুক্মার। মনে করছেন, ২০২১ সালে কেরিয়ারের ‘তিন্নি দিদি’র হাত ধরে নতুন অধ্যায় শুরু হল তাঁর।
এই তো গেল কাজের কথা, আর প্রেমের অধ্যায়? সেটা কতদূর?
“জীবনে প্রেম এলে নিশ্চয়ই জানাব”, মৃদু হাসি খেলে গেল রুক্মার গলায়।
আরও পড়ুন: চুক্তিবদ্ধ বিয়ে বা জন্মদিন পালন বিশ্বাস করতেন না ইরফান, তাঁর জন্মদিনে মুখ খুললেন বাবিল