নয়ের দশকে ভারতীয় দূরদর্শনে সঞ্চালনার ব্যাকরণ পাল্টে দিয়েছিলেন তিনি। তথাকথিত সুন্দরী না হয়েও ব্যক্তিত্বের জোরে অন্য মাত্রা দিয়েছিলেন ‘সুরভি’ অনুষ্ঠানকে। ফিল্মেও কাজ করেছেন সুনামের সঙ্গে। আক্ষরিক অর্থেই হাসিমুখে দর্শকমন জয় করেছেন রেণুকা শহাণে।
রেণুকার জন্ম ১৯৬৬ সালের ৭ অক্টোবর। তাঁর বাবা লেফ্টেন্যান্ট বিজয়কুমার শহাণে ছিলেন ভারতীয় নৌবাহিনীতে। মা, শান্তা গোখলে থিয়েটার ব্যক্তিত্ব এবং চলচ্চিত্র সমালোচক।
রেণুকা যখন খুব ছোট, বিচ্ছেদ হয়ে যায় তাঁর বাবা-মায়ের। রেণুকার মা শান্তা বিয়ে করেন চলচ্চিত্র পরিচালক অরুণ খোপকরকে। কিন্তু সেই দাম্পত্যও বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। এরপর শান্তা আর বিয়ে করেননি।
রেণুকা এবং তাঁর ভাই গিরীশ শহাণে মুম্বইয়ে বড় হন মায়ের কাছে। সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে সাইকোলজিতে স্নাতক রেণুকা মুম্বই বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিতে স্নাতকোত্তর সম্পূর্ণ করেন। তাঁর ভাই গিরীশ চলচ্চিত্র সমালোচক এবং লেখক।
মরাঠি ছবি ‘হাচ শুনবাইচা ভাউ’-তে প্রথম অভিনয় রেণুকার। তার আগে আটের দশকেই রেণুকা পরিচিত ও জনপ্রিয় মুখ দূরদর্শনে। ১৯৯৪ সালে প্রথম হিন্দি ছবিতেই বাজিমাত। সিনেমার দর্শকের কাছে রেণুকা এখনও ‘হম আপকে হ্যায় কৌন’-‘পূজা’। ‘নিশা’রূপী মাধুরী দীক্ষিতের দিদি।
এরপর বেশ কিছু হিন্দি ও দক্ষিণ ভারতীয় ছবিতে অভিনয় করেছেন রেণুকা। তাঁর মায়ের উপন্যাসের উপর ভিত্তি করে পরিচালনা করেছেন মরাঠি ছবি ‘রীতা’। ছবিতে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয়ও করেছেন রেণুকা।
‘ইমতিহান’, ‘সার্কাস’-এর মতো আইকনিক দূরদর্শনের সিরিয়ালেও রেণুকা ছিলেন উল্লেখযোগ্য নাম। ‘সার্কাস’ সিরিয়ালে রেণুকা ছিলেন শাহরুখ খানের সহঅভিনেত্রী। তখন অবশ্য শাহরুখ নবাগত। তারকার আলোকবৃত্ত থেকে বহু ক্রোশ দূরে। দূরদর্শন পরবর্তী যুগে বিভিন্ন বেসরকারি চ্যানেলের সিরিয়ালেও দাপটের সঙ্গে কাজ করেছেন রেণুকা।
অভিনয় ও সঞ্চালনা, দুই-ই রেণুকা চালিয়ে গিয়েছেন সমান দক্ষতায়। দূরদর্শনের ‘সুরভি’-র পরবর্তী যুগেও সঞ্চালনায় নিজের জনপ্রিয়তা ধরে রেখেছিলেন রেণুকা।
মরাঠি নাট্যব্যক্তিত্ব বিজয় কেঙ্করে ছিলেন রেণুকার প্রথম স্বামী। বিয়ের কয়েকদিন পরেই তাঁদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়। পরে ২০০১ সালে রেণুকা বিয়ে করেন অভিনেতা আশুতোষ রাণাকে। তাঁদের দুই ছেলে, শৌর্যমান ও সত্যেন্দ্র।
সিনেমায় সুযোগ পেয়েও রেণুকা অবহেলা করেননি ছোট পর্দাকে। সেখানকার কাজও সমান গুরুত্ব দিয়ে করেছেন তিনি। এখন তাঁকে দেখা দেখা যাচ্ছে শর্ট ফিল্ম ওয়েব সিরিজেও।
অভিনয়ের মতো ব্যক্তিগত জীবনেও রেণুকা স্পষ্টবাদী। নিজের তিক্ত অভিজ্ঞতা জানিয়ে ‘মি টু’ মুভমেন্টে সামিল হতে দ্বিধা করেননি। ( ছবি : সোশ্যাল মিডিয়া)