Rafiath Rashid Mithila

Rafiath Rashid Mithila: আমার আর তাহসানের বন্ধুত্ব আয়রাকে সুস্থ জীবন দিয়েছে: মিথিলা

পেশাগত জীবন, সৃজিতের সঙ্গে রসায়ন, তাহসানের সঙ্গে বন্ধুত্ব— আনন্দবাজার ডিজিটালের কাছে সব কিছু নিয়ে অকপট মিথিলা।

Advertisement

স্রবন্তী বন্দ্যোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০২১ ১৫:৫৩
Share:

রাফিয়াথ রাশিদ মিথিলা।

প্রশ্ন: প্রায় ৩ মাস হয়ে গেল বাংলাদেশে আটকে, সৃজিতের জন্য মন খারাপ করছে না?

মিথিলা:
হিসেব মতো বিয়ের পরে আমি আর সৃজিত ৭ থেকে ৮ মাস একসঙ্গে থেকেছি।এরকম হয়েছে, আমি আর আয়রা হয়তো কলকাতায় তখন সৃজিতকে শ্যুটিং-এ যেতে হয়েছে। আবার আমি কাজে ঢাকায় চলে এসছি। আমরা দুজনেই এত ব্যাস্ত! তারপরে এই অতিমারি। কিছু ভাবতেই দিচ্ছে না। এই তো এ বছর এপ্রিল থেকে আমরা ঢাকায়। কিন্তু এ বার কলকাতায় আয়রার স্কুল খুলে যাচ্ছে।অনলাইনে ক্লাস সম্ভব হলেও ওর নতুন বইপত্র সব কলকাতায় পড়ে আছে। কী যে করব! বর্ডার বন্ধ। আমি আর সৃজিত রোজই আমাদের যাওয়া নিয়ে আলোচনা করি।ও যে ঢাকায় আসবে, তাও তো হবে না। ঢাকায় এখন করোনা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসছে। আমি বর্ডার খুললে জুলাইতে যাওয়ার চেষ্টা করব। তখন শুনছি সৃজিত শ্যুটে মুম্বইতে থাকবে।যা অবস্থা, অনেক দূরের কথাও আগে থেকে ভাবছি।

প্রশ্ন: ডিসেম্বরে তো বিবাহবার্ষিকী…

মিথিলা
: আমি তো সৃজিতকে ইতিমধ্যেই জিজ্ঞেস করেছি ডিসেম্বরে আদৌ আমরা একসঙ্গে থাকব কি না?কাজ থাকলে ও তো বেরিয়ে যাবে।

Advertisement

প্রশ্ন: অতিমারির কারণে আপনাদের এই দূরত্ব নিয়ে তো চারিদিকে অনেক কথা…


মিথিলা: কথার কোনও শেষ বা শুরু নেই আর।

Advertisement

প্রশ্ন: লোকে বলছে জামাইষষ্ঠীর পরে আবার নাকি আপনাদের মিলন হয়েছে?

মিথিলা:
দেখুন সৃজিত আর আমার মিলন বিচ্ছেদের কোনও প্রশ্ন নেই।এই অতিমারির নানা নিয়ম পেরিয়ে আমরা কী ভাবে একসঙ্গে থাকব সেটা নিয়েই রোজ ভাবি।আলোচনা করি। আমাকে সৃজিতকে নিয়ে বা আমার বিয়ে নিয়ে আজ নয়, ভারত আর বাংলাদেশ দু দিকেই নেটমাধ্যমে অজস্র কটাক্ষের শিকার হচ্ছি।তবে সাম্প্রতিক কালে অরুচিকর কথা বেড়েছে। আমাকে ‘অসভ্য’ বলে মানুষ নিজে যে অসভ্যতার পরিচয় দিচ্ছে সেটা আগামী পৃথিবীর জন্য একেবারেই স্বাস্থ্যকর নয়।

সৃজিতের সঙ্গে মিথিলা।

প্রশ্ন: যেমন?

মিথিলা:
বাংলাদেশে তো মানুষের সবচেয়ে বেশি রাগ আমার ওপর।মানুষ প্রশ্ন করছেন মেয়ে হয়ে কেন আমি বিবাহ বিচ্ছেদ করলাম?মেয়েদের নাকি এ সব করতে নেই। তাহসানের ওপর কিন্তু মানুষের রাগ নেই।রাগ যত আমার ওপর। আমি কেন বিয়ে করলাম?আর সৃজিত তো ইসলাম ধর্মীও নয়। আমি বাংলাদেশের সংস্কৃতিকে কলুষিত করেছি।আমি নাকি ‘চরিত্রহীন মা’।এই ‘অসভ্য’ মা ‘অসভ্য’ জাতির জন্ম দেবে। এ বার কিন্তু সময় এসেছে আমরা সবাই একসাথে মিলে, অনলাইন তথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই হয়রানি বন্ধ করার উদ্যোগ নিই। হয়রানির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হোক সমস্বরে।

প্রশ্ন: তাহসান আপনার সঙ্গে লাইভে এসেছিলেন…

মিথিলা:
হ্যাঁ। তা নিয়েও কত প্রশ্ন। আমাদের সম্পর্ক জুড়ে যাবে। আমরা একটি বিজ্ঞাপনী সংস্থার প্রচারের মুখ হয়েছি মাত্র। একসঙ্গে কাজও হবে না। তাতেই কত কী গল্প তৈরি হচ্ছে।

প্রশ্ন: তাহসান কিন্তু নেটমাধ্যমে আপনাকে কটাক্ষ করা নিয়ে তীব্র বিরোধিতা করেছিলেন?

মিথিলা:
তাহসান আমার প্রাক্তন স্বামী। আমরা আজও বন্ধু। আমাদের রোজ কথা হয়। মানুষকে বুঝতে হবে আমরা দুজনে এক বাচ্চার বাবা-মা। আমাদের সম্পর্কটা এখন বন্ধুর মতো। আর এই সম্পর্ক আয়রার জন্য খুব জরুরি। আমার আর তাহসানের স্বাভাবিকতার জন্যই আয়রা আমায় আজ বলতে পারে, ‘মা আমি বাবার কাছে যাব’। আমার অন্যান্য বন্ধুদের তো দেখেছি বিবাহ বিচ্ছেদের পরে পারস্পরিক সম্পর্ককে তাঁরা এত তিক্ত করেছে যে তার প্রভাব বাচ্চার ওপর এসে পড়েছে। আয়রা সেখানে স্বাভাবিক পরিবেশে বড় হচ্ছে। তবে এখন আয়রার স্কুল আর নতুন বই নিয়ে চিন্তায় আছি। কলকাতার সংসারটাও গোছাতে হবে।

প্রশ্ন: বাংলাদেশে তো আপনি প্রচুর কাজ করছেন?

মিথিলা:
মন ভাল রাখতে কাজ করে যাওয়া ছাড়া আর কিছু করার নেই।

মেয়ে আয়রা এবং প্রাক্তন স্বামী তাহসানের সঙ্গে মিথিলা।

প্রশ্ন: ইদে আসছে রাকেশ বসুর ‘অন্তর্জলি যাত্রা’?

মিথিলা:
হ্যাঁ। প্রেমিকা এবং মেয়ে দুই চরিত্রে অভিনয় করেছি। বাংলাদেশের টিভি চ্যানেলের পাশাপাশি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মেও এই ছবি দেখা যাবে। সম্প্রতি বিজ্ঞাপনের কাজও করলাম। এর সঙ্গে ব্র‍্যাক ইন্টারন্যাশনালের আর্লি চাইল্ডহুড ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম এর প্রোগ্রাম হেড। এ ছাড়াও দুটো ছবি এবং অনেক গুলো নাটকের কাজ শেষ করলাম।

প্রশ্ন: এ ছাড়া আর কী কী করছেন?

মিথিলা: দুটো স্বল্প দৈর্ঘের ছবি করেছি। পাশাপাশি জেনেভা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি-ও চলছে।


প্রশ্ন: এত কিছু সামলান কী করে?

মিথিলা:
শ্যুটিং করতে করতে ব্র্যাকের কাজ করি আমি। আবার অফিসে মেয়ে আয়রাকে মানুষ করতে করতে ছবির সংলাপ মুখস্থ করেছি।

প্রশ্ন: কলকাতায় কবে কাজ শুরু করবেন?

মিথিলা:
ইচ্ছে তো আছে। কিন্তু তার জন্য এক টানা কলকাতায় থাকা উচিত। সেটা আর হচ্ছে কই? কয়েকটা ছবিতে কাজ করার কথাও হয়েছিল। কিন্তু লকডাউন শুরু হল, সব কাজ বন্ধ।

প্রশ্ন: সৃজিতের ছবিতে কাজ করছেন?

মিথিলা
: না না। সৃজিত বউকে কোনও দিন ওর ছবিতে নেবে না।সৃজিতকে চিনি আমি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement