পুজোর আমেজ ছড়িয়ে কৌশানী মুখোপাধ্যায়। গ্রাফিক্স: শৌভিক দেবনাথ।
এ বছরের পুজো অন্য রকম। পুজোর আগে শহর জুড়ে অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুর গন্ধ। তার মধ্যেই মাত্র চার দিনের জন্য দেবী আসছেন। অনেক বিষাদেও ভাল লাগার আবেশ। আর এ বছর আমার পুজোমুক্তি ছবি, 'বহুরূপী'। তাই এ বারের পুজোয় যতটা বনি সেনগুপ্তের সঙ্গে ততটা শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়েরও।
আমার কাছে পুজো মানে ছোটবেলায় ফিরে যাওয়া। মায়ের সঙ্গে ব্যাগ ভরে কেনাকাটা। মা আর নেই। বাবা সব সময় সেই ফাঁক পূরণ করার চেষ্টা করেই চলেছে। তবু সেই ফাঁক কি ভরে? আমার কাছে দেবী তাই মাতৃস্বরূপিণী। চারটে দিন সব দুঃখ পাশে সরিয়ে একটু বেশি হাসিখুশি থাকার দিন। এ বছর নানা কারণে পুজোর কেনাকাটা এখনও করে উঠতে পারিনি। তবে ব্লাউজ় বানাতে দিয়েছি বেশ কয়েকটি। আমার পুজো মানেই শাড়ি। আমার বাড়িতেও দেবী পুজো হয়। ফলে, দিনের বেশির ভাগ চলে যায় সেই আয়োজনে।
ছোটবেলাটাকে খুব মিস করি, জানেন! শিউলির গন্ধে, ঢাকের বোলে ঘুম ভাঙা। সকাল সকাল স্নান সেরে মণ্ডপে। বন্ধুরাও হাজির। অষ্টমীর অঞ্জলি। আড়নজরে সুন্দর পুরুষের সঙ্গে চোখাচোখি। পাড়ার সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় প্রতি বছর ‘সেরার সেরা’র শিরোপা। মনটা ভাল হয়ে যেত। দিনগুলোই অন্য রকম। সে সব আনন্দের পুরোটা না থাক এখনও অনেকটাই আছে। প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে ঘোরা আছে। ফুচকা, ঠাকুরের ভোগ, বিরিয়ানি খাওয়া আছে। ভরপেট পেটপুজো করে ওজন বাড়িয়ে ফেলা আছে। সকালে শাড়ি বিকেলে ড্রেস পরা আছে। আর আছে অনুরাগীদের ভিড়ে নিজের জনপ্রিয়তা আরও এক বার যাচাই করে নেওয়ার তাগিদ।
মজার কথা কী জানেন, আমি আর বনি যখন বেরোই তখন বেশি ভিড় কিন্তু বনিকে ঘিরেই। নিজস্বী তোলার ভিড়। আমায় অনেকেই কেন যেন একটু সমঝে চলেন! ভাবেন বোধহয়, যদি বকে দিই। যদিও আমি একেবারেই তেমন নয়। আর হ্যাঁ, এ বছর প্যান্ডেলের পাশাপাশি প্রেক্ষাগৃহে যাওয়াও আছে। ছবি দেখার পর দর্শকদের মুখোমুখি। আজও নতুন ছবিমুক্তির পর ভয়ে বুক ঢিপঢিপ করে। এ বছরের পুজোর ক্যালেন্ডার আপাতত এ ভাবেই সাজানো।