Azmeri Haque Badhon

বাংলাদেশের ইতিহাসে বাঁধন, নারীদের পূর্ণ অভিভাবকত্ব প্রদানের পক্ষে রায় দেশের আদালতের

২০১৮ সালে আদালত অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধনকে তাঁর মেয়ের অভিভাবকত্ব দেয়। বাংলাদেশের প্রথম মহিলা হিসেবে সন্তানের পূর্ণ অভিভাবকত্ব অর্জন করেছিলেন তিনি। আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে কথা বললেন অভিনেত্রী।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ২০:০৬
Share:

বাঁধনের সঙ্গে তাঁর মেয়ে সায়রা। ছবি: সংগৃহীত।

নজির গড়লেন বাংলাদেশের অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন। বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে তিনিই প্রথম মহিলা, যিনি সন্তানের পূর্ণ অভিভাবকত্ব পেয়েছেন। সোমবার বাংলাদেশের হাই কোর্ট সে দেশের অভিভাবকত্ব আইনে পরিবর্তন সাধনের নির্দেশ দিয়েছে। ২০১৮ সালে মেয়ের অভিভাবকত্ব চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন ‘রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসেননি’ ওয়েব সিরিজ় খ্যাত অভিনেত্রী বাঁধন। আদালত তখন তাঁর পক্ষে রায় দেয়।

Advertisement

এর আগে বাংলাদেশে নাবালক সন্তানের বাবা জীবিত থাকলে মাকে অভিভাবকত্ব দেওয়া হত না। সে ক্ষেত্রে বাঁধনের পক্ষে রায়কে ‘ব্যতিক্রমী’ বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহল। সম্প্রতি কতগুলি মামলা বিচার করে সোমবার বাংলাদেশের হাই কোর্ট জানতে চায়, কেন মহিলারা পূর্ণ অভিভাবকত্বের অধিকারী হবেন না। ফলে ১৮৯০ সালের আইনে আদালত সংশোধনের নির্দেশ দেয়। নাবালক সন্তানের অভিভাবকত্ব নির্ধারণে নীতিমালা প্রণয়নে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করতেও নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের দ্বৈত হাই কোর্ট বেঞ্চ রুল-সহ এ আদেশ দেন। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আগামী ৪ অগস্টের মধ্যে এই কমিটিকে নীতিমালা দাখিল করতে।

২০১০ সালে মাশরুর সিদ্দিকীর সঙ্গে বিবাহসূত্রে আবদ্ধ হন বাঁধন। চার বছর পর তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়। তাঁদের কন্যাসন্তানের নাম মিশেল আমানি সায়রা। ২০১৮ সালের ৩০ এপ্রিল আদালত বাঁধনকে মেয়ের একক অভিভাবকত্ব প্রদান করে। বাংলাদেশের আইন যে মাকে অভিভাবকত্ব দিতে চাইছে, তা দেখে উচ্ছ্বসিত বাঁধন।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে বাঁধনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বললেন, ‘‘তখনই প্রচণ্ড আনন্দিত হয়েছিলাম। কিন্তু তখন মানসিক এবং সামাজিক দিক থেকে যে অবস্থানে ছিলাম, বিষয়টার গুরুত্ব হয়তো ততটা বুঝতে পারিনি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেটা বুঝতে পেরেছি। এ বার রায়দানের সময় আমার ঘটনাটিকে ‘রেফারেন্স’ হিসেবে উল্লেখ করেছে আদালত।’’

বাঁধন জানালেন, মেয়ের অভিভাবকত্ব পাওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন সময়ে আদালত তাঁকে দৃষ্টান্ত হিসেবে উল্লেখ করেছে। প্রচুর মানুষও বিষয়টি সময়ের সঙ্গে জেনেছিলেন। বাঁধন বললেন, ‘‘আমি নিশ্চিত এই রায়ের ফলে আমাদের দেশের মেয়েদের মনোবল আরও বাড়বে। আমার কাজের পাশাপাশি ব্যক্তি হিসেবে আমার জীবনদর্শনকে বহু মহিলা পছন্দ করেন। বিভিন্ন সময়ে বহু মহিলা এগিয়ে এসে আলাপ করেছেন, ফোন করে বলেছেন যে, আমি নাকি তাঁদের অনুপ্রেরণা। আজ সত্যিই আমি গর্বিত।’’

তবে শুধু অভিভাবকত্ব নয়, বাংলাদেশে নারী-পুরুষের সমানাধিকারের ক্ষেত্রে আরও বহু কাজ বাকি বলেই মনে করেন ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ ছবির অভিনেত্রী বাঁধন। তিনি বললেন, ‘‘উত্তরাধিকার আইনের ক্ষেত্রে এখনও মহিলারা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। আগামী দিনে উত্তরাধিকার আইনেও মহিলাদের সমতা যত দ্রুত আসবে, সমাজ ততই দ্রুত অগ্রসর হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement