সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায় ও দীপঙ্কর দে।
করোনার আতঙ্ক এবং বয়সের বাধা দুই পেরিয়েই কাজ করতে চেয়েছিলেন তাঁরা। কেউ কেউ কাজ শুরুও করে দিয়েছিলেন। কিন্তু সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের কোভিড-১৯ পজ়িটিভ আসা ফের আতঙ্কে ফেলে দিয়েছে প্রবীণ অভিনেতাদের।
দীপঙ্কর দে এবং সৌমিত্রকে একই চিকিৎসক দেখেন। ‘‘আমার চিকিৎসকই ফোন করে জানালেন, এখন কাজ করা কতটা ঝুঁকির। দু’দিন হল শুট শুরু করেছিলাম। আমিও দোলাচলে ভুগছি কিন্তু কমিটমেন্টের কথাও ভাবছি,’’ বললেন দীপঙ্কর। সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায় যেমন মাসছয়েক ধরে বাড়িতেই রয়েছেন। জানালেন, নভেম্বর-ডিসেম্বর নাগাদ শুটিংয়ে ফেরার ইচ্ছে রয়েছে। তবে সৌমিত্রর করোনার খবরে একটু আতঙ্কিতও তিনি। বললেন, ‘‘উনি বড্ড ঝুঁকি নেন। আর কিছু দিন পরে কাজ শুরু করতে পারতেন। সকলেরই টাকার প্রয়োজন, কিন্তু এই পরিস্থিতি তো আগে হয়নি। তাই বুঝেশুনে কাজ করাই ভাল। বাড়ি বসে একটা শর্ট ফিল্ম শুট করলাম। হয়তো সে রকমই টুকটাক কাজ করব।’’
এ দিকে মাধবী মুখোপাধ্যায় গত ছ’মাস বাড়ি থেকে প্রয়োজন ছাড়া বার হননি। স্বামী অসুস্থ, তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো থেকে চিকিৎসা নানাবিধ কাজেই তিনি ব্যস্ত। করোনার পরিস্থিতিতে যে তিনি কাজে ফিরতে ভয় পাচ্ছেন, সে কথা স্পষ্ট করেই জানালেন মাধবী। গত মার্চ মাসে শেষ কাজ করেছিলেন পরান বন্দ্যোপাধ্যায়।
নভেম্বর মাস থেকে ফের কাজ শুরুর পরিকল্পনা তাঁর। হিন্দি ছবি ‘বব বিশ্বাস’ এবং বাংলা ছবির ডেট দিয়েছেন। এই পরিস্থিতি সম্পর্কে তাঁর মন্তব্য, ‘‘বয়স্কদের আরও বেশি সাবধানতা প্রয়োজন। আমি এত দিন বাড়িতেই ছিলাম। কিন্তু সকলের পক্ষে কাজ বন্ধ করে বসে থাকা সম্ভব নয়। সুরক্ষা আর রোজগার কোনটা বেছে নেবেন, এই দোটানায় সকলেই ভুগছেন।’’
লিলি চক্রবর্তী যেমন পুরোদমে শুটিং করছেন। ‘বৃদ্ধাশ্রম টু’-এর ফ্লোর থেকেই ফোনে বললেন, ‘‘আতঙ্কে আছি ঠিকই, তবে এখানে আমাকে যে ভাবে রাখা হয়েছে, তাতে ভরসা পাচ্ছি। আমার বসার জায়গা, গাড়ি সবই আলাদা। সব রকম সুরক্ষাবিধি মেনেই কাজ হচ্ছে।’’
প্রাথমিক শুটিং নির্দেশিকায় বয়স্কদের কাজ বন্ধ রাখারই নিদান ছিল। কিন্তু অনেকে আর্থিক কারণে কাজে ফিরতে চাইছিলেন। আনলক পর্বে মুচলেকা দিয়ে প্রবীণদের কাজে ফেরার বিধি চালু হয়। কিন্তু সংক্রমণের বৃদ্ধি ফের দোটানায় ফেলে দিয়েছে বয়স্ক অভিনেতাদের।