সুশান্তকে নিয়ে সন্দেহের কথা আগেও বলেছিলেন বলে দাবি করেছেন কুপার হাসপাতালের ওই মর্গকর্মী। ফাইল চিত্র।
ময়নাতদন্তের টেবিলে সুশান্ত সিংহ রাজপুতের চোখে কালশিটের দাগ দেখেছিলেন কুপার হাসপাতালের মর্গকর্মী। দেখে তাঁর মনে হয়েছিল, অভিনেতাকে খুব জোরে চোখের উপর ঘুষি মেরেছেন কেউ। এক সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সম্প্রতি সেই সন্দেহের কথা জানিয়ে ওই মর্গকর্মী বলেছেন, ‘‘সে দিনও কথাটা বলেছিলাম। কিন্তু যিনি ময়নাতদন্তের দায়িত্বে ছিলেন, তিনি থামিয়ে দিয়েছিলেন আমাকে। বলেছিলেন নিজের কাজে মন দিতে।’’
মুম্বইয়ের কুপার হাসপাতালের ওই মর্গকর্মীর নাম রূপকুমার শাহ। সংবাদ সংস্থা ‘ইন্ডিয়া টুডে’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, সুশান্তের ময়নাতদন্তের জন্য কুপার হাসপাতাল যে দলটি তৈরি করেছিল, তার সদস্য ছিলেন তিনি। তবে কে ওই দলের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন তা আজ আর তাঁর মনে নেই। তবে ময়নাতদন্তের পর তাঁকে সুশান্তের চোখের কালশিটের কথা জানিয়েছিলেন রূপকুমার। সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘‘ওঁর হাড়েও চোট ছিল। ভেঙে গিয়েছিল হাড়। বোঝা যাচ্ছিল অত্যন্ত জোরে আঘাত করা হয়েছে তাঁকে। কিন্তু আমার সিনিয়রকে সে কথা জানালেও তিনি আমার কথায় গুরুত্ব দেননি।’’
অভিনেতা সুশান্তের মৃত্যু নিয়ে রহস্যোদ্ঘাটন হয়নি এখনও। প্রাথমিক ভাবে আত্মহত্যা বলে দাবি করা হলেও সুশান্তের ভক্ত থেকে শুরু করে পরিবারের সদস্যরা দাবি করেছিলেন, সুশান্তকে খুন করা হয়েছে। যার সন্তোষজনক সমাধান আজও হয়নি বলেই মনে করেন অভিনেতার অনুরাগীরা। রূপকুমারের দাবি সেই অসন্তোষেই ইন্ধন জোগাল। সোমবারই তিনি জানিয়েছিলেন, অভিনেতাকে দেখে এবং পরীক্ষা করে তাঁর মনে হয়নি সুশান্ত আত্মহত্যা করেছেন। বরং খুনের তত্ত্বের স্বপক্ষে একাধিক প্রমাণ পেয়েছিলেন তিনি। মঙ্গলবারের সাক্ষাৎকারে সেই দাবি আরও স্পষ্ট করেছেন রূপকুমার। তিনি জানিয়েছেন, সুশান্তের গলায় দড়ির দাগটিও দড়িতে ঝুলে পড়ার জন্য হয়েছে বলে মনে হয়নি তাঁর। বরং ওই দাগ দেখে তাঁর মনে হয়েছিল, সুশান্তকে গলায় কেউ দড়ি পেঁচিয়ে ধরেছিলেন। তার থেকেই ওই দাগ হয়েছে।
কিন্তু সুশান্তের মৃত্যু হয়েছে ২০২০ সালে। এখন ২০২২ শেষের পথে। এতদিন মুখ বন্ধ করে ছিলেন কেন? প্রশ্ন করা হয়েছিল রূপকুমারকে। জবাবে তিনি বলেছেন, ‘‘আগের রাজ্য সরকারকে বিশ্বাস ছিল না। তাই কথা বলিনি। কিন্তু এখন আমি আমার বয়ান রেকর্ড করাতে রাজি আছি। এখন আর আমি নিজের নিরাপত্তার কথা ভাবি না। বরং চাই, সুশান্ত সিংহ রাজপুত সুবিচার পান।’’