প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে সুশান্তের মৃত্যুর সঠিক তদন্তের দাবি জানালেন শ্বেতা। ফাইল চিত্র।
সুশান্ত সিংহ রাজপুতকে খুন করা হয়েছিল, এ কথা বলার পর প্রাণসংশয় দেখা দিতে পারে কুপার হাসপাতালের কর্মীদের! সতর্কবার্তা দিয়ে তাঁদের নিরাপত্তা দাবি করলেন প্রয়াত অভিনেতার বোন শ্বেতা সিংহ কীর্তি। আবেদন জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে।
২০২০ সালের ১৪ জুন মুম্বইয়ের আবাসন থেকে যখন সুশান্তের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়, প্রাথমিক তদন্তে বলা হয়েছিল, আত্মহত্যাই করেছেন সুশান্ত। যদিও তাঁর পরিবার দাবি করেছিল, খুন করা হয়েছিল অভিনেতাকে। মৃত্যুর দু’বছর পর, সোমবার সেই তথ্যই সঠিক বলে জানিয়েছেন কুপার হাসপাতালের মর্গের কর্মী রূপকুমার শাহ। ওই হাসপাতালেই ময়নাতদন্ত হয়েছিল প্রয়াত অভিনেতার।
রূপকুমারের দাবি, সুশান্তের দেহে এবং গলায় একাধিক ক্ষতের দাগ ছিল। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সে কথা তিনি জানিয়েওছিলেন বলে দাবি রূপকুমারের। তখন কর্তৃপক্ষ তাঁকে ‘নীতি’ মেনে কাজের নির্দেশ দেন। কিন্তু সত্য গোপন করে রাখতে নারাজ রূপকুমার। একটি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি সাফ জানালেন, আত্মহত্যা করেননি সুশান্ত। তাঁকে খুন করা হয়েছিল। এর পরই রূপ এবং হাসপাতালের অন্যান্য কর্মীর নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন সুশান্তের বোন। টুইটারে শ্বেতা লিখেছেন, “রূপকুমার শাহের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। অনন্ত সময় না নিয়ে সিবিআই সঠিক তদন্ত করুক, এই দাবি জানাই।” এই পোস্টেই মোদী এবং অমিত শাহের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চান শ্বেতা।
এর পর ইন্সটাগ্রামেও আর একটি পোস্ট করেন শ্বেতা। সেখানে তিনি লিখেছেন, “যদি উপযুক্ত প্রমাণ থাকে, আমরা সিবিআইকে বিষয়টি আন্তরিক ভাবে দেখার জন্য অনুরোধ করছি। আমরা সব সময় বিশ্বাস করেছি, যে আপনারা সঠিক পথে তদন্ত করবেন এবং আমাদের সত্যিটা জানাবেন। এখনও এর কোনও সুরাহা না হওয়ায় আমাদের হৃদয় ব্যথায় আচ্ছন্ন।”
সুশান্তের মৃত্যুর আড়াই বছর পর হাসপাতালকর্মীর বয়ানে নতুন করে সমস্যা দানা বাঁধল। ২০২০ সালে মু্ম্বই পুলিশের পর এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি), নার্কোটিকস কন্ট্রোল ব্যুরো (এনসিবি) এবং সিবিআই সুশান্তের মৃত্যুর তদন্ত করেছিল। সুশান্তের জন্য মাদক জোগাড়ের অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিলেন তাঁর বান্ধবী তথা অভিনেত্রী রিয়া চক্রবর্তী। কিন্তু তার পর সুশান্তের মৃত্যরহস্য ধামাচাপা পড়ে যায়। এ বার কি আসল ঘটনা প্রকাশ্যে আসবে?
রূপকুমার আরও বলেন, ‘‘সুশান্ত সিংহ রাজপুত যখন মারা গিয়েছিলেন, তখন আমাদের কুপার হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য মোট পাঁচটি দেহ এসেছিল। পাঁচটির মধ্যে একটি দেহ ছিল ভিআইপির। ময়নাতদন্তের কাজের সময় জানতে পারি তিনি সুশান্ত সিংহ রাজপুত। তাঁর শরীরে একাধিক এবং গলায় দু’ থেকে তিনটি দাগ ছিল। ময়নাতদন্তের ভিডিয়ো রেকর্ড করার দরকার ছিল। কিন্তু ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ শুধুমাত্র দেহের ছবি তুলতে বলেন। তাঁদের নির্দেশ মেনেই কাজটা করেছিলাম।’’ সুশান্ত খুন হয়েছেন বলে শাহ জানিয়েছিলেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। এমনটাই তাঁর দাবি। তখন কর্তৃপক্ষ তাঁকে ‘নীতি’ মেনে কাজ করতে বলেন। শাহের কথায়, ‘‘যখন সুশান্তের দেহ প্রথম বার দেখি, তখনই সিনিয়রদের বলি যে, আমার মনে হয় এটা আত্মহত্যার ঘটনা নয়। খুন হয়েছেন তিনি। আমি এ-ও বলি যে, নিয়ম মেনেই আমাদের কাজ করা উচিত। যদিও সিনিয়রেরা আমায় যত দ্রুত সম্ভব দেহের ছবি তুলে পুলিশের হাতে দেহ দিয়ে দিতে বলেন। রাতেই আমরা সুশান্তের দেহের ময়নাতদন্ত করেছিলাম।’’