মায়ের সঙ্গে সৌরভ ইনস্টাগ্রাম
তৃণমূলের প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছা ছিল সৌরভের। কিন্তু একটি ভিডিয়োর পরে বদলে গেল তাঁর জীবন। শুধু তাঁর নয়, গোটা পরিবারের। তৃণমূলে যোগদান করলেন আনুষ্ঠানিক ভাবে। তাঁর ঘণ্টা খানেকের মধ্যে ফেসবুক-ইনস্টাগ্রাম ভরে উঠল সৌরভের একটি ভিডিয়োয়। বোন ও বাবার সঙ্গে জন্মদিন পালন করছেন অভিনেতা সৌরভ দাস। তারই একটি বিশেষ অংশ দেখে উত্তাল হয়ে যায় নেটমাধ্যম। কানে ভেসে আসতে থাকে বিভিন্ন কথা— ‘ভাই-বোনের নোংরামো’, ‘বোনের বুকে হাত দিয়ে রয়েছেন সৌরভ। কিন্তু সামনে ক্যামেরা ছিল, সে কথা ভুলে গিয়েছেন।’, ‘তৃণমূলকর্মীর আসল পরিচয়’ ইত্যাদি।
ঘটনার ৪ মাস পরে মাতৃদিবসে নতুন একটি ভিডিয়ো পোস্ট করে সামনে আনলেন অন্ধকার অদূর অতীতকে। নেটাগরিকদের জানালেন, ভাই-বোনের ভিডিয়ো বিতর্কের সময়ে তাঁর মাকেও কত ধরনের কটূক্তি শুনতে হয়েছিল। এক এক করে সে কথাগুলিই তুলে ধরলেন নেটাগরিকদের সামনে। তাঁর মা একটা একটা করে সাদা কাগজ তুললেন। আর তাতে ফুটে উঠল, ‘তোমার বংশ পরিচয় পেয়ে গেছি আমরা’, ‘বেজন্মা’, ‘এই ছেলে-মেয়ের জন্ম দিস’, ইত্যাদি। এমনকি ‘তুই-তোকারি’-ও করা হয়েছে অভিনেতার মাকে। বলা হয়েছিল, ‘কী শিক্ষা দিয়েছিস তোর ছেলে-মেয়েকে, নোংরা মহিলা’, ‘তোর ফ্যামিলিতে ওটাই চলে’।
আনন্দবাজার ডিজিটালকে সৌরভ জানিয়েছিলেন, তাঁর বাবা তখন অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল তাঁকে। পরিবার নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন। মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছিলেন তিনি। তাকেও ছেড়ে কথা বলেননি নেটাগরিকেরা। তাঁর সঙ্গে স্ত্রীর সম্পর্ক নিয়েও কুমন্তব্য করা হয়েছিল।
ভিডিয়োর শেষে সৌরভ এবং তাঁর মা একটি কাগজ তুলে ধরেন। যেখানে লেখা হয়, ‘আপনাদের ভালবাসার জন্য অনেক ধন্যবাদ’। আর একটি কাগজে দেখা যায়, ‘শুভ মাতৃদিবস’। যেন কোথাও গিয়ে ব্যঙ্গ করেই সকলের সমালোচনাকে নিন্দে করলেন মা এবং ছেলে। সেই দু’টি লেখা তুলে ধরার সময়ে চোখে জল চলে আসে সৌরভের মায়ের। মাকে জড়িয়ে ধরে মাথায় চুমু খান সৌরভ। সান্ত্বনা দেন তাঁকে।
নেপথ্যে ‘এবিসিডি’ ছবির ‘মাই তেরি চুনারিয়া’ গানটি বাজতে থাকে। আর পোস্টে সৌরভের লেখা, ‘মা, একটাই কষ্ট। তোমায় খুব কম হাসাতে পারলাম। ছোটবেলা থেকে আজ পর্যন্ত। সে নিজের দোষ হোক বা অন্যের’। সৌরভের মতে, তিনি অভিশপ্ত। কিন্তু তা বলে মায়ের প্রতি যে তাঁর ভালবাসায় খামতি নেই, সে কথা বারবার মনে করিয়ে দিলেন সেই পোস্টে। একইসঙ্গে সব মহিলার প্রতি সম্মান জানালেন অভিনেতা। সকলকে এ কথাও জানিয়ে দিলেন, ভিডিয়োটি বানিয়েছেন তাঁর বোন। কিন্তু নেটাগরিকদের কারণেই আজ তিনি নেটমাধ্যম থেকে সরিয়ে নিয়েছেন নিজেকে।