লন্ডনে রুদ্রনীল
টয়লেটে পা রাখতেই কী বিপত্তি! বাথরুমের দরজা হাট করে খোলা ভিতরের দিকে। তার গায়ে বড় হরফে লেখা ‘ইউনি সেক্স টয়লেটস’। কিন্তু বাইরে থেকে সেটা নজরে আসছে না। ফলে, মাথায় হাত অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষের, ‘‘ভিতর থেকে দেখি নানা বয়সের মেয়ে বেরিয়ে আসছেন!’’
এবার কী করবেন?
এই প্রশ্ন নিয়ে রুদ্রনীল গেলেন নিরাপত্তারক্ষীদের কাছে, ‘‘টয়লেট যাব। কোথায় বাথরুম? ’’ কী জ্বালা! তাঁরাও যে ওই টয়লেটেই যেতে বলেন। ‘‘এক সময় এটাও মনে হল, ওঁরা কি আমায় ‘মহিলা’ বলে ভুল করছেন?‘’ লন্ডন থেকে হোয়াটসঅ্যাপ কলে হাসতে হাসতে আনন্দবাজার ডিজিটালকে জানালেন অভিনেতা।
আবার টয়লেটের সামনে যেতেই বেরিয়ে এলেন একজন বয়স্ক মানুষ! মরিয়া রুদ্রনীল একটু ভিতরে ঝুঁকে উঁকি দিতেই দেখতে পেলেন আসল কিস্যা। যেন প্রাণ ফিরে পেলেন।
তার পরেই উপলব্ধি, লন্ডনে সব টয়লেট ইউনিসেক্স। নারী-পুরুষ লিঙ্গ ভেদটাই নেই। কত উদার! সবাই সব কিছু কত অনায়াসে ব্যবহার করেন।
লন্ডনের রাস্তায় সরকারি দোতলা বাস
ভারত এখনও লিঙ্গ ভেদে বিশ্বাসী। তাই সব জায়গাতেই স্ত্রী আর পুরুষদের জন্য আলাদা টয়লেটের ব্যবস্থা। সেই অভ্যাসে বিদেশে এই ব্যবস্থায় পড়তেই ঘাবড়ে যান অভিনেতা। তাঁর বিস্ময় ছড়িয়ে গিয়েছে ইনস্টাগ্রামেও। কিংকর্তব্যবিমূঢ় অবস্থার ছবিও পোস্ট করেছেন তিনি। সঙ্গে মানানসই ক্যাপশন, ‘লন্ডন ও নিরীহ বাঙগালী’!
আরও পড়ুন: এক ছেলের মা হওয়ার পর আবার প্রেগন্যান্ট অন্বেষা?
এই ‘নিরীহ বাঙালি’কে অনুরাগীদের কী পরামর্শ ছিল? ‘‘সাত-পাঁচ না ভেবে ঢুকে যাওয়াই ভাল!’’
কথায় কথায় রুদ্রনীল শেয়ার করলেন লন্ডনে শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা, ‘‘দিন পনেরো হয়ে গিয়েছে টিম ‘স্বস্তিক সংকেত’ লন্ডনে। শুটিং স্পট ১৮ শতকের কাটিশার্ক জাহাজ। লন্ডনের ঘড়ি অনুযায়ী ভোর ৬-৭টার মধ্যে পৌঁছে যাচ্ছে সকলে সেখানে। রহস্য রোমাঞ্চ ছবি। ফলে প্রচুর দৌড়-ঝাঁপ। জাহাজটা অবিকল ১৮ শতকের ইতিহাস গায়ে মেখে দাঁড়িয়ে। সেইখানে সবাই একবার উঠছি, একবার নামছি।’’
বিদেশ-বিঁভূইয়ে নিত্য নতুন অভিজ্ঞতার অবশ্য শেষ নেই। এর আগে গা ছমছমে ভূতুড়ে পরিবেশে রুদ্রনীল নাকি ভূতের খপ্পরেও পড়েছিলেন? প্রশ্ন শুনেই হাসি, ভূত শিকারি কেলভিন হ্যাচ নিউ ক্লিয়ার সিক্রেট বাঙ্কার টিম জেনেছে, রুদ্রনীলেরা যেখানে শুটিং করছেন সেটা ভূতেদের আস্তানা! এমন সুযোগ ছাড়েন ভূত শিকারিরা! সদলবলে চলে এসেছেন বৃষ্টি মাথায় নিয়েই। রেকি করেছেন গোটা স্পটের। কথা বলেছেন টিমের সবার সঙ্গে।
A post shared by Rudranil Ghosh (@rudranilrudy) on
রুদ্রনীলের কথায়, ‘‘আগে শুনেছিলাম, ভিডিয়ো দেখেছিলাম। এ বার চাক্ষুস দেখলাম "ঘোস্ট হান্টার" মানে, ভূত ধরিয়েদের। এখন জানলাম যেখানে শুটিং করছি, সেটা আসলে ভূতেদের আস্তান!!ওরা এসেছে ভূত ধরতে!’’যদিও টিমের কারওরই এখনও সৌভাগ্য হয়নি ‘তেনাদের’ চাক্ষুষ করার।
শুটিংয়ের ফাঁকে লন্ডন ঘুরে দেখছেন অভিনেতা। দেখে ফেলেছেন অক্সফোর্ড চত্বর, সমস্ত জাদুঘর। দেখেছেন কাশফুলও! আরও একটা জিনিস খুব ভাল লেগেছে রুদ্রনীলের, ‘‘লন্ডন পৌরসভার নিয়মে ওখানে বাড়ি তৈরির তিনটি স্ট্রাকচার। সেই স্থাপত্য মেনে বাড়ি বানাতে হবে। ফলে, শহরের সমস্ত বাড়ির গঠন এক। ‘এই দেখ আমার বাড়ি’ বলে দেখনদারির কোনও সুযোগই নেই। আর সব বাড়ির রং সাদা-বাদামি।’’
আরও পড়ুন: বিয়ের আগেই এক ঘরে কাপল মাসাজ নিলেন গৌরব-শ্রীমা! কোথায়?
রাস্তায় যান-বাহনের রংও চোখের পক্ষে ভীষণ আরামদায়ক। সাদা, ধূসর আর কালো। একমাত্র সরকারি দোতলা বাসের রং লাল!