Mimi Chakraborty

প্রার্থী না হয়েও শুধু দলকে ভালবেসে নির্বাচনে পরিশ্রম করেছি আমি, দেব এবং নুসরত: মিমি

তাঁর আশ্বাস, কাল থেকে ‘দিদি’ অতিমারি রুখতে নিজে মাঠে নামবেন। বাংলা ফের করোনামুক্ত হবে। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ মে ২০২১ ২০:৩০
Share:

মিমি চক্রবর্তী, নুসরত জাহান এবং দেব

কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যর্থতা দেশ যেন বুঝেও বুঝছিল না। একা বাংলা আবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, দেশের কেন্দ্রীয় শক্তি একজোট হলেও নারীশক্তিকে দমানো এত সহজ নয়। তৃতীয় বারের জন্য তৃণমূল কংগ্রেসের জয়কে আনন্দবাজার ডিজিটালের কাছে এই ভাবেই ব্যাখ্যা করলেন শাসকদলের সাংসদ মিমি চক্রবর্তী। পরিশ্রম শেষে জয়ের স্বাদ পাওয়ার আনন্দ, উচ্ছ্বাস তাঁর গলায়। মিমির দাবি, ‘‘বাংলা আজ যা করে, ভারত আগামী কাল তা ভাবে। এই প্রবাদই আবার সত্যি করে দিলেন মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী।’’ একই সঙ্গে উড়ে এল তাঁর কটাক্ষ। কেন্দ্রের প্রথম সারির নেতা-মন্ত্রী, ক্রিকেটার, আমলা, প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা দেশের অন্য দায়িত্ব ভুলে, বাংলায় পড়ে থেকেছেন দিনের পর দিন। একজন মহিলা মুখ্যমন্ত্রীকে হারাতে! তাঁর আশ্বাস, কাল থেকে ‘দিদি’ অতিমারি রুখতে নিজে মাঠে নামবেন। বাংলা ফের করোনামুক্ত হবে।

Advertisement

এই নির্বাচনে প্রার্থী না হয়েও সাংসদ-তারকা দলের হয়ে বহু জায়গায় সভা, সমাবেশ করেছেন। প্রচারে বেরিয়ে কেমন সাড়া পেয়েছিলেন জনগণের থেকে? মিমির দাবি, যখনই যে জায়গায় পা রেখেছেন তিনি, মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত উচ্ছ্বাস দেখতে পেয়েছেন। শাসকদলের প্রতি কোথাও কোনও বিরূপ মনোভাব চোখে পড়েনি তাঁর। নিজের কথার স্বপক্ষে মিমির যুক্তি, ‘‘জলপাইগুড়িতে কোনও দিন তৃণমূল জিততে পারেনি। এবার সেটাও হল। মানুষের আলাদা আবেগ কাজ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে।’’ একই সঙ্গে তাঁর দাবি, তিনি ধূপগুড়িতে প্রচারে গিয়ে জানতে পারেন, সেখানকার বিজেপি সাংসদকে স্থানীয় মানুষেরা নাকি কখনও চোখেই দেখেননি! অথচ শাসকদলের বিধায়কেরা সব সময়ে সব জায়গায় দরকারে-অদরকারে পৌঁছে যান। মিমি বললেন, ‘‘আমি দলকে খুব ভালবাসি! আমার আলাদা কী স্বার্থ? আমি, দেব, নুসরত প্রার্থী না হয়েও যে ভাবে এই বিধানসভা নির্বাচনের জন্য প্রচার করেছি, তার পিছনে স্বার্থ ছিল না।’’

পাশপাশি এই সাংসদ-তারকার মত, বাংলার সব স্তরের মানুষ ধর্ম নিয়ে বিভেদ, সাম্প্রদায়িকতা অপছন্দ করেন। একই ভাবে ‘লাভ জিহাদ’, ‘অ্যান্টি রোমিয়ো স্কোয়্যাড’ও পছন্দ করেনি বাংলা। কারণ, এ সব পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতি নয়। মিমির মতে বিজেপি বিষ ছড়াতে চেয়েছিল বাংলার বুকে। জনতা তা রুখে দিয়েছে। এই নির্বাচন সেটাই প্রমাণ করে দিল। বিপুল ভোটে শাসকদলের জয়ের পরে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছেন তিনি বাংলার মানুষকে।

Advertisement

২০২১-এর নির্বাচনের আগে তারকাদের দলবদল এবং নতুন করে রাজনীতিতে যোগদানের হিড়িক ছিল দেখার মতো। মিমির বহু সহ-অভিনেতা, বন্ধুর মধ্যেও এই প্রবণতা দেখা গিয়েছে। কেন এমন পদক্ষেপ করেছেন তাঁরা? মিমির স্পষ্ট জবাব, ‘‘খেলায় হার-জিত আছে। সেটা নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছি না। সেই সময়ে আমার অভিনেতা বন্ধুদের মনে হয়েছিল, দল বদলের প্রয়োজন আছে। কিংবা রাজনীতিতে যোগদানের উপযুক্ত সময় এটাই। তাই তাঁরা যোগ দিয়েছিলেন।’’ তাঁর কথায়, প্রত্যেকের নিজস্ব চিন্তাভাবনা রয়েছে। সেখানে তিনি কখনও হস্তক্ষেপ করবেন না। একই সঙ্গে এও জানিয়েছেন, রাজনীতি কোনও দিন বন্ধুত্ব নষ্ট করবে না। মিমির উদাহরণ, তিনি পার্নোকে বলেছিলেন, ফলাফলের আগে যেন একদম দুশ্চিন্তায় না ভোগেন।

সবশেষে বিজেপি-তে যোগদানের গুঞ্জন নিয়ে সরব শাসকদলের সাংসদ। চাঁছাছোলা ভাষায় তাঁর জবাব, ‘‘পার্নোর সঙ্গে ছুটি কাটাতে গিয়েছিলাম বলে অনেকেই ভেবেছিলেন, আমার বিজেপি-তে যোগদান শুধুই সময়ের অপেক্ষা। আজ তাঁদের উত্তর দেওয়ার দিন।’’ মিমির পাল্টা প্রশ্ন, কেন দল বদলাবেন তিনি? তিনি গেরুয়া শিবিরের মত বা পথ, কোনওটিতেই বিশ্বাস করেন না। তাঁর কি কোনও নীতিজ্ঞান নেই, প্রশ্ন তুললেন মিমি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement