মধুছন্দা।
সে সব অনেকদিনের কথা। সব মনেও নেই। যা মনে আছে সব ভাসা ভাসা। সালটা সম্ভবত ১৯৬৯। আমি তখন সবে কেরিয়ার শুরু করেছি। বাসুদাও তখন ইন্ডাস্ট্রিতে নতুন। আমার কাছে হঠাৎ করেই ‘সারা আকাশ’-এর প্রস্তাবটা আসে। আমিও রাজি হয়ে যাই।
বাসুদা’র সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত সম্পর্কের থেকেও কাজের সম্পর্ক বেশি ছিল। অত্যন্ত কাজপাগল একজন মানুষ। এক কথায় ‘পারফেকশনিস্ট’। খুব যে কড়া পরিচালক এমনটা মনে হয়নি কোনওদিন। তবে হ্যাঁ, যে শটটা চাইতেন সেটা মনমতো না হলে শটের পর শট নিয়েই যেতেন। যেহেতু সে সময় তিনি নতুন, তাই নিজেকে প্রমাণ করার তাগিদ ছিল প্রচুর।
আগ্রাতে আউটডোর শুটে গিয়েছিলাম আমরা। কিন্তু গোটা শুটিংয়ে কাজের বাইরে আমাদের বিশেষ কথা হয়নি। বাসুদা নিজের কাজে এতটাই ডুবে থাকতেন সব সময়। তা ছাড়াও ডেডলাইন ছিল। ২০ দিনের মধ্যে আউটডোরের শুট শেষ করতে হবে। বাসুদা আবার ওই ছবির প্রযোজকও ছিলেন। বুঝতেই পারছেন একগাদা চাপ নিয়ে কাজ করতে হত তাঁকে। মানুষটাকে যে ব্যক্তিগত ভাবে চিনব সে সময়ই পাইনি।
তবে বাসুদার স্ত্রীর সঙ্গে আমার বেশ ভাল বন্ধুত্ব হয়ে গিয়েছিল। সত্যি কথা বলতে বৌদির সঙ্গেই আমি বেশি ক্লোজ ছিলাম। মিশে গিয়েছিলাম বাসু’দার দুই সন্তানের সঙ্গেও। তাঁরা যদিও সে সময় খুব ছোট।
‘সারা আকাশ’-এর শুটিং শেষ হল। বাসুদাও নিজের কাজ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন। আর আমিও আমার কেরিয়ার নিয়ে। কাছ থেকে কম দিন দেখেছি মানুষটাকে। নিষ্ঠাবান, তাঁর কাজের প্রতি অপরিসীম ভালবাসা আমায় মুগ্ধ করেছে প্রতিটি মুহূর্ত।