ঘটনার পর প্রথম বার নিজের ক্ষতিগ্রস্ত অফিস ঘুরে দেখলেন কঙ্গনা রানাউত।
কঙ্গনার অফিস ভাঙার উপর আগামী ২২ সেপ্টেম্বর অবধি স্থগিতাদেশ দিল বম্বে হাইকোর্ট। অর্থাৎ, বুধবার দুপুর থেকে পালি হিলে কঙ্গনার অফিসের ‘অবৈধ নির্মাণ’ ভাঙার যে কাজ শুরু করেছিল বৃহন্মুম্বই পুরসভা তা আগামী ২২ সেপ্টেম্বর অবধি বন্ধ রাখার রায় জানিয়ে দেয় বম্বে আদালত। অন্য দিকে আজ বৃহস্পতিবার ভাঙচুরের পর প্রথম বার পালি হিলে নিজের অফিসে পৌঁছন অভিনেত্রী। সঙ্গে ছিলেন কঙ্গনার দিদি রঙ্গোলী চান্ডেল। এ দিন বিকেল চারটে নাগাদ কঙ্গনাকে তাঁর অফিস ‘মণিকর্ণিকা ফিল্মস’-এ প্রবেশ করতে দেখা যায়। দিদির সঙ্গে গোটা অফিস ঘুরে দেখেন তিনি। এরই পাশাপাশি, এ দিন কঙ্গনার মুম্বইয়ের বাড়িতে গিয়ে দেখা করেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী রামদাস অটওয়ালে
ঘটনার সূত্রপাত দিন দু’য়েক আগে। গত মঙ্গলবার বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ তুলে পালি হিলে কঙ্গনার মণিকর্ণিকা ফিল্মসের একটি দফতরে নোটিস ঝুলিয়ে দেয় বিএমসি। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সেই নোটিসের জবাব দিতে বলা হয়েছিল অভিনেত্রীকে। বুধবার সকাল পর্যন্ত তা না পৌঁছতেই বুধবার দুপুরে বুলডোজার নিয়ে অফিস ভাঙার কাজ শুরু করে বিএমসি। এরপরেই বম্বে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন কঙ্গনা। ভার্চুয়াল শুনানিতে অভিনেত্রী জানান, তাঁর কাছে নির্মাণ সংক্রান্ত সব কাগজপত্র রয়েছে। অফিস ভাঙার কাজে স্থগিতাদেশ দিয়ে হাইকোর্ট বলে, প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে, যে ভাবে ভাঙার কাজ এগিয়েছে তা আইনসম্মত নয়। এর পরেই কঙ্গনার আইনজীবীর আর্জি মেনে অভিনেত্রীকে ২২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে নোটিসের জবাব দেওয়ার সময় দেয় আদালত।
অফিস পরিদর্শন করছেন কঙ্গনা
যদিও কঙ্গনা থেমে থাকেননি। টুইটারে কখনও বাবর সেনা, আবার কখনও বা উদ্ধব ঠাকরেকে সরাসরি ‘তুই’ সম্বোধন করে ক্ষোভ উগরে দেন কঙ্গনা। মুখ্যমন্ত্রীকে টুইট-হুঁশিয়ারি দেন, ‘‘ উদ্ধব ঠাকরে, আজ আমার ঘর ভেঙেছে, কাল তোর অহঙ্কার ভাঙবে।’’ শুধু তাই নয়,‘বলি মাফিয়া’ এবং উদ্ধব ঠাকরের যোগসাজশনিয়েও মন্তব্য করেন কঙ্গনা। মুখ্যমন্ত্রীকে অপমান করার অভিযোগে এর পরেই কঙ্গনার বিরুদ্ধে মুম্বইয়ের ভিকরোলি আদালতে নিতিন মানে নামক এক আইনজীবী মানহানির মামলা দায়ের করেন।
অন্যদিকে আজ উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গে বৈঠকের পর শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউত সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জানান, "আমাদের জন্য কঙ্গনা রানাউত পর্ব শেষ। আমরা ভুলেও গিয়েছি। আমাদের রোজের কাজ নিয়ে আমরা ব্যস্ত"।
বলিউডের দু’একজন বাদে এই ঘটনায় কঙ্গনার স্বপক্ষে এখনও পর্যন্ত কাউকে মুখ খুলতে দেখা যায়নি। অঙ্কিতা লোখন্ডে, অনুপম খের কঙ্গনার অফিসে ভাঙার ঘটনায় প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষে মহারাষ্ট্র সরকারের নিন্দায় সরব হলেও বেশিরভাগই নীরব। সেই প্রসঙ্গ টেনে এনেই কঙ্গনার টুইট,“ফ্যান্দি ফেমিনিস্ট, বুলিউডের অ্যাক্টিভিস্ট, মোমবাতি মিছিল করা মানুষেরা এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য নেই। খুব ভাল। আমি যা আশা করেছিলাম তাই-ই হয়েছে। তোমাদের যা প্রাপ্য তাই আমার থেকে পাচ্ছ।”
বলিউড কঙ্গনার পাশে না দাঁড়ালেও ইম্পা অর্থাৎ ইন্ডিয়ান মোশন পিকচার প্রোডিউসারস অ্যাসোসিয়েশন কঙ্গনার হয়ে মুখ খুলেছে। এক প্রেস বিবৃতিতে সংস্থার প্রেসিডেন্ট টিপি আগরওয়াল জানান, “যা হচ্ছে তা সরকার এবং কঙ্গনা, উভয়পক্ষের জন্যই ভাল নয়। বিএমসি’র তরফ থেকে যে পদক্ষেপ করা হয়েছে তা একেবারেই ভুল। এর বিরোধিতা করছি।” যদিও ইম্পা-র কলকাতার সেক্রেটারি পিয়া সেনগুপ্তকে তাঁদের অবস্থান সম্পর্কে মতামত জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, “আপাতত এ ব্যাপারে আমরা কোনও মন্তব্য করব না।”