Bharat Kaul

আমি ক্যানসারের পেশেন্ট হয়ে ইন্ডাস্ট্রির কথা ভেবে যদি শুটিং করতে পারি, অন্যরা কেন পারবেন না: ভরত কল

আর্টিস্ট ফোরাম তার সদস্যদের শুটিংয়ে যোগদান করার পরামর্শ দিতে পারছে না বলে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে।

Advertisement

স্রবন্তী বন্দ্যোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০২০ ১৪:২২
Share:

—ফাইল চিত্র।

কল টাইম ঠিক হয়ে গিয়েছিল তাঁর। ‘শ্রীময়ী’, ‘জিয়নকাঠি’, ‘মোহর’। কিন্তু মঙ্গলবার রাতেই জানতে পারেন শুটিং হচ্ছে না। আনন্দবাজার ডিজিটালকে অভিনেতা ভরত কল বললেন, “খুব দুঃখজনক ঘটনা। মন্ত্রী আমাদের পাশে আছেন। এত কিছুর পরে শিল্পীদের করোনা সংক্রান্ত বিমার কাগজ হাতে না পেলে শুটিং বন্ধ থাকবে? এটা কী করে হয়? কী খাবে ইন্ডাস্ট্রির মানুষ? আর কত দিন? আমি এক জন ক্যানসার পেশেন্ট, তা সত্ত্বেও ১০ জুন থেকে শুট করার জন্য প্রস্তুত! আমি রাজ্য সরকারের নির্দেশ মেনে কাজে নামছি। ইন্ডাস্ট্রি তো শুধু আর্টিস্ট দিয়ে চলে না। সকলের কথাই তো ভাবতে হবে!”

Advertisement

আর্টিস্ট ফোরাম তার সদস্যদের শুটিংয়ে যোগদান করার পরামর্শ দিতে পারছে না বলে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। কিন্তু, ভরত আর্টিস্ট ফোরামের সদস্য হয়েও তাদের সঙ্গে এক সুরে কথা বলতে পারছেন না। বললেন, “দেখুন, জুনিয়র আর্টিস্ট যাঁদের দিন আনি দিন খাই জীবন, তাঁদের সংখ্যা এই ইন্ডাস্ট্রিতে প্রায় আট হাজার। অজস্র টেক্সট মেসেজ পাচ্ছিলাম, যেখানে ইন্ডাস্ট্রির মানুষ তাঁর বৃদ্ধ বাবা-মায়ের ছবি দিয়ে বলেছে তাঁরা কাজ শুরু করতে চান। তাঁরা আর পারছেন না! তাঁদের কথা ভাবব না?”

আর্টিস্ট ফোরাম শুট করার সিদ্ধান্ত থেকে আচমকা পিছিয়ে আসায় চ্যানলগুলিও বেজায় চটেছে ইন্ডাস্ট্রির উপর। ভরত জোর গলায় জানালেন, চ্যানেল যদি ১৫ তারিখ হাতে নতুন এপিসোড না পায়, তবে তারা ডাব করা ধারাবাহিক সম্প্রচারের দিকেই হাঁটবে! তিনি আশঙ্কা করছেন, এর ফলে ইন্ডাস্ট্রি ভয়ানক ক্ষতির মুখে পড়বে।

Advertisement

আরও পড়ুন: দিনভর টানাপড়েন, আজ থেকে শুরু হচ্ছে না বাংলা ধারাবাহিকের শুটিং​

এ দিকে গত রাতের নির্দেশিকায় জীবন বিমার পাশাপাশি আগে আলোচিত আরও একাধিক বিষয় না মানার অভিযোগ এনেছিল আর্টিস্ট ফোরাম। সর্বশেষ নির্দেশিকায় ফোরামের পাখির চোখ শুধুই ইনস্যুরেন্স। যা না পেলে সংগঠন অভিনেতা-অভিনেত্রীদের কাজের নির্দেশ দিতে পারছে না।

এ কথা প্রকাশ্যে আসতেই উত্তেজিত হয়ে পড়েন প্রযোজক-অভিনেতা ভরত কল। তাঁর দাবি, “ চূড়ান্ত অবিশ্বাসের আবহ তৈরি হচ্ছে এতে। কাদের অবিশ্বাস করছে ফোরাম? শৈবাল বন্দ্যোপাধ্যায়, সুরিন্দর ফিলম, এসভিএফ, এদের? এরা কোনও দিন কোনও অভিনেতার টাকা মেরেছে? উল্টে কারও ইএমআই আটকে গেলে রাতারাতি সেটা ট্রান্সফার করে দিয়েছেন। পুরনো ঘটনা মনে রেখে প্রযোজকদের অবিশ্বাস করলে ফোরাম তা হলে নিজেরাই দায়িত্ব নিক।”

তিনি জানান, প্রযোজক, চ্যানেল কর্তৃপক্ষ টাকা পাঠিয়ে দিচ্ছেন তাঁদের অ্যাকাউন্টে। ফোরাম দাঁড়িয়ে থেকে কাগজপত্র তৈরি করান। কাজ না শুরু হলে সকলে মারা পড়বেন বলে ক্ষোভ উগরে দেন ভরত।

আরও পড়ুন: জাহ্নবী কপূরের আগামী ছবির মুক্তি শীঘ্রই​

ক্ষতির এই আশঙ্কার কথা জেনেও আর্টিস্ট ফোরাম শুটিং শুরুর নির্ধারিত দিনে এই সিদ্ধান্ত নিল কেন? “একটু সময় তো দিতে হবে। এত তাড়াতাড়ি বিমা করা যায় না। বিমার কাজ তো এগোচ্ছিলই। এর মধ্যে শুট শুরু করাটা খুব প্রয়োজনীয় ছিল। আরে, আমি এক জন ক্যানসার পেশেন্ট হিসেবে কাজে নামতে চাইছি। আমার কি কম ঝুঁকি? তা হলে অন্যরা কাগজ তৈরি হয়নি বলে কেন কাজ না করে ইন্ডাস্ট্রির ক্ষতি করছেন?” ক্ষোভ ভরতের গলায়। তিনি চাইছেন, আজ না হয় কাল যদি শুটিং শুরু করা যায় তা হলেও একটা পথ পাওয়া যাবে, যা ইন্ডাস্ট্রির সকলের জন্যই মঙ্গল। প্রায় ১১৫টি ছবিতে অভিনয় করেছেন ভরত। ধারাবাহিকে চল্লিশ হাজার এপিসোডে কাজ করার অভিজ্ঞতা তাঁর। ইন্ডাস্ট্রির অত্যন্ত পরিচিত মুখের কথা কি শুনবে আর্টিস্ট ফোরাম?

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement