অনির্বাণ ভট্টাচার্য।
মুখ খুললেন অনির্বাণ ভট্টাচার্য। সংযত ভঙ্গিতে, গুছিয়ে প্রতিবাদ জানালেন বিয়ের ট্রোলিংয়ের।১ ডিসেম্বর রাত ১২টা ৭ মিনিটে প্রথমে তাঁর হোয়াটসঅ্যাপ স্ট্যাটাসে ভর্ৎসনা করলেন নেটাগরিকদের আচরণের। তার পরেই আনন্দবাজার ডিজিটালের সামনে।
অবশেষে মুখ খুললেন? হোয়াটসঅ্যাপ স্টেটাসে প্রতিবাদ?
অনির্বাণ: যেটা বিশ্বাস করি সেটাই লিখেছি, ভার্চুয়ালটা ওরা দখল করে নিয়েছে। রাস্তাটা পারেনি। পারবেও না। আমার বিশ্বাস, মাটি, খিদে, ফসল, রক্ত মাংসের মানুষ এগুলো দখল করতে পারবে না। অতো সস্তা এখনও নয় দুনিয়া।
২৬ নভেম্বরের পর কেউ আপনার মুখ থেকে টুঁ শব্দ শোনেনি। সবাই ট্রোলিং, আর এই চূড়ান্ত অসভ্যতার একটা জবাব আশা করেছিল...
অনির্বাণ: (হালকা হেসে) মুখ খুলেছি তো! বন্ধুদের কাছে। কথাবার্তা, আলোচনার সময়।
ফেসবুক পেজে এই প্রতিবাদ কেউ দেখবে না?
অনির্বাণ: না। কারণ, ওটা খেলার জায়গা হয়ে গিয়েছে। স্টেটাসের প্রথম কথাটাই তাই লিখেছি, ভার্চুয়ালটা ওরা দখল করে নিয়েছে। সামাজিক মাধ্যম আর প্রতিবাদের জায়গায় নেই। ওখানে বলে, করে আর কিচ্ছু হবে না। (একটু থেমে) ওটা এখন ট্রোল, মিমের রাজত্ব। ইদানিং একটা বিষয় খেয়াল করে দেখলাম, অতিমারিতে মানুষের দুঃখ-দুর্দশা যেমন বেড়েছে তেমনি হাতে সময় অঢেল। কম মূল্যে ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন সবাই। বহুক্ষণ নেটপাড়ায় বিচরণ করছেন, সময় কাটাচ্ছেন। ফলে, জীবনের নেতিবাচক দিকের ছায়া এখন প্রচণ্ড সেখানে। লোকে মার খাচ্ছে। পাল্টা মার দেওয়ার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে সামাজিক পাতাকে। ওখানে আর সৎ প্রতিবাদ বা বিপ্লব সম্ভব নয়।
হোয়াটসঅ্যাপও সামাজিক মাধ্যম। সেখানে প্রতিবাদ জানালেন যে?
অনির্বাণ: হোয়াটসঅ্যাপ স্টেটাস আমার চোখে তথাকথিত সামাজিক মাধ্যম নয়। যাঁদের নম্বর আমার ফোনে রাখা আছে একমাত্র তাঁরাই আমার স্টেটাস দেখতে পাবেন। সবাই পাবেন না। তাই আমার ভাষায় এটি সীমিত সামাজিক মাধ্যম। এই মাধ্যমের সঙ্গে এখনও ‘ব্যক্তিগত’ শব্দটা ব্যবহার করা যায়। বাকি সামাজিক মাধ্যমের থেকে একটু হলেও ‘পার্সোনাল’। তাই এখানে মনের কথা জানাই বা জানাতে ভালবাসি।
হোয়াটসঅ্যাপ স্টেটাসে অনির্বাণের মনের কথা
কখনও মনে হয়েছে, সাফল্যের চূড়া ছুঁয়েছেন বলেই এত উন্মাদনা, আশাভঙ্গ এবং ট্রোলিং? হাতেগোনা অভিনেতাদের সঙ্গে এটা ঘটে...
অনির্বাণ: হতে পারে। সাফল্যের শিখর ছুঁয়েছে কিনা জানি না। সে ভাবে কোনও দিন ভাবিওনি। হ্যাঁ, বলতে পারেন আমার কাজ দর্শকদের ভাল লাগে। তাঁরা ভালবাসেন। আশীর্বাদের পাশাপাশি চর্চাও করেন আমায় নিয়ে। সেই অর্থে কিছুটা হলেও হয়ত আমি সফল। ঠিক আছে। টোন্ট-টিটকিরির সঙ্গে অনেক শুভেচ্ছাও পেয়েছি। তার পরেও বলব, সব অনুভূতিই এ ভাবে ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে-বেছে আলাদা করা যায় না। অনেকেই হয়তো বলবেন, সোশ্যালে অনেক ভাল কিছুও হয়। ভাল খবর, ভাল প্রতিবাদ। হয় তো। কিন্তু আমার ইদানিংয়ের অবর্জাভেশন বলছে, নষ্ট হয়ে গিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ার ধার। ভুল কাজে ব্যবহৃত হতে হতে। এটা সম্পূর্ণই আমার মত। একে ‘ফিল্টার’ করতে পারব না।
মধুরিমা কী বলছেন? বিয়ের দিন সংবাদমাধ্যমকে সামলাতে হয়েছিল...
অনির্বাণ: মধুরিমার কথা মধুরিমাই ভাল বলতে পারবে। ওর সঙ্গে কথা বলাটাই মনে হয় ভাল। আমি আমারটুকু বলতে পারব।
আরও পড়ুন: ‘রাম সেতু’ ছবি নিয়ে বৈঠকে অক্ষয় কুমার ও যোগী আদিত্যনাথ, এ বার কি রাজনীতিতে পা?
হনিমুনে কোথায় যাচ্ছেন?
অনির্বাণ: (হেসে ফেলে) ঠিক নেই। আগে কাজ। একটা একটা করে সব মেটাচ্ছি। ভাল ভাবে বিয়ে মিটল। এবার টানা অনেক দিন কাজ করব। এ বছর কোথাও যাওয়ার প্রশ্ন নেই। আগামী বছর সব সামলে কোথায় যেতে পারি দেখি। ভারতের মধ্যেই কোথাও যাব। এখনও নিজের দেশই ভাল করে দেখে উঠতে পারলাম না!
রুদ্রনীলের পরিচালনায় কাজ করবেন আগামী দিনে?
অনির্বাণ: (মজার ভঙ্গিতে) পড়েছি খবরটা। আমাদের ইনস্টাগ্রাম, দু’জনের ছবি, কী সব রোদ-টোদ নিয়ে লেখা হয়েছে। কেশব নাগের জটিল অঙ্কের মতো লাগছিল।
আরও পড়ুন: ২০২০-তে ইন্টারনেটে সবচেয়ে বেশি খোঁজ চলেছে কাদের নাম?
মঞ্চাভিনয়ে অনির্বাণ-মধুরিমা জুটি কবে দেখা যাবে?
অনির্বাণ: আমরা এক নাট্য দলের সঙ্গে যুক্ত। এক সঙ্গেই কাজ করি, করবও। বিয়ে হয়েছে বলেই নেপথ্যে বা প্রকাশ্যে সেই কাজ এক সঙ্গে করতে হবে, এমনটা নয় কিন্তু। মধুরিমাকে আমি দীর্ঘদিন চিনি। বিয়ে করেছি মানে সবার মতো আমরাও এ বার এক সঙ্গে থাকব। বিয়ের পরে আগামী দিনগুলো বাকিরা যেমন কাটান সেভাবেই কাটাব, ব্যস এটুকুই।