আমিরদের ঠিক পাশের বাড়ির মেয়ে ছিলেন রীনা দত্ত। ছোট থেকেই তাই একসঙ্গে বড় হয়ে ওঠা তাঁদের।
এক সময়ে একে অপরের প্রেমে মশগুল ছিলেন তাঁরা। পরিবারের বিপক্ষে গিয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে বিয়েও করেন।
তা সত্ত্বেও দীর্ঘ ১৬ বছরের দাম্পত্য জীবনে ইতি টানেন দু’জনে। ৫০ কোটি টাকার বিনিময়ে বিবাহবিচ্ছেদে রাজি হন দু’জন। সে সময় বলিউডের অন্যতম দামি ডিভোর্স ছিল এটিই।
১৯৮৬ সালে ১৮ এপ্রিল রীনার সঙ্গে আমিরের বিয়ে হয়। ২০০২ সালে তাঁদের বিচ্ছেদ হয়। তবে তাঁদের বিচ্ছেদ নিয়ে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা সামনে আসেনি। বরং আমির আজও প্রাক্তন স্ত্রী রীনাকে যথেষ্ট সম্মান দিয়েই কথা বলেন। রীনার কথাবার্তাতেও আমিরের প্রতি সম্মান প্রকাশ পায়।
তা হলে কেন তাঁদের বিচ্ছেদ হল? বিয়ের সময় রীনা ছাত্রী ছিলেন। মূলত ভিন্ ধর্মের হওয়ার জন্যই প্রথমে তাঁদের বিয়েতে আপত্তি জানায় পরিবার। পরে অবশ্য দুই পরিবারই তাঁদের মেনে নিয়েছিল।
জুনেইদ এবং ইরা নামে দুই সন্তানের জন্ম দেন রীনা। আমিরও কেরিয়ারে উন্নতি করতে শুরু করেন। প্রীতি জিন্টার সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক নিয়ে চর্চা শুরু হয়। রীনার কানে সেই খবর পৌঁছলে সম্পর্কে কিছু জটিলতা তৈরি হয়।
তবে জটিলতা বাড়তে দেননি কেউই। আমির এবং রীনা দু’জনেই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে সমাধান করে ফেলেছিলেন।
পরে ‘লগন’ ফিল্মে শ্যুটিংয়ের সময় কিরণ রাওয়ের সঙ্গে পরিচয় হয় আমিরের। কিরণ ছিলেন ওই ফিল্মের সহকারী পরিচালক। কিরণের সঙ্গে আমিরের খুব ভাল বন্ধুত্ব হয়ে গিয়েছিল।
তত দিনে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে রীনার সঙ্গে তাঁর দাম্পত্য কলহ লেগেই থাকত। তার উপর কিরণের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতাও মানতে পারতেন না রীনা। শেষে ২০০২ সালে দু’জনে ডিভোর্সের সিদ্ধান্ত নেন।
ডিভোর্সের পর কিরণের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা আরও বাড়তে থাকে এবং ২০০৫ সালে তাঁকে বিয়ে করেন আমির।
তবে প্রাক্তন স্ত্রী রীনাকে আজও তাঁর জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ বলে মনে করেন তিনি। কিরণের সঙ্গেও রীনার সম্পর্কের সমীকরণ একেবারে আলাদা।
এক টক শো-এ আমির বলেছিলেন, “ওঁদের দু’জনের মধ্যে অত্যন্ত বন্ধুত্বপূর্ণ একটা সম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু এতে আমার কোনও ভূমিকা নেই। ভাল সম্পর্কের রসায়নটা ওঁরা দু’জনই এক মাত্র জানেন।”
১৬ বছরের বিবাহিত জীবনে ছেদ টানাটা দু’জনের কাছেই অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ছিল, সেটা বহু বারই বলেছেন তাঁরা। পরিস্থিতি ঠিক রাখতে দু’জনেই চেষ্টা করেছেন। তবে পরস্পরের প্রতি ভালবাসা বা শ্রদ্ধা কোনওটাই হারাননি তাঁরা, এমনটাও জানান ‘দঙ্গল’ অভিনেতা।
আমির খান আর রীনার মধ্যেও আজও বন্ধুত্ব অটুট রয়েছে। আমিরের কোনও ছবির প্রিমিয়ার মিস করেন না রীনা।