‘ময়ূরাক্ষী’তে প্রসেনজিত্।
তিনি বৃদ্ধ হলেন…। তবুও বনস্পতির ছায়ার কমতি নেই। তিনি সুশোভন।
সুশোভনের ছেলে আর্যনীল থাকেন বিদেশে। বাবার অসুস্থতা, একাকিত্ব এ সবের মাঝে এসে পড়ে মধ্যবয়সী আর্যনীল। তার পর?
তার পর বাবা-ছেলের সম্পর্কের মধ্যে গল্পের জাল বুনে চলেন রং-বেরংয়ের চরিত্ররা। ধরা দেয় সম্পর্কের ফ্রেম।
ঠিক এ ভাবেই ‘ময়ূরাক্ষী’র গল্প বলেছেন পরিচালক অতনু ঘোষ। ২৯ ডিসেম্বর মুক্তি পেল এই ছবি। মুখ্য ভূমিকায় রয়েছেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় এবং প্রসেনজিত্ চট্টোপাধ্যায়। নন্দনে ছবির প্রিমিয়ারে উপস্থিত ছিলেন টলি মহলের প্রথম সারির তারকারা।
ছবির একটি দৃশ্যে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়।
বাড়ির ছেলের মতোই দাঁড়িয়ে থেকে অতিথি আপ্যায়ন করছিলেন প্রসেনজিত্। তার ফাঁকেই শেয়ার করলেন জার্নির কথা। ‘‘এই গল্পটা আসলে আমাদের সকলের। আর্যনীল আমাদের মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে। আমার ছেলেও এসেছে আজ। প্রথমে ভেবেছিল ছবিটা দেখতে গিয়ে বোর হবে। তার পর ওর মায়ের সঙ্গে আলোচনা করে চলে এসেছে। বাবা-মা বাড়িতে থাকলে তাঁদের নিয়ে দেখতে আসুন। না হলে কিন্তু মিস করবেন।’’
আরও পড়ুন, মল্লিকা, পারমিতা, সাহানাকে চেনেন?
৮২-র তরুণ, হ্যাঁ তরুণই বটে, যখন লিফটে করে ওপরে এলেন, সমস্ত ভিড়টা চলে গেল তাঁর দিকেই। হবে নাই বা কেন? তিনি যে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। এই ছবির সুশোভন। লাইমলাইটের কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে বললেন, ‘‘আমি কাজটায় খুব আনন্দ পেয়েছি। আপনাদের ভাল লাগবে বলেই মনে হচ্ছে।’’
‘ময়ূরাক্ষী’তে সৌমিত্র এবং সুদীপ্তা।
কেরিয়ারে অনেক ছবির ভিড়েও সুদীপ্তা চক্রবর্তীর কাছে ‘ময়ূরাক্ষী’ অন্যতম ল্যান্ডমার্ক। তিনি এই ছবিতে প্রফেশনাল কেয়ার গিভার। প্রিমিয়ারের টেনশনের মধ্যেই বললেন, ‘‘অতনুদার কাজের সঙ্গে ঋতুদার মিল পাই। আমার খুব পছন্দের পরিচালক। আর এই ছবির সুশোভন যেমন, আমার বাবা বিপ্লবকেতন চক্রবর্তী ঠিক এই স্টেজটা পেরিয়ে এসেছেন ক’দিন আগে। এখন আরও খারাপ অবস্থা। ফলে খুব কাছ থেকে দেখেছি। তাই এই ছবির জার্নিটা আমার আজীবন মনে থাকবে।’’
আরও পড়ুন, ‘ময়ূরাক্ষী’র বাঁকে সম্পর্কের গল্প...
প্রিমিয়ারে পরিচালক অতনু ঘোষের ভূমিকা ছিল অনেকটা কনেকর্তার মতো। এক জায়গায় দাঁড়িয়ে কথা বলা প্রায় অসম্ভব ছিল তাঁর কাছে। তবুও সিনেমা চলাকালীন এত আয়োজনের ক্যাপ্টেন একফাঁকে জানালেন, বাবা-ছেলের সম্পর্ক নিয়ে ছবি তো খুব একটা হয়নি। সেই ভাবনা থেকেই এ ছবির অঙ্কুরোদ্গম।
প্রিমিয়ারে দেব এবং প্রসেনজিত্। ছবি: টুইটারের সৌজন্যে।
হঠাত্ই চেঁচিয়ে উঠলেন হলের বাইরে থাকা দর্শক। ভিতরেই কেউ চিত্কার করলেন, ‘আরে দেব এসেছে।’ মুহূর্তেই লিফটের সামনে ভিড়। এ দিকে দেব উঠে এলেন সিঁড়ি দিয়ে! হইহই করা ভিড়টা তখন ছুটল সিঁড়ির মুখে। দেবকে হাত ধরে হলের ভিতর নিয়ে গেলেন প্রসেনজিত্। সমালোচনা, দূরত্ব, মনোমালিন্য— এ সব শব্দগুলো তখন টলিউডের দুই নায়কের ডিকশনারি থেকে ভ্যানিশ!
ছবিটা দেখে আপ্লুত অন্য দুই পরিচালক কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় এবং সুমন ঘোষ। ভাল লাগার কথা ভাগ করে নিলেন মমতাশঙ্কর, অরুণিমা ঘোষরাও।
বলিউড-টলিউড-টেলিউডের হিট খবর জানতে চান? সাপ্তাহিক বিনোদন সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন
ঠিক তখনই আবার হইহই। হলটা কী? ‘দেব দেব…’ চিত্কারটাই প্রশ্নের উত্তর দিয়ে দিল। ‘‘এই ছবিটা খুব ভাল করবে বলেই মনে হয় আমার। সৌমিত্র স্যার আর বুম্বাদা তো অসাধারণ জুটি। যাঁরা আমাজন অভিযান দেখে ফেলেছেন এই ছবিটা দেখুন। আর যাঁরা দেখেননি তাঁরা দু’টো ছবিই দেখবেন’’ মুচকি হেসে বেরিয়ে গেলেন দেব।
‘ময়ূরাক্ষী’র বাঁকে বয়ে চলল সম্পর্কের গল্পেরা…।
ভিডিও: মৃণালকান্তি হালদার।