অনির্বাণ ভট্টাচার্য। ছবি: ফেসবুক।
গত কয়েক মাসে আলোচনার কেন্দ্রে তাঁর নীরবতা। কেমন আছেন অনির্বাণ ভট্টাচার্য? সম্প্রতি এক বিকালে আনন্দবাজার অনলাইনের প্রশ্নের উত্তর দিলেন তিনি। সাক্ষাৎকারে তাঁর আরোপিত শর্তকে সম্মান জানিয়েছি আমরা। কাজ, ব্যক্তিগত জীবন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়েই ধরা দিলেন অভিনেতা।
প্রশ্ন: প্রথমেই একটা বিষয় স্পষ্ট করে নেওয়া যাক। আরজি কর প্রসঙ্গে কোনও প্রশ্ন না করলে আপনি কি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবেন?
অনির্বাণ: হ্যাঁ। ধন্যবাদ।
প্রশ্ন: কেমন আছেন আপনি?
অনির্বাণ: ভাল আছি। কাজকর্ম চলছে। ‘তালমার রোমিয়ো জুলিয়েট’ মুক্তি পাবে। অনেক নতুন ছেলেমেয়ে নিয়ে প্রায় দু’বছরের পরিশ্রমে কাজটা আমরা শেষ করেছি। খুব ভাল লাগছে।
প্রশ্ন: সে দিন একটা ভিডিয়োয় দেখলাম, আপনার চারপাশে নিরাপত্তারক্ষী!
অনির্বাণ: রাস্তায় নামলে কখনও কখনও আমাদের সঙ্গে নিরাপত্তারক্ষী দেওয়া হয়। আমার নিজের কোনও প্রয়োজন পড়ে না। আমি খুবই সাধারণ ভাবে মানুষের মধ্যে যাই। আমি যখন ভিড়ের মধ্যে নেমেও যাই, তখন আমার সঙ্গে নিরাপত্তারক্ষীরা থাকেন। কিন্তু আমার না হলেও চলবে।
প্রশ্ন: গত কয়েক মাসে শহর কলকাতা বহু ঘটনার সাক্ষী থেকেছে। এখন এই শহরটাকে দেখে আপনার কী মনে হচ্ছে?
অনির্বাণ: যা ঘটেছে, ঘটছে বা ঘটবে, সবটাই এই শহরের সত্য। আন্দোলন, উৎসব সবের কেন্দ্রেই রয়েছেন মানুষ। ব্যক্তিগত স্তরে আমি একটা বৈচিত্রময় সমাজের পক্ষপাতী এবং সেই বৈচিত্রকে সকলে স্বীকার করে নেবেন। কিন্তু দুঃখের বিষয়, সব কিছুকেই আজকে সাদা-কালোয় দেখা হয়। তাই অন্য কোনও রং নজরে পড়ে না। সেখান থেকে বেরোতে গেলে সব কিছুর মধ্যেই সন্দেহ এবং নিরাপত্তাহীনতা কাজ করে!
প্রশ্ন: তা হলে কলকাতা শহর?
অনির্বাণ: কলকাতা এখনও খুবই বৈচিত্রময়। তাই শহরটা এখনও ভীষণ ভাবে জীবন্ত, মৃত নয়। যে কোনও পুঁজিবাদী সমাজে যা যা সমস্যা থাকে, তা এই শহরেও রয়েছে। কিন্তু, তা সত্ত্বেও এই শহরটা খুবই হ্যাপেনিং।
ছবি: আনন্দবাজার আর্কাইভ।
প্রশ্ন: শুটিং বা কাজের ব্যস্ততা না থাকলে আপনার সারা দিন কী ভাবে কাটে?
অনির্বাণ: বাড়িতেও কাজই করি। সিনেমা দেখি। ল্যাদ খেতে খেতে ইউটিউবে গান শুনি। আর বেশির ভাগ সময়েই নতুন কাজের পরিকল্পনা করি। অতিমারির পর থেকে আমি একটু কাজপাগল হয়ে উঠেছি। হাত খালি তো বসে দুটো গান লিখে ফেললাম। সে দিন ধ্রুব রাঠির একটা ভিডিয়োয় দেখছিলাম, কিছু না করাটাও একটা কাজ।
প্রশ্ন: কিন্তু চারপাশে কী ঘটছে, সে সম্পর্কে আপনি তো সচেতন।
অনির্বাণ: অবশ্যই। যতটা জানার, আমি তার খোঁজ রাখি।
প্রশ্ন: ধরা যাক, এক মনে বাড়িতে কাজে মগ্ন। তার মাঝেই খবর পেলেন, আপনাকে নিয়ে ট্রোলিং শুরু হয়েছে। কী ভাবে সামাল দেন?
অনির্বাণ: আমি যখন একটা গান লিখি, একটা সিনেমা তৈরির কথা ভাবি, গান শুনি বা একটা শিল্পকর্মের দিকে তাকিয়ে থাকি, তখন সত্যিই কোনও ব্যঘাত ঘটায় না। কিন্তু উটপাখি হয়ে কোনও লাভ নেই। সমাজের এই অবস্থা। তার মধ্যেই আমাদের জেগে থাকতে হবে। এর থেকে পালানোর কোনও পথ নেই।
প্রশ্ন: ‘অথৈ’-এর ফলাফল নিয়ে আপনি কি খুশি?
অনির্বাণ: বক্স অফিস নিয়ে একদম নয়। একজন নির্মাতা হিসেবে কোনও দিন ভাবিনি ছবিটা দেখতে মানুষের ঢল নামবে। তবে আর একটু বেশি সংখ্যক মানুষ ছবিটা দেখবেন বলে আশা করেছিলাম।
প্রশ্ন: ‘মন্দার’ দিয়ে শুরু। এখন ‘তালমার রোমিয়ো জুলিয়েট’। পর পর আপনার অনেকগুলো কাজে শেক্সপিয়র ফিরে ফিরে এলেন। এ বার কি শেক্সপিয়র থেকে একটু বেরোবেন?
অনির্বাণ: বেরোব… বেরোব। শেষ দুটো কাজের পরিচালক আমি নই। কাকতালীয় ভাবে আমি সেখানে জড়িয়ে রয়েছি। তার জন্য আমার কিন্তু কোনও খেদ নেই। ‘রয়্যাল শেক্সপিয়র’ কোম্পানি তো পর পর শেক্সপিয়রের নাটকই করে। পর পর শেক্সপিয়র করায় কোনও অন্যায় বা অসুবিধা আছে কি?
প্রশ্ন: ‘তালমার...’-এর ট্রেলার দেখার পর অনেকেই রাজকুমার রাও অভিনীত ‘গানস অ্যান্ড গুলাব’-এর পরিবেশনার মিল খুঁজে পেয়েছেন।
অনির্বাণ: এটা একটা প্রবৃত্তি। নতুন কিছু এলে তার সঙ্গে আগে দেখা কোনও জিনিসকে মিলিয়ে নেওয়ার প্রচেষ্টা। একটি ছেলে আর মেয়ে নৌকায় হাত ধরে থাকলে তার সঙ্গে একটু ‘টাইটানিক’ বা একজন বাবার কাঁধে ছেলেকে দেখলে তার সঙ্গে ‘অপুর সংসার’কে মিলিয়ে দেখা হয়। তাতে কোনও সমস্যা নেই। আর আমি নিজে খুব একটা মৌলিকত্বে বিশ্বাস করি না। কারণ, সিনেমায় এখন আর মৌলিক কিছু করা সম্ভব নয়। ‘গানস অ্যান্ড গুলাব’ আশির দশকের গল্প। আমাদের সিরিজ়ের গল্পটা সমকালীন।
প্রশ্ন: আপনি নিজে একজন পরিচালক। সেখানে সৃজনশীল পরিচালনার দায়িত্ব কতটা?
অনির্বাণ: পরিশ্রমের দিক থেকে একই। আমার পরিচালনায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আমার। এখানে পরিচালকের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অর্পণ (সিরিজ়ের পরিচালক অর্পণ গড়াই) এবং দুর্বার (সিরিজ়ের চিত্রনাট্যকার দুর্বার শর্মা) খুব ভাল কাজ করেছে।
‘তালমার রোমিয়ো জুলিয়েট’ ওয়েব সিরিজ়ের একটি দৃশ্যে অনির্বাণ ভট্টাচার্য। ছবি: সংগৃহীত।
প্রশ্ন: ‘বল্লভপুরের রূপকথা’ মুক্তির পর বলেছিলেন, দু’বছর পরিচালনায় ফিরবেন না। সময় শেষ হয়ে এল। পরিচালনা নিয়ে কিছু ভাবছেন?
অনির্বাণ: ভাবনা অনেক কিছুই রয়েছে। এমনকি, কাজ ছাড়ার কথাও ভেবেছিলাম। সকালে ভবলাম, একটা ছবি তৈরি করব। বিকালে ভাবলাম, আর অভিনয়ই করব না। মানুষের ভাবনা তো এ রকমই (হাসি)।
প্রশ্ন: সে কী! অনির্বাণ ভট্টাচার্য যদি ইন্ডাস্ট্রিকে বিদায় জানান, তা হলে তিনি কী করবেন?
অনির্বাণ: কী করব, সেটা আমাকেও ভাবতে হবে।
প্রশ্ন: কখনও অভিনয় ছেড়ে দেওয়ার ভাবনা মাথায় এলে তার সঙ্গে লড়াই করেন কী ভাবে?
অনির্বাণ: অভিনয় আমার কাছে শুধু উপার্জনের মাধ্যম নয়, অভিনয় আমার ভালবাসা। তাই এই ধরনের ভাবনা এলে, তার সঙ্গে লড়াই করেই আবার অভিনয়ে ফিরি। আর আপনি পরিচালনার কথা জিজ্ঞাসা করছিলেন। তাই বলতে পারি, নাটকের বাইরেই হয়তো কিছু করব। কিন্তু তার আগে আমি বাংলায় বাংলা ভাষার ভবিষ্যৎ বোঝার চেষ্টা করছি। আমার মনে হচ্ছে, বিষয়টা খুবই সংবেদনশীল একটা জায়গায় রয়েছে!
ছবি: আনন্দবাজার আর্কাইভ।
প্রশ্ন: সম্প্রতি বাংলাকে ধ্রুপদী ভাষার স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। তার পরেও বাংলা ভাষা নিয়ে আশঙ্কা?
অনির্বাণ: ও সবের কোনও মানে নেই! ওগুলো গণমাধ্যমের জন্য। যে ভাষাকে সম্মানিত করা হয়েছে, সেই ভাষায় নব্বই শতাংশ মানুষ কথা বলে না।
প্রশ্ন: সমাজজীবনে বাংলা ভাষার ব্যবহারিক প্রয়োগের কথা বলতে চাইছেন কি?
অনির্বাণ: একদম। সামাজিক ভাষা, যে ভাষায় কাকদ্বীপ কথা বলে, শান্তিপুর কথা বলে। জলপাইগুড়ি তথা উত্তরবঙ্গের ভাষায় যেমন ‘তালমার রোমিয়ো জুলিয়েট’ তৈরি হয়েছে। আমাদের মেদিনীপুরে এক রকম বাংলা ভাষা। আবার বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে বাংলার পার্থক্য রয়েছে। এই সবটা নিয়েই তো বাংলা ভাষা। সেখানে হঠাৎ একটা ধ্রুপদী ভাষা বলে আলাদা করে স্বীকৃতি দেওয়া... ঠিক আছে...
প্রশ্ন: বাংলা ভাষার ভবিষ্যৎ...
অনির্বাণ: (থামিয়ে দিয়ে) আমি বাংলা ভাষার বিনোদনের ভবিষ্যৎ নিয়েও চিন্তিত। বিশেষ করে সিনেমার কথা বলতে চাই।
প্রশ্ন: বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতেও তো সাম্প্রতিক অতীতে নানা সমস্যার কথা উঠে এসেছে।
অনির্বাণ: তার সঙ্গে কিন্তু আমি যে সমস্যার কথা বলছি, তার কোনও যোগ নেই। ইন্ডাস্ট্রিতে যে অন্যায় বা অনাচার হয়েছে বা হচ্ছে, সকলে মিলেই তা নির্মূল করার প্রয়াস হচ্ছে। ঝট করে হবে না। সময় লাগবে।
প্রশ্ন: বাংলার পর একটু হিন্দিতে ফিরি। ‘মিসেস চ্যাটার্জি ভার্সাস নরওয়ে’র পর অনেকেই মনে করেছিলেন, আপনি বলিউডে বেশি কাজ করবেন। প্রস্তাব আসেনি?
অনির্বাণ: প্রচুর আসেনি। কিছু এসেছে। কখনও চরিত্র পছন্দ হয়নি। কিছু ক্ষেত্রে আমার ইচ্ছাও হয়নি।
প্রশ্ন: কেন?
অনির্বাণ: মুম্বইয়ে কাজ করার ক্ষেত্রে আমার কোনও ছুতমার্গ নেই। কিন্তু, ওখানে একটু পিআর করতে হয়। ওখানে থাকতে হয়, পার্টিতে যেতে হয়, অডিশন দিতে হয়। এর মধ্যে কোনও দোষ নেই, এটা ওই ইন্ডাস্ট্রির কাঠামো। কিন্তু, আমি এগুলো একদম করি না। একটা ছবিতে স্ট্যান্ডার্ড পারফরম্যান্স দিয়েছি মানেই যে পর পর কাজ পাব, তা হয় না। মুম্বইয়ে কয়েকটি কাজের কথা হয়ে রয়েছে। আগামী বছর শুটিং।
প্রশ্ন: পিআরটা করেন না কেন?
অনির্বাণ: কারণ, বাংলা ছবি, ওয়েব সিরিজ় এবং গান করতে গিয়ে আমার সমস্ত সময় বেরিয়ে যায়।
প্রশ্ন: গত কয়েক বছরে আপনি বার বার বলেছেন, আপনার কাজের বাইরে কোনও বিষয়ে মন্তব্য করবেন না।
অনির্বাণ: আমি সমাজ সংস্কারক নই। তার জন্য হোলটাইমার প্রয়োজন। ধরা যাক, মেদিনীপুরে ৫০টা বাচ্চাকে নিয়ে একটা স্কুল চালু করলাম। তা হলে আমি সারা জীবন সেটাই করব। তাদেরকে বড় করে সমাজে ছেড়ে দেব। সে ক্ষেত্রে না করব শুটিং, না করব গান, না করব কোনও প্রচার। শুধু ওটাই করব।
প্রশ্ন: কিন্তু এখন বিশিষ্টেরা তো একই সঙ্গে কাজ এবং সমাজমাধ্যম, সব কিছু সামাল দিচ্ছেন। তারকাদের তো মাল্টিটাস্কিং করতে হচ্ছে।
অনির্বাণ: অর্থনৈতিক যোগসূত্রকে অস্বীকার করি কী করে। ফেসবুক প্রথমে এসেছিল বন্ধুবান্ধবে মধ্যে যোগাযোগের উদ্দেশ্যে। এখন সমাজমাধ্যম অনেকের কাছেই উপার্জনের মাধ্যম। তার মধ্যে কোনও দোষ নেই। আমি বলতে চাইছি, এর কিন্তু একটা ফলাফল রয়েছে। ৩০ সেকেন্ড থেকে ১ মিনিটের রিল। মানুষ দেখছেন। খুব ভাল কথা। কিন্তু দেখতে দেখতে একটা সময় আসবে, যখন কিন্তু আর তাঁকে আড়াই ঘণ্টার ছবি দেখানো যাবে না। সুতরাং এটা মেনে নিতে হবে, যে মানুষ যে অভ্যাসের মধ্যে ছিল, তার কারণেই কিন্তু শিল্পের অন্যান্য মাধ্যমগুলো উবে গেল। সিনেমা যে দুঃস্থ হয়ে পড়ছে, এটা ভেবে আমার দুঃখ হয়।
প্রশ্ন: এটা থেকে বেরিয়ে আসার কোনও উপায়?
অনির্বাণ: আমি জানি না। আমি সামান্য একজন অভিনেতা। আমি তো কিছু করতে পারব না। আমাদের দেশে সিনেমাকে মূলত বিনোদনের মাধ্যম হিসেবে দেখা হয়। এখন সেই বিনোদনেরই অজস্র মাধ্যম। পকেট থেকে শুধু মোবাইলটা বার করার অপেক্ষা। সিনেমা তো হেরে গিয়েছে! ভাবলে খুব কষ্ট হয়।
প্রশ্ন: শিল্পীর মধ্যে প্রতিবাদী সত্তা থাকে। আপনারও রয়েছে। কিন্তু কোনও শিল্পী যখন সিদ্ধান্ত নেন, তিনি সামাজিক কোনও ইস্যুতে আর প্রতিক্রিয়া জানাবেন না, তার ফলে কি তাঁর জনপ্রিয়তা কমে?
অনির্বাণ: কমতেই পারে।
ছবি: আনন্দবাজার আর্কাইভ।
প্রশ্ন: আপনার নীরবতাকে অনুরাগীরা হয়তো আপনার প্রতি তাঁদের ভালবাসার জায়গা থেকেই প্রশ্নে বিদ্ধ করছেন।
অনির্বাণ: একদম ঠিক কথা। আমি সেই ধারণাকে ভাঙছি। আমি আমার ভাষায় বোঝানোর চেষ্টা করছি যে, আর কেন আমি এর মধ্যে থাকব না! এটা আমার এবং আমার অনুরাগীদের জন্য একটা পরিবর্তন।
প্রশ্ন: শিল্পী হিসেবে এই পদ্ধতিটা কি আপনার কাছে খুব কঠিন?
অনির্বাণ: আমার কাছে এই পরিবর্তনটা খুব স্পষ্ট।
প্রশ্ন: তার ফলে আপনার মধ্যে অনুরাগী হারানোর ভয় কাজ করে না?
অনির্বাণ: কী করব! কমলে কমবে। আমি তো সকলকে বোঝাতে পারব না। আবার বলছি, সব সিদ্ধান্তের একটা ফলাফল আছে। আগামী দিনে যদি কোনও প্রযোজক আমাকে ডেকে বলেন যে, “অনির্বাণ তোর মারাত্মক নেগেটিভ ইমেজ। তোর কেরিয়ার এগোনো কিন্তু মুশকিল আছে।” ঠিক আছে। মেনে নেব। অন্য কিছু করব।
প্রশ্ন: আবার আপনি অভিনয় ছাড়ার কথায় ফিরলেন। সত্যি বলুন তো, অভিনয় ছেড়ে দিলে ঠিক কী করবেন?
অনির্বাণ: (একটু ভেবে) আপাতত একটা চায়ের দোকানের কথা ভেবেছিলাম। সেখানে শিঙাড়া, কচুরি পাওয়া যাবে। তার মানে কিন্তু এটা নয় যে, চা দোকানিদের আমি অসম্মান করছি। আসলে দেখেছি, খাবারের দোকান খুব ভাল চলে।
প্রশ্ন: কলকাতা শহরে নচিকেতার নামে চায়ের দোকান আছে। স্বয়ং অনির্বাণ ভট্টাচার্য যদি চায়ের দোকান শুরু করেন, অনুরাগীদের তো ঢল নামবে!
অনির্বাণ: ভালই তো। আনন্দবাজার অনলাইন তখন চায়ের দোকানেই হয়তো আমার সাক্ষাৎকার নিতে হাজির হবে। সেটা পড়ে বা দেখে আরও অনেকে আমার দোকানে আসবেন (হাসি)।
প্রশ্ন: নাটক নিয়ে কিছু ভাবছেন?
অনির্বাণ: এই মুহূর্তে কিছু ভাবছি না। সময় হলে নিশ্চয়ই আবার নাটক করব।
প্রশ্ন: পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ের পরিচালনায় নতুন ওয়েব সিরিজ়ের (‘ভোগ’) শুটিং আগামী মাসে। আরও কোনও কাজ?
অনির্বাণ: একটা ছবি করব। ভাবনাচিন্তা চলছে। ঠিক সময়ে জানাব। নতুন একটা ওয়েব সিরিজ়ে সৃজনশীল পরিচালক হিসেবে থাকছি।
প্রশ্ন: পরিচালক রাহুল মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে আপনার ছবিটা নিয়ে কোনও অগ্রগতি?
অনির্বাণ: আমি এখনও কিছু জানি না।