আমির খান এবং কিরণ রাও।
বিবাহবিচ্ছেদের কথা ঘোষণা করে খবরের শিরোনামে আমির খান এবং কিরণ রাও। নেটমাধ্যমেও এই মুহূর্তে ‘ট্রেন্ডিং’ দুই নাম। তবে এই প্রথম নয়, ১৫ বছরের দাম্পত্যের দীর্ঘ সফরে একাধিক বার চর্চায় উঠে এসেছে বলিউডের এই বর্ণময় জুটি। এক ঝলকে দেখে নেওয়া যাক সে রকমই কিছু উদাহরণ —
‘কফি উইথ কর্ণ’-এ র্যাপিড-ফায়ার পর্ব
কর্ণ জোহরের চ্যাট শোয়ের বহুল জনপ্রিয় অংশ এই ‘র্যাপিড-ফায়ার’ পর্ব। একে বলিউডের যাবতীয় বিতর্কের আঁতুড়ঘর বললেও ক্ষতি হবে না। এই পর্বে সঞ্চালক কর্ণ অতিথিদের নানা আজগুবি এবং বিতর্কিত প্রশ্ন করে থাকেন । অতিথিরাও ‘ফায়ার’ অর্থাৎ আগুনের মতো ঝলসে দেওয়া উত্তর দিতে পারলে পুরস্কারস্বরূপ বহুমূল্য ‘হ্যাম্পার’ পেয়ে যান।
এক বার সেই পর্বেই কিরণের কাছে কর্ণের প্রশ্ন ছিল, "ঘুম থেকে উঠে যদি দেখেন আপনি রণবীর কপূর হয়ে গিয়েছেন, কী করবেন?" কর্ণের এই প্রশ্নের উত্তরে বুদ্ধিদীপ্ত কণ্ঠে পাল্টা প্রশ্ন রেখেছিলেন কিরণ, “রণবীর হয়ে ঘুম থেকে উঠলে, নাকি ওর সঙ্গে উঠলে?” স্ত্রীর এই মন্তব্যে স্তম্ভিত হয়েছিলেন স্বয়ং ‘মিস্টার পারফেকশনিস্ট’। কথা বলতে পারেননি তিনি। শুধু ভ্রূ উঁচিয়ে তাকিয়েছিলেন কিরণের দিকে। অতীতের সেই পর্বের ভিডিয়ো আজও ঘুরপাক করে নেটমাধ্যমে। তাতে লাইক এবং মন্তব্যেও সংখ্যাও দেখার মতো।
অসহিষ্ণুতা নিয়ে আমিরের বক্তব্য
২০১৫ সালে অসহিষ্ণুতা নিয়ে মুখ খুলেছিলেন আমির। পরিবারের সুরক্ষা নিয়ে গভীর চিন্তায় ছিলেন অভিনেতা। তিনি জানিয়েছিলেন, দেশের ‘ক্রমবর্ধমান অসহিষ্ণূতা’ দেখে তিনি ‘শঙ্কিত’। স্ত্রী কিরণ সেই সময় পরিবার-সহ ভারত ছেড়ে অন্য কোথাও চলে যাওয়ার কথা ভেবেছিলেন বলেও দাবি করেন আমির।
‘কফি উইথ কর্ণ’-তে আমির এবং কিরণ
কিরণের জন্মদিনে প্রকাশ্যে চুম্বন
আগাগোড়াই স্পষ্ট কথার মানুষ আমির এবং কিরণ। নিজেদের সম্পর্ক নিয়েও রাখঢাক করেননি কখনও। এমনকি ‘কফি উইথ কর্ণ’-তে আমির নির্দ্বিধায় বলেছিলেন, মাঝেমধ্যেই স্নানের সময় স্ত্রী তাঁর সঙ্গী হন। কিরণের জন্মদিনে প্রকাশ্যে তাঁর ঠোঁটে চুম্বন করেছিলেন আমির। এমনি সময় আলোকবৃত্ত থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখেন তিনি। তবে স্ত্রীর প্রতি ভালবাসা ব্যক্ত করতে পাপারাৎজিদেরও তোয়াক্কা করেননি অভিনেতা।
আমির এবং কিরণের যৌথ উদ্যোগে পানি ফাউন্ডেশন
‘লগান’, ‘ধোবি ঘাট’, ‘দঙ্গল’-এর মতো ছবিতে এক সঙ্গে কাজ করেছেন তাঁরা। আমির-কিরণের যুগলবন্দি একাধিক বার সাফল্য এনেছে বক্স অফিসে। বাণিজ্যিক কার্যকলাপের পাশাপাশি সামাজিক উন্নতির স্বার্থেও এগিয়ে এসেছেন তাঁরা। মহারাষ্ট্রের কৃষকদের জন্য এবং খরায় ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন অঞ্চলকে সাহায্য করতে ‘পানি ফাউন্ডেশন’ তৈরি করেন আমির এবং কিরণ।
শনিবার একটি বিবৃতি জারি করে বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত প্রকাশ্যে এনেছেন দু’জন। জানিয়েছেন, বিচ্ছেদ হলেও ছেলে আজাদের সব দায়িত্ব পালন করবেন তাঁরা। ব্যক্তিজীবনের এই সিদ্ধান্তের প্রভাব পড়বে না পেশাগত দিকেও। তাঁদের কথায়, ‘আমরা একসঙ্গে ছবি করব। আমাদের পানি ফাউন্ডেশনের কাজ এবং আরও অন্যান্য যে কাজগুলো আমরা করতে ভালবাসি, সেই সব কিছুই একসঙ্গে করব।’ অর্থাৎ দাম্পত্যের সুতো ছিঁড়লেও, বন্ধুত্ব যে এখনও অটুট, সে কথাই আরও স্পষ্ট করে দিলেন আমির এবং কিরণ।