শ্রীকান্ত আচার্য, মনোময় ভট্টাচার্য, মিকা সিংহ এবং আকৃতি কক্কর। ফাইল চিত্র।
জনপ্রিয় রিয়্যালিটি শো সারেগামাপা-র চার বিচারক শ্রীকান্ত আচার্য, মনোময় ভট্টাচার্য (সপরিবার), মিকা সিংহ এবং আকৃতি কক্কর করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর নভেম্বরে শোয়ের শ্যুটিং ঘিরে ডামাডোল শুরু হয়েছে। নভেম্বরের মাঝামাঝি শোয়ের পরবর্তী শ্যুটিং শিডিউলে করোনা-বিধি কঠোর ভাবে মেনে চলা এবং কঠোর সতর্কতা নেওয়ার জন্য একাধিক বিচারক সংশ্লিষ্ট চ্যানেলকে আনুষ্ঠানিক ভাবে আবেদন করতে চলেছেন বলেই খবর। সেই আবেদনপত্রে বলা হবে, শ্যুটিং ফ্লোর এবং আশপাশের এলাকায় যেন কড়াহাতে স্বাস্থ্যবিধি বলবৎ করা হয়।
এখনও পর্যন্ত সংক্রমণ থেকে ছাড় পেয়েছেন শোয়ের সঞ্চালক আবির চট্টোপাধ্যায় এবং বিচারক জয় সরকার। সূত্রের খবর, আবির ৩ দিন অন্তর নিজের উদ্যোগে করোনা পরীক্ষা করাচ্ছেন। দুর্গাপুজোর সময় প্রমোশন বা মণ্ডপে যাওয়ার পরিকল্পনাও বাতিল করে দিয়েছেন এই অভিনেতা। অন্যদিকে, সুরকার জয় বাড়িতে নিরাপদেই আছেন। বুধবার তিনি জানালেন, নিয়ম করে রোজ শরীরচর্চা করছেন। তা ছাড়াও সর্বত্রই কঠোর ভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছেন। অপর দুই বিচারক রাঘব চট্টোপাধ্যায় এবং ইমন চক্রবর্তীর জ্বর ভাব ছাড়া তেমনকিছু আপাতত নেই। রাঘব তাঁর বড় মেয়ে আনন্দীর জন্মদিন পালন করেছেন বাড়িতেই। পাশাপাশি, ইমন নিজের ফ্ল্যাটে পরিজনদের নিয়ে নীলাঞ্জনের সঙ্গে এনগেজমেন্ট সেরে ফেলেছেন।
এ দিন শ্রীকান্ত বলেন, কোনও উপসর্গ না-থাকলেও তাঁর কয়েকদিন ধরেই একটু কাহিল লাগছিল। চিকিৎসকের সঙ্গে আলোচনা করে তিনি কোভিড পরীক্ষা করানোর সিদ্ধান্ত নেন। ১৬ তারিখ তাঁর রিপোর্ট পজিটিভ আসে। আপাতত তিনি বাড়িতেই পুরোপুরি আইসোলেশনে আছেন। এখনও কোনও উপসর্গ নেই। মনোময় জানান, ৯ দিন আগে আচমকাই প্রবল জ্বর আসে তাঁর। সঙ্গে শরীরে ব্যথা। চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সপরিবারে কোভিড টেস্ট করাতে রিপোর্ট পজিটিভ আসে।
সারেগামাপা শো-এর বিচারকরা।
মনোময় বলেন, ‘‘জ্বর ছাড়লেও দুর্বলতা ছাড়েনি। আপাতত হোম কোয়রান্টিনে আছি। বিশ্রাম আর পুষ্টিকর খাবার খাচ্ছি।” হোম কোয়রান্টিন শেষের পর সুস্থ বোধ করলেই ফের বিচারকের আসনে বসবেন বলে জানালেন মনোময়। তিনি কি বাড়তি নিরাপত্তার কথা বলবেন চ্যানেলকে? মনোময়ের জবাব, ‘‘পরিস্থিতি বুঝে বিষয়টি নিয়ে আলোচনার কথা ভাবব।”
আরও পড়ুন: বিনা দর্শনার্থীতেই পুজো হবে কোন কোন তারকার বাড়িতে?
বাকি দুই বিচারককে ফোনে না পাওয়া গেলেও টেলিপাড়া সূত্রে খবর, তাঁরাও রয়েছেন হোম কোয়রান্টিনে। তাঁদের শরীরেও মৃদু উপসর্গ দেখা দিয়েছিল। পরীক্ষা করানোয় রিপোর্ট পজিটিভ আসে। প্রসঙ্গত, মিকা এবং আকৃতি শোয়ের শ্যুটিংয়ের আগে কলকাতায় এসে বিধি মেনে ১৪ দিন ‘আইসোলেশনে’ ছিলেন।
কী ভাবে একটি রিয়্যালিটি শোয়ের চারজন বিচারকই করোনা আক্রান্ত হয়ে পড়লেন, সেই প্রশ্ন টেলিপাড়ায় ঘুরতে শুরু করেছে। আক্রান্তদের সে বিষয়ে আপাতত কোনও ধারনা নেই। তবে টেলিপাড়ার একাংশের বক্তব্য, ওই শোয়ের ফ্লোরে আরও কড়াকড়ি করা উচিত ছিল। আগামী শ্যুটিং শিডিউলে যেন সেটা করা হয়। সংশ্লিষ্ট চ্যানেলের পূর্বাঞ্চলীয় ক্লাস্টার হেড সম্রাট ঘোষ জানান, চার বিচারক করোনা আক্রান্ত বলে শুনেছেন তিনিও। সকলের দ্রুত সুস্থতা কামনার পাশাপাশিই আক্রান্ত বিচারকদের সবরকম সাহায্য দিতে প্রস্তুত চ্যানেল বলে জানিয়েছেন সম্রাট। তবে তাঁর দাবি, বাইরে থেকে আসা বিচারকদের থেকে করোনা ছড়ায়নি। তাঁর যুক্তি, যাঁরা বাইরে থেকে আসেন, তাঁদের টেস্টের রেজাল্ট নেগেটিভ এলে তবেই শ্যুটিংয়ের অনুমতি দেওয়া হয়।
আবীর চট্টোপাধ্যায়।
প্রসঙ্গত, এর আগে ‘কৃষ্ণকলি’র বিভান ঘোষ, নীল ভট্টাচার্যেরও করোনা হয়েছিল। এ বার রিয়্যালিটি শো-এর সেটেই সংক্রমণ! স্টুডিয়োপাড়া কি সত্যিই নিরাপদ নয়? মনোময়ের যুক্তি, ‘‘এক সঙ্গে বেশি লোক জড়ো হলেই সংক্রমণ ছড়াবে। শুধু স্টুডিয়ো নয়, পুজো প্যান্ডেলেও এই ঘটনা ঘটতে পারে। আমরা সবাই বিধি মানছি। সেটও নিয়মিত স্যানিটাইজড হচ্ছে। ফলে নিরাপত্তায় কোনও ফাঁক নেই।”
ছবি সৌজন্য জয় সরকার এবং জি বাংলা-র ফেসবুক থেকে