ফাইল ছবি
কপ্টারে ত্রুটি। নির্দিষ্ট সময়ের পর, ঘণ্টা দুয়েক হোটেলেই বসে রইলেন অমিত শাহ। শেষ পর্যন্ত যেতেও পারলেন না। হোটেল থেকে ভার্চুয়ালি ঝাড়গ্রামের সভায় ৫ মিনিটের সংক্ষিপ্ত ভাষণ সারলেন তিনি।
রবিবারের সংক্ষিপ্ত ভাষণেও ‘ভাইপো’ বা ‘দিদি’ শব্দগুলি একবারও উচ্চারণ করেননি অমিত শাহ। ভার্চুয়ালি হওয়ায় মাঠের চেনা ঝাঁঝও ছিল না তাঁর ভাষণে। তৃণমূল সরকারকে আক্রমণ করে তিনি বললেন, ‘‘১০ বছর ধরে পশ্চিমবঙ্গকে তৃণমূল সরকার পাতালের অন্ধকারে নিয়ে গিয়েছে। সব কিছুতে দুর্নীতি, তোলাবাজি। সব কিছুতে বেআইনি কার্যকলাপ। হিন্দু ও আদিবাদীদের উৎসবে পালনে বাধা দেওয়া হচ্ছে। মনে রাখবেন, এই সব কিছু দেখেছেন বাংলার মানুষ। এক সময় বাংলা সারা ভারতকে পথ দেখাত, পথ দেখাতেন সুভাষচন্দ্র বসুর মতো মানুষেরা, পথ দেখাত বন্দেমাতরম ধ্বনি। আজ সেই বাংলাতেই গুন্ডারাজ।’’
বিজেপি-র পক্ষ থেকে বার বারই অভিযোগ করা হয়, কেন্দ্রীয় সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পশ্চিমবঙ্গের মানুষ পাচ্ছেন না। বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে তৃণমূলের সরকার। সেই প্রসঙ্গ টেনে শাহ বলেন, ‘‘মোদী সরকার যে যোজনা তৈরি করেছে, তা আপনাদের হাতে পৌঁছয়নি। আমি ঝাড়গ্রামে উপস্থিত আদিবাসী ভাইদের বলব, বাংলায় এক নতুন সরকার তৈরির পরিকল্পনা নিয়ে আজ বা়ড়ি ফিরে যান আপনারা। যাতে আপনাদের হাতে উন্নয়নের সবটুকু এসে পৌঁছয়।’’
সোমবার সকাল ১১টা নাগাদ ঝাড়গ্রামের সার্কাস ময়দানে জনসভা শুরু করার কথা ছিল অমিত শাহ। কিন্তু সময় পেরিয়ে গেলেও হোটেল থেকে বেরোতে দেখা যায়নি তাঁকে। বেলা ১১ নাগাদ হোটেল থেকে বেরিয়ে বিজেপি-র পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় জানান, হেলিকপ্টারে যান্ত্রিক সমস্যার জন্য গোটা প্রক্রিয়া একটু পিছিয়ে গিয়েছে। ঠিক হলেই ঝাড়গ্রামের জন্য রওনা দেবেন শাহ।
কিন্তু বেলা গড়ালেও হোটেলের সামনে থেকে অমিত শাহের গাড়ি নড়তে দেখা যায়নি। মাঝে শোনা গিয়েছিল, যান্ত্রিক ত্রুটি সেরেছে, দ্রুত বেরোবেন শাহ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ঝাড়গ্রাম যাওয়ার কর্মসূচিই বাতিল করে দিলেন তিনি। সভা করলেন ভার্চুয়ালি।
ভার্চুয়াল সভা থেকে আদিবাসী মানুষদের জন্য রবিবার একাধিক প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন শাহ, বলেছেন, ‘‘আমরা ক্ষমতায় এলে রঘুনাথ মুর্মু আদিবাসী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তৈরি করা হবে কেন্দ্রীয় সরকারের ‘স্ট্যান্ড আপ ইন্ডিয়া’ প্রকল্পের মাধ্যমে হাজার হাজার আদিবাসীদের আত্মনির্ভর হিসাবে গড়ে তুলে পরিকল্পনা করবে বিজেপি।’’ ৭০ শতাংশের বেশি নম্বর পেয়ে যাঁরা উচ্চশিক্ষার পথে হাঁটছেন, আদিবাসী সমাজের সেই সব পড়ুয়াদের সাহায্য করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন অমিত।
যদিও অমিতের ভার্চুয়াল সভা নিয়ে কটাক্ষ করতে ছা়ড়েনি তৃণমূল। জানিয়েছেন, আসলে সভায় তেমন লোক হয়নি। তাই অপেক্ষা করেও শেষ পর্যন্ত ভার্চুয়ালি সভা করতে হয়েছে অমিত শাহকে।