রবিবার নন্দীগ্রামে শুভেন্দু। —নিজস্ব চিত্র।
কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আন্দোলনে লড়াই করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু সময়ের ফেরে এখন প্রতিদ্বন্দ্বী। তার প্রতিফলন দেখা গেল নন্দীগ্রাম দিবসেও। শহিদদের শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ঝাঁঝালো ভাষায় আক্রমণ করলেন শুভেন্দু অধিকারী। অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ আধিকারিক সত্যজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, যাঁর বিরুদ্ধে নন্দীগ্রাম আন্দোলনে গুলি চালানোর অভিযোগ, তাঁকে দলে শামিল করা নিয়ে মমতাকে একহাত নিলেন শুভেন্দু।
রবিবার নন্দীগ্রাম দিবসে সশরীরে গোকুলনগরে গিয়ে শহিদ বেদীতে শ্রদ্ধা জানান শুভেন্দু। সেখানে মমতার বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘গোকুলনগরে গুলি চালিয়েছিলেন যে সত্যজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, তাঁকে তৃণমূলে নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যে পুলিশ অফিসার অরুণ গুপ্ত এবং তন্ম রায়চৌধুরী নন্দীগ্রামে গুলি চালিয়েছিলেন, তৃণমূল সরকারের আমলে তাঁদের পদোন্নতি হয়েছে। ক্ষমা করবেন না। আমি শহিদ পরিবারের প্রতি দায়বদ্ধ। দলমত, সম্প্রদায় নির্বিশেষে নন্দীগ্রামের মানুষ আমার আত্মীয় স্বজন। আমি সকলের পাশে রয়েছি এবং থাকব।’’
নন্দীগ্রামে এ বার মুখোমুখি লড়াইয়ে নামতে চলেছেন মমতা এবং তাঁর এককালের ঘনিষ্ঠ শুভেন্দু। নব্য বিজেপি শুভেন্দু নন্দীগ্রামে পদ্ম ফোটাতে বদ্ধপরিকর। কিন্তু শুভেন্দুকে ঘিরে রবিবার সকাল থেকেই বিক্ষোভ দেখা গিয়েছে নন্দীগ্রামে। তাঁকে ‘বিশ্বাসঘাতক’ তকমা দিয়ে জায়গায় জায়গায় পোস্টারও দেখা যায়।
শহিদ বেদীতে শ্রদ্ধা জানিয়ে শুভেন্দু বক্তৃতা করার সময়ও অদূরে তাঁর বিরুদ্ধে স্লোগান শোনা যায়। তা নিয়ে শুভেন্দু বলেন, ‘‘গেটের সামনে চারটে লোক দিয়ে নোংরা কথা বলিয়ে শুভেন্দুকে রোখা যাবে না। এ বারে গণতান্ত্রিক পথে ভোট হবে। আপনারা নিজের ভোট নিজে দেবেন। আমি ব্যবস্থা ককরে দেব। আমি নিজেও এখন নন্দীগ্রামের ভোটার। আপনাদের পাশে থাকব।’’
এ দিকে, আহত অবস্থাতেই রবিবার ফের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে ফিরছেন তৃণমূল নেত্রী। সকালে নেটমাধ্যমে নন্দীগ্রামের শহিদদের শ্রদ্ধা জানান তিনি। জানান, নীলবাড়ির লড়াইয়ে নন্দীগ্রামের প্রার্থী হতে পেরে সম্মানিত বোধ করছেন। তার পরেই সত্যজিৎ প্রসঙ্গ টেনে তৃণমূলের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানালেন শুভেন্দু। তবে শুভেন্দু আনুষ্ঠানিক ভাবে পদ্ম শিবিরে যোগ দেওয়ার সপ্তাহ দুয়েক আগে সত্যজিতের হাতে জোড়াফুল পতাকা তুলে দেওয়া নিয়ে ইতিমধ্যেই একাধিক বার অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে তৃণমূলকে।