বন্ধে সুনসান রাস্তা। শুক্রবার শান্তিপুরে। নিজস্ব চিত্র।
নিহত দুই যুবক তাদের কর্মী দাবি করে এবং খুনের জন্য তৃণমূলকে দায়ী করে শুক্রবার শান্তিপুরে ১২ ঘণ্টার বন্ধ ডেকেছিল বিজেপি। ভোটের মুখে এই আকস্মিক বন্ধের ডাকে আংশিক সাড়া পড়েছে। তবে পুলিশ সূত্রের খবর, শুক্রবার রাত পর্যন্ত এই ঘটনায় কোনও রাজনৈতিক সংস্রবের কথা জানা যায়নি। নিহতদের পরিবার সূত্রেও ‘ব্যক্তিগত শত্রুতা’র দিকেই ইঙ্গিত করা হচ্ছে।
এ দিন শান্তিপুরে বেশির ভাগ দোকানপাট বন্ধ ছিল। স্থানীয় বিজেপি প্রার্থী জগন্নাথ সরকার আবার বন্ধ ডেকেও শান্তিপুর থেকে দলীয় কর্মীদের নিয়ে রানাঘাটে মনোনয়ন জমা দিতে গিয়েছিলেন। গিয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী অজয় দে-ও। নিহত দীপঙ্কর বিশ্বাসের স্ত্রী রীতা, ভাই গোবিন্দ বলেন, “আমরা রাজনীতির মধ্যে নেই। এই ঘটনায় রাজনীতির যোগও নেই। ব্যক্তিগত শত্রুতার কারণেই খুন বলে আমাদের মনে হচ্ছে।” তাঁরা বিজেপি সমর্থক বলে বৃহস্পতিবার জানিয়েছিলেন নিহত প্রতাপ বর্মণের বাবা প্রবোধ বর্মণ। তবে খুনের কারণ তাঁদের কাছেও স্পষ্ট নয়। এ দিনও তাঁরা ‘ব্যক্তিগত’ কিছু শত্রুতার কথা তুলেছেন।
দিন কয়েক আগেই নবদ্বীপে এক খুনের ঘটনায় একই ভাবে নিহতকে নিজেদের কর্মী বলে দাবি রাজনৈতিক খুনের তকমা দিতে চেয়েছিলেন জগন্নাথেরা। তদন্তে পরে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের কথা জানা গিয়েছে। শান্তিপুরের জোড়া খুনের ক্ষেত্রেও রাজনৈতিক অভিসন্ধি প্রমাণ করার চেষ্টায় বিজেপির মুখ পুড়ছে বলে দাবি অন্য দলগুলির। তৃণমূলের অজয় দে বলেন, “অরাজনৈতিক ঘটনাকে রাজনৈতিক রূপ দিয়ে নোংরামি করছে বিজেপি। এ-ও তাই।” শান্তিপুরের কংগ্রেস প্রার্থী, প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক ঋজু ঘোষাল বলেন, “যে কোনও মৃত্যুই দুর্ভাগ্যজনক। আরও দুর্ভাগ্যজনক মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি। তবে যে কোনও খুনে আইনশৃঙ্খলার অবনতির কথাই প্রমাণ হয়।” জগন্নাথের বক্তব্য, “নিহতেরা বিজেপির লোক। পরিবারের লোকের কথা শুনেই আমরা যা বলার বলেছি। আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটছে। তৃণমূল সরকার তা চাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে।” রানাঘাট পুলিশ জেলার সুপার ভিএসআর অনন্তনাগ বলেন, “সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। খুনের কারণ এখনও স্পষ্ট নয়।”