প্রতীকী ছবি।
তৃণমূল ও সংযুক্ত মোর্চার অন্যতম প্রধান শরিকদের তরফে প্রার্থী তালিকা ঘোষিত। কিন্তু ব্যতিক্রম রাজ্যে প্রধান বিরোধী দল বলে ‘চিহ্নিত’ বিজেপি। গেরুয়া শিবিরের তরফে ঘোষিত হয়েছে প্রথম দু-দফা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকা প্রার্থীদের নাম। কারা প্রার্থী হচ্ছেন তা নিয়ে নিরন্তর চর্চা চলছে। এই অবস্থায় কোন বিধানসভা আসন থেকে সম্ভাব্য প্রার্থী কে কে হতে পারে তা জানতে জেলা কমিটির শীর্ষ নেতাদের কলকাতার নির্বাচনী কার্যালয়ে ডেকে আসন পিছু চারটি করে নাম চাইল গেরুয়া শিবির। সেই তালিকায় রয়েছে বীরভূমও। দল সূত্রে খবর, সেই বৈঠক হয়েছে বুধবার। কিন্তু তাতে উৎকণ্ঠা আরও বেড়েছে নেতাকর্মীদের।
বীরভূম বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, শীর্ষ নেতৃত্বের ডাকে বীরভূম থেকে কলকাতায় গিয়েছিলেন বীরভূমের পর্যবেক্ষক বিবেক শঙ্কর, বিজেপি জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা ও তিন সাধারণ সম্পাদকের মতো শীর্ষ নেতারা। তাঁদের কাছে বিধানসভা ভিত্তিক চার জন করে প্রার্থীদের নামের তালিকা চাওয়া হয়। বৈঠকে যাঁরা উপস্থিত ছিলেন তাঁদের কেউ কেউ বীরভূমের বিভিন্ন আসন থেকে নিজেরাই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চেয়েছেন বলে খবর। সেই দাবি, বা তাঁদের দেওয়া তালিকা থেকে কাউকে বাছা হবে নাকি দলের শীর্ষ নেতৃত্বই অন্য কাউকে বাছেন সেটা নিয়ে উৎকণ্ঠা বেড়েছে দলের অন্দরে।
বৈঠকে উপস্থিত এক নেতার কথায়, ‘‘দলের কোনও দায়িত্ব পালন করলে তিনি প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করতে পারবেন না এমনটা কোথাও বলা নেই। বা যে চারটি করে নাম আমাদের তরফে দেওয়া হয়েছে সেখান থেকে প্রার্থী বাছা হবে সেটাও বলা যাবে না।’’ ওই নেতার সংযোজন, ‘‘বৃহত্তর পরিবারের সদস্যাদের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়ার মধ্যে কোথাও একচটা সম্মান লুকিয়ে থাকে। বাকি সিদ্ধান্ত যা নেওয়ার দলের শীর্ষ নেতৃত্বই নেবেন।’’
তবে তাতে প্রার্থী নিয়ে চর্চা থামছে না। বিজেপির নেতা কর্মীদের একাংশ মনে করাচ্ছেন, ২৯ এপ্রিল, শেষ দফায় ভোট হবে বীরভূমে। হাতে এখনও সময় আছে। কিন্তু অন্য দল যেখানে প্রার্থী ঘোষণা করে দিয়েছে, সেখানে বিজেপির কে কোথায় প্রার্থী হচ্ছেন সেটা দ্রুত প্রকাশ্যে এলেই ভাল বলে দাবি নেতাকর্মীদের। এক কর্মীর কথায়, ‘‘বেশি জল মাপতে গিয়ে ধৈর্য হারিয়ে যাচ্ছে, সময়ও কমছে।’’
বিজেপি সূত্রে খবর, আরও একটি বিষয়ে আলোচনা চলছে। সেটা হল, কে কে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী হতে চান, সম্পূর্ণ বায়োডেটা-সহ তাঁর আবেদনপত্র মুরলীধর সেন লেনে, রাজ্য বিজেপি দফতরের ড্রপ বক্সে দিয়ে আসতে পারেন এমন আহ্বান জানিয়েছিল রাজ্য বিজেপি। জেলা নেতৃত্ব জানাচ্ছে জেলার ১১টি বিধানসভা আসনে প্রার্থী হতে চেয়ে শতাধিক আবেদন জমা পড়েছে। কারও কারও মতে সংখ্যাটা কয়েকশো। সেই তালিকায় যেমন দলের নেতা-কর্মীরা রয়েছেন, তেমনই বিজেপির সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কযুক্ত নন তেমন শিক্ষক, আইনজীবী, ব্যবসায়ী থেকে গৃহকর্ত্রী সকলেই আছেন। সেই আবেদনকারীদের মধ্যে থেকেই কাউকে বাছা হবে, নাকি জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষেই প্রার্থী ঘোষিত হবে সেটাই দেখার।
বিজেপির রাজ্য কমিটির এক সদস্য বলছেন, ‘‘কোনও একটি মানদণ্ড বিচার করে নয়, সবদিক খতিয়ে দেখেই দলের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ্যে আনা হবে। প্রার্থী বাছার ক্ষেত্রে দলের তরফে ও একাধিক সংস্থাকে দিয়ে করানো সমীক্ষাও বিবেচনায় থাকবে।’’