প্রতীকী ছবি।
দলের জেলা শীর্ষ নেতৃত্বের একাংশের আশঙ্কা ছিলই। সেই আশঙ্কাই সত্যি হল। প্রার্থী ঘোষণার পর নির্বাচনী রণকৌশল ঠিক করতে তৃণমূলের প্রথম জেলা কমিটির বৈঠকে অনুপস্থিত থাকলেন আলিপুরদুয়ারের বিভিন্ন এলাকার এক ঝাঁক নেতা। দলের অন্দরমহলের খবর, বৈঠকে ডাকার পরেও তৃণমূল পরিচালিত জেলা পরিষদের সভাধিপতি, সহ-সভাধিপতি সহ কয়েক জন সদস্য অনুপস্থিত থাকায় নতুন গুঞ্জন শুরু হয়েছে।। যদিও তৃণমূলের জেলা শীর্ষ নেতৃত্বের সাফাই, অসুস্থতা বা বাইরে থাকার জন্যই বৈঠকে কয়েক জন অনুপস্থিত ছিলেন।
গত শুক্রবার দলের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে তৃণমূল। কিন্তু তার আগে থেকেই সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম নিয়ে দলের অন্দরে ক্ষোভ ছড়াতে শুরু করে। প্রার্থীতালিকা ঘোষণার পর সেই ক্ষোভ কোথাও কোথাও কার্যত ‘বিক্ষোভ’ হয়। অভিযোগ, প্রার্থী বাছাই নিয়ে কোন্দলের জেরে জেলার বিভিন্ন বিধানসভা
এলাকায় বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর নেতা-কর্মীদের একটা বড় অংশ এখনও নিষ্ক্রিয় হয়ে বসে রয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে বুধবার আলিপুরদুয়ার শহরে দলের জেলা কমিটির বৈঠকে কারা অনুপস্থিত থাকেন, তা নিয়ে নজর ছিল দলের প্রায় সবারই। দেখা যায়, দলের প্রাক্তন সভাপতি তথা জেলা পরিষদের মেন্টর মোহন শর্মা, সভাধিপতি শীলা দাস সরকার, সহ-সভাধিপতি তথা দলের আলিপুরদুয়ার ১ ব্লকের সভাপতি মনোরঞ্জন দে-সহ অনেকেই বৈঠকে অনুপস্থিত রয়েছেন। এর মধ্যে আলিপুরদুয়ার আসনে প্রার্থী হওয়ার অন্যতম দাবিদার ছিলেন মনোরঞ্জন। কুমারগ্রাম ব্লকের সভাপতি ধীরেশ রায়-সহ ব্লকের প্রথম সারির প্রায় কোনও নেতাই এ দিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না।
স্বাভাবিক ভাবেই যা নিয়ে বৈঠকেও প্রশ্ন ওঠে। তৃণমূল সূত্রের খবর, দলের এক জেলা নেতা প্রার্থী বাছাই নিয়ে বিক্ষুব্ধ নেতাদের সঙ্গে অবিলম্বে আলোচনায় বসে মিটমাট করে নেওয়ার প্রস্তাব দেন। যদিও তৃণমূলের জেলা সভাপতি মৃদুল গোস্বামীর দাবি, “অসুস্থতার জন্যই কেউ কেউ বৈঠকে উপস্থিত হতে পারেননি। তবে জেলা পরিষদের সব সদস্যকে বৈঠকে ডাকা হয়নি।” মোহন অবশ্য মঙ্গলবারই জানিয়েছিলেন, স্ত্রীর অসুস্থতার জন্য তিনি শিলিগুড়ি যাচ্ছেন। মনোরঞ্জন জানান, পারিবারিক কাজে ব্যস্ত থাকায় বৈঠকে যোগ দিতে পারেননি। মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি সভাধিপতির সঙ্গে। কুমারগ্রামের ধীরেশ বলেন, “নির্বাচন নিয়ে এ দিন ব্লকেই আগে থেকে একটি বৈঠক ডাকা ছিল। তাই জেলার বৈঠকে যেতে পারিনি।”
তৃণমূল সূত্রের খবর, বেশ কিছু বিষয় নিয়ে এ দিনের বৈঠকে উত্তাপও ছড়ায়। যদিও দলের জেলা শীর্ষ নেতারা তা মানেননি। তৃণমূলের জেলা নেতারা জানিয়েছেন, এদিনের বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রত্যেক বিধানসভায় দলের পর্যবেক্ষকরা এখন থেকে স্থায়ী ভাবে সেই বিধানসভা এলাকায় থাকবেন।