পায়েল সরকার
তারকারা রাজনীতিতে যোগ দিলেই কথা শুরু হয়ে যায়! অনেকেই বলেন, কাজ নেই বলে হয়তো রোজগারের তাগিদে তারকাদের রাজনীতিতে আসা। আর অভিনেত্রীরা আসা মানেই দলের ‘জৌলুস’ বেড়ে যাওয়া। বিষয়টা একেবারেই সে রকম নয়। আমার বাবা রাজনীতিতে সক্রিয় না থাকলেও একজন দক্ষ রাজনীতিবিদ। ছোটবেলা থেকে আমাদের পরিবারে রাজনীতি নিয়ে প্রচুর আলোচনা হত। সেখান থেকেই আমার রাজনীতির প্রতি আগ্রহ। কিন্তু সরাসরি রাজনীতিতে এসে বুঝেছিলাম, বিষয়টা কতটা কঠিন। আপাতদৃষ্টিতে যেটা খুব সহজ মনে হয়, সেটা যে আদৌ সহজ নয়, তা মাঠে নেমে কাজ না করলে বোঝা মুশকিল। নির্বাচনে হারজিতের ক্ষেত্রে তারকার নিজস্ব পরিচিতি মাত্র ১ শতাংশ কাজ করে। বাকি ৯৯ শতাংশ নিজেকে খেটে তৈরি করতে হয়। দেশবিদেশের নানা জায়গায় প্রখর রোদে শ্যুট করার অভিজ্ঞতা আছে। কিন্তু শ্যুটিংয়ে রোদে পোড়া আর সাধারণ মানুষের দুঃখ-দুর্দশার কথা শুনে তাদের ভরসা হয়ে ওঠার মধ্যে বিস্তর ফারাক।
আমার নাম বিজেপি-র প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করার পর অনেকেই জানতে চেয়েছিলেন, মানুষের ভাল করতে রাজনীতিতে কেন আসতে হবে। আমি মনে করি, নিজের সাধ্যের বাইরে গিয়ে আমাকে কিছু করতে হলে রাজনীতির সাহায্য নিতেই করতে হবে। একটা উদাহরণ দিই— আমি মাসে ৫০ জনকে খাওয়াই। এর বেশি আমি পারব না। সেই কারণেই রাজনীতিতে আসা। যাতে ওই সংখ্যাটা আরও বাড়ে।
মোদীজির বক্তব্য আমাকে মুগ্ধ করেছিল। নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে বুঝেছিলাম, পশ্চিমবঙ্গে গত ১০ বছর মেয়েরা ভয়ে ভয়ে থেকেছে। একজন নারী হিসেবে সেই সমস্যার সমাধান দেখতে চেয়েছিলাম। আমার গাড়িতে যখন হামলা হয়েছিল, তখন কিন্তু একটুও ভয় পাইনি। বরং মনে হয়েছিল সাধারণ মানুষের সঙ্গে এমন হলে তাঁরা কী ভাবে প্রতিকার পাবেন, সে পথটা আমিই দেখাই। তাই সরাসরি থানায় অভিযোগ করেছিলাম। অপরাধীরা ধরাও পড়েছিল। বেহালায় বরাবরই জলের সমস্যা। নিজে প্রচারে গিয়ে দেখেছিলাম রাস্তা বেহাল। তার জন্য যানজট হচ্ছে। এই জায়গাগুলোর প্রতি বিশেষ নজর দেওয়া উচিত ছিল। জীবনের সব ‘প্রথম’ই কিছু না কিছু শেখায়। রাজনীতিও ব্যতিক্রম নয়। ২০২১-এর নির্বাচনের মাধ্যমে জীবনের যে অধ্যায় শুরু হয়েছিল, তা এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই কাজ।