—ফাইল চিত্র।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শহর ছাড়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই রাজপথে নামছেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার আন্তর্জাতিক নারী দিবস। শুক্রবার তৃণমূলের প্রার্থিতালিকা প্রকাশের দিনই তিনি জানিয়েছিলেন ৮ মার্চ নারী দিবস উপলক্ষে রাস্তায় হাঁটবেন। পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী কলেজ স্ট্রিট থেকে ডোরিনা ক্রসিং পর্যন্ত মিছিল করলেন তিনি। প্রতি বছরই এই দিন মিছিল করেন তৃণমূল নেত্রী। তবে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভোটের আগে এই মিছিল যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।
রাজ্যে নারীরা সুরক্ষিত নন, তৃণমূলের আমলে রাজ্যে নারীদের উপর অত্যাচার বেড়েছে— নারী সুরক্ষা নিয়ে বার বারই বিজেপি-র তোপের মুখে পড়তে হয়েছে শাসক দলকে। রবিবার ব্রিগেডের মঞ্চ থেকেও নারী সুরক্ষা নিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব। ঘটনাচক্রে ব্রিগেড সমাবেশের পর দিনই নারী দিবস। তাই এই পালনের মধ্য দিয়ে মমতা গেরুয়া শিবিরকে পাল্টা বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করতে পারেন বলে মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল। এটাও উল্লেখযোগ্য যে, এ বারের নির্বাচনে প্রার্থিতালিকায় ৫০ শতাংশ মহিলাকে রেখেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো।
রবিবার ব্রিগেড সমাবেশ থেকে মমতা এবং তৃণমূলের উদ্দেশে গেরুয়া শিবির থেকে একের পর এক ধেয়ে গিয়েছে অভিযোগের তির। মোদীও তাঁকে নানা অভিযোগ এবং কটাক্ষের সুর বিদ্ধ করেছেন। তৃণমূলের ‘খেলা শেষ’ হবে বলে শ্লেষমিশ্রিত সুরে আক্রমণ করেছেন। এ বার ‘আসল পরিবর্তন’ হবে বাংলায়, এমন কথাও শোনা গিয়েছে মোদীর মুখে। ব্রিগেডে যখন তৃণমূলের বিরুদ্ধে ঝড় উঠছিল, সে সময় শিলিগুড়িতে পেট্রোপণ্য, জ্বালানি এবং রান্নার গ্যাসের দামবৃদ্ধি নিয়ে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলছিলেন মমতা। কলকাতা থেকে শিলিগুড়ি কয়েকশো কিলোমিটার দূরত্ব, কিন্তু আক্রমণের ঝাঁঝে দুই শহরের সেই দূরত্ব যেন এক লহমায় কমিয়ে দিয়েছিল।
প্রথম দফার ভোটের আগে ১৩ মার্চ থেকে জেলা সফর শুরু করবেন মমতা। অন্য দিকে, ১২ মার্চ থেকে মিঠুন চক্রবর্তীও রাজ্যে প্রচার শুরু করবেন বলে শোনা যাচ্ছে। রবিবারই ব্রিগেডের মঞ্চে গেরুয়া শিবিরে যোগ দিয়েছেন তিনি। যোগ দিয়েই তিনি হুঙ্কার ছুড়েছেন, ‘আমি বেলেবোড়াও নই, ঢোরাও নই। আমি জাতগোখরো। এক ছোবলেই ছবি।’ অর্থাৎ ব্রিগেডের মঞ্চ থেকেই তিনি যে রাজ্যের শাসক দলের বিরুদ্ধে কোমর বেঁধে নামছেন সেই বার্তাই দিয়ে দিয়েছেন। তাই ‘ফাটাকেষ্ট’র নির্বাচনী প্রচার নিয়েও চরম কৌতুহল তৈরি হয়েছে আমজনতা থেকে রাজনৈতিক মহলে। তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, নন্দীগ্রামে প্রচারে যাবেন? উত্তরে তিনি জানিয়েছিলেন, শুভেন্দু ডাকলেই তিনি সেখানে যাবেন। ফলে নন্দীগ্রাম থেকেই তাঁর রাজনৈতিক প্রচারের ইনিংস শুরু হচ্ছে কি না তা নিয়েও বাড়ছে জল্পনা। আরও তাৎপর্যপূর্ণ এই যে, এখানে প্রার্থী হয়েছেন মমতা। ফলে নন্দীগ্রাম থেকেই তাঁর ‘ছোট বোন’-এর বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলবেন কিনা সে দিকেই নজর গোটা রাজনৈতিক শিবিরের।