জুন মালিয়া
সবাই ভূমিপুত্রদের কথা বলেন। আমি মেদিনীপুরের ভূমিকন্যা। মেদিনীপুরে জুন মালিয়া পরিচিত মুখ। আমি জানতাম, আমার ধারাবাহিক ওখানকার মানুষ দেখেন। নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে দেখেছিলাম মানুষের মুখে হাসির ঝলক। তাঁরা ‘আর্যর মা’ বা ‘চারুর শাশুড়ি’-কে দেখতে পাচ্ছিলেন। হাত মেলাচ্ছিলেন। দিদির ডাকে ঝাঁপিয়ে পড়ে ভোটযুদ্ধে সামিল হয়েছিলাম। জীবনে প্রথমবার। তবে মাঠে নেমে কাজ করার অভিজ্ঞতা আগেও ছিল। আমি তা নিয়ে ঢাক পেটাইনি। শিশুকল্যাণ দপ্তরের সদস্য হয়ে মানুষের কাছে পৌঁছেছি। শিশুদের অবস্থাও দেখেছি। জেতার খবর পাওয়ার পর আমার এই কথাগুলো বারবার মনে হচ্ছে।
তবে এ বারের যুদ্ধটা অন্যরকম ছিল। আমার হাতের ওপর অনেক অনেক হাত এসে পড়েছে। মহিলারা অনুরোধ করেছেন, আমায় একই সঙ্গে অভিনয় এবং রাজনীতিতে দেখতে চান। কোনও একটায় নয়। ওঁদের সেই ইতিবাচক মনোভাব আমায় ছুঁয়ে গিয়েছিল। আমার বল-ভরসাও বাড়িয়েছিল।
প্রচারের জন্য খুব অল্প সময় পেয়েছিলাম। মাত্র ১৫ দিন। তার মধ্যেই ১০০ শতাংশ দেওয়ার চেষ্টা করেছিলাম। শাসকদলের সদস্য, সমর্থক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ সারাক্ষণ আমার পাশে থেকেছেন। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। শহর, শহরতলি সকলের কাছ থেকে অফুরন্ত ভালবাসা পেয়েছি। মাটি, ঘাম, ঝাঁঝালো রোদ, চারিদিকে মানুষ ঘেরা ওই ১৫ দিনের আমি শুধু লড়াই করেছি। আত্মবিশ্বাস বেড়ে গিয়েছে।
‘দিদি’ মেদিনীপুরের জনসভায় এসে কথা দিয়েছিলেন, জিতে ফিরলে মেদিনীপুরের দিকে আলাদা নজর থাকবে তাঁর। শিক্ষা, শিল্প, স্বাস্থ্য, কৃষি— সব দিক থেকেই আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে এলাকা। জিন্দলদের ৪০০ একর জমি পড়ে রয়েছে। তার বন্দোবস্ত হবে। আমার নিজের ইচ্ছে মেদিনীপুরের পর্যটন শিল্পের উন্নতি ঘটানো। ওখানকার জঙ্গলমহলে প্রকৃতি ভীষণ সুন্দর। পর্যটকেরা আসার সুযোগ পেলে খুশিই হবেন। ভোকেশনাল ট্রেনিং সেন্টারও বাড়াতে চাই। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, সব চিকিৎসার সুবিধে থাকবে এমন হাসপাতালের সংখ্যা বাড়াবেন। জনসাধারণকে পাশে পেলে ‘দিদি’র স্বপ্নই সত্যি করব।