যোগদান: কলকাতার হেস্টিংসে রাজ্য বিজেপির িনর্বাচনী কার্যালয়ে পতাকা নিচ্ছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদা। নিজস্ব চিত্র।
টিকিট না পেয়ে শেষ অবধি বিজেপিতে-ই যোগ দিলেন তপন বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূলের দু’বারের বিধায়ক ও মন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদা। বুধবার কলকাতায় বিজেপির সদর দফতরে দিলীপ ঘোষের উপস্থিতিতে গেরুয়া পতাকা তুলে নিয়ে মু্ষ্ঠিবদ্ধ হাত উপরে তুলে ‘জয় শ্রীরাম’ বলে বাচ্চু আনু্ষ্ঠানিভাবে বিজেপিতে যোগ দেন। সোমবার কলকাতায় মুকুল রায়ের সঙ্গে একদফা কথা বলে তপনে ফেরেন বাচ্চু। তিনি যে বিজেপিতে পা বাড়িয়েই রয়েছেন, সেই খবর আনন্দবাজার পত্রিকাতেই প্রথম প্রকাশ হয়।
বাড়ি ফেরার পর মঙ্গলবারই বিষন্ন বাচ্চুর মান ভাঙাতে তাঁর বাড়িতে গিয়ে সরাসরি কথা বলেন তৃণমূলের রাজ্য সভার সদস্য অর্পিতা ঘোষ। তবে ততক্ষণে বাচ্চুর তরী বিজেপিতে ভিড়ে গিয়েছিল। অর্পিতা কথা বলার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গেরুয়া শিবিরে শামিল হয়ে বাচ্চু সমস্ত ক্ষোভের উত্তর দিয়ে দিলেন। পরে কলকাতা থেকে ফোনে বাচ্চু জানান, তৃণমূলে থেকে গেলে আমাকে সন্দেহের চোখেই দেখা হত। প্রচারে গেলেও বলা হত বাচ্চু বিরূপ কাজ করছে। এইসব বিতর্কে থাকতে চাইনি।
বাচ্চুর বিজেপি যোগ সম্পর্কে এ দিন বালুরঘাটে অর্পিতা বলেন, ‘‘টিকিট পাননি বলে বাচ্চুর ক্ষোভ হয়েছিল। দলের নির্দেশে কথা বলে বোঝানোর চেষ্টা হয়। তারপরেও বিজেপিতে যোগ দেওয়া ওর ব্যক্তিগত বিষয়। একজন বাচ্চু হাঁসদার জন্য কোনও কিছুর বদল ঘটবে না। তৃণমূলের কোনও ক্ষতি হবে না।’’
সূত্রের খবর, তপন থেকে বিজেপি টিকিট দিলে জিতিয়ে দেখিয়ে দেবেন বলে প্রত্যয়ের সঙ্গে বাচ্চু রাজ্য নেতৃত্বের কাছে দাবি করেন। এরপরই রাজ্য বিজেপি থেকে ডাক পেয়ে রাতেই তপন থেকে কলকাতায় রওনা হন তিনি। এদিন বাচ্চুর বিজেপিতে যোগদানের খবর টিভিতে দেখে তপন এলাকায় তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
এক তৃণমূল নেতার কথায়, তপন বিধানসভা এলাকায় প্রতিটি অঞ্চলে বাচ্চুর টিম রয়েছে। বুথস্তরেও রয়েছেন একাধিক অনুগামী। এদিন তাদের অনেকেই জানান বাচ্চুদা যেদিকে, আমরাও সেদিকে। বোয়ালদার, চকভৃগু, ডাঙা অঞ্চলের তৃণমূল কর্মীদের একাংশ আবার বাচ্চুর বিরোধীতা করে অভিযোগ করেন, নিজের সুবিধাবাদী আচরণ সবার কাছে তুলে ধরলেন বাচ্চু। এতদিন তৃণমূলে থেকে সমস্ত কিছু ভোগ করলেন। টিকিট না পেয়ে জামা বদলে বিজেপিতে গেলেন। বাচ্চুর বক্তব্য, ‘‘বিজেপি দল মহাসমুদ্রের মতো। এখানে আমি এক নগণ্য কর্মী। মানসিক তৃপ্তির জন্যই বিজেপিতে যোগ দিলাম।’’