বলরামপুরে চলছে কপ্টারের মহড়া। নিজস্ব চিত্র.
দুপুরে মুখ্যমন্ত্রীর ভিডিয়ো বার্তায় আশা দেখা দিয়েছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাতে তৃণমূলের পুরুলিয়া জেলা চেয়ারম্যান শান্তিরাম মাহাতো দাবি করলেন, শনিবার মুখ্যমন্ত্রীর পুরুলিয়ার সভাগুলি স্থগিত করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘জয়পুরের সভা আগেই স্থগিত করা হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রীর শারীরিক অবস্থার জন্য শনিবার বলরামপুর ও ঝালদার সভাও স্থগিত হয়েছে। চিকিৎসকদের পরামর্শেই এই সিদ্ধান্ত বলে শুনেছি।’’
শনিবার পুরুলিয়ার ঝালদা, জয়পুর ও বলরামপুরে মুখ্যমন্ত্রী সভা করতে আসতে পারেন বলে আগেই জানিয়েছিল তৃণমূল। তার আগে, বুধবার নন্দীগ্রামে জনসংযোগ করার সময়ে আহত হন তিনি। সেই ঘটনার পরে, পুরুলিয়ার সভাগুলি নিয়ে দলের অন্দরে সংশয় দেখা দিয়েছিল। বৃহস্পতিবার দুপুরে হাসপাতাল থেকেই ভিডিয়ো বার্তায় মুখ্যমন্ত্রী জানান, পূর্বঘোষিত সভাগুলি তিনি বাতিল করতে চান না। প্রয়োজনে হুলই চেয়ারে বসে সভা করবেন। যা শুনে উজ্জীবিত হয়েছিলেন পুরুলিয়ার তৃণমূল কর্মী সমর্থকেরা। বিকেলে দলের জেলা মুখপাত্র নবেন্দু মাহালি জানিয়েছিলেন, জয়পুরের সভা নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকলেও, ঝালদা ও বলরামপুরে ফের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে।
দল সূত্রের খবর, জয়পুরে তৃণমূল প্রার্থী উজ্জ্বল কুমারের মনোনয়ন ঘিরে জটিলতা তৈরি হওয়ায় সেখানে সভা হবে কি না, তা নিয়ে আলাদা করে সংশয় তৈরি হয়েছিল। এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা পাওয়ার পরেই ঝালদায় সভাস্থল পরিবর্তন করা হয়। তৃণমূল সূত্রের খবর, আগে স্থির ছিল ঝালদার হাটতলায় সভা করবেন মুখ্যমন্ত্রী। হেলিপ্যাড তৈরি হয়েছিল ঝালদা হাইস্কুলের মাঠে। কিন্তু হেলিপ্যাড থেকে গাড়িতে অন্য মাঠে যেতে তাঁর সমস্যা হতে পারে ভেবে হাইস্কুলের মাঠেই সভাস্থল তৈরি শুরু হয়। ঝালদা ১ ব্লকের তৃণমূল সভাপতি অলক চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, বাঘমুণ্ডি বিধানসভা এলাকা থেকে অন্তত কুড়ি হাজার লোকের জমায়েত করার লক্ষ্যমাত্রা নিচ্ছেন তাঁরা।
অন্য দিকে, বলরামপুরের রথতলা সংলগ্ন মাঠে মুখ্যমন্ত্রীর সভাস্থলের পাশে হেলিপ্যাড এ দিন কপ্টারের মহড়াও হয়। ওই সভায় হাজার পঁচিশ লোক জমায়েত করার লক্ষ্য নিয়েছিলেন দলের নেতারা। দুপুরে বলরামপুরের তৃণমূল প্রার্থী শান্তিরাম মাহাতো জানিয়েছিলেন, প্রস্তুতি শুরু হয়েছে জোরকদমে। এ দিন মঞ্চ তৈরির প্রস্তুতি খতিয়ে দেখেন বলরামপুর ব্লক তৃণমূলের সভাপতি অঘোর হেমব্রম। পরিদর্শন করেন পুলিশের আধিকারিকরাও। সূত্রের খবর, পায়ের চোটের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হুইল চেয়ারে মঞ্চে উঠতে পারেন ভেবে সিড়ির পাশাপাশি র্যাম্প তৈরির ভাবনাও চলছিল।
জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র নবেন্দু মাহালি বৃহস্পতিবার রাতে বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী আসতে পারবেন কি না, তা নিয়ে নন্দীগ্রামের ঘটনার পরেই সংশয় তৈরি হয়েছিল। ইচ্ছা থাকলেও চিকিৎসকদের পরামর্শে তিনি আসছেন না বলে জানতে পেরেছি। তিনি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুন এবং পুরুলিয়ায় সভা করতে আসুন, এটাই এখন জেলার আপামর নেতা-কর্মীর প্রার্থনা।’’