ক্ষোভ: বাগদা পঞ্চায়েত সমিতির দরজায় ঝুলল তালা। নিজস্ব চিত্র।
বনগাঁ মহকুমার চারটি বিধানসভা আসনেই এ বার বিজেপি প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন। হারের অন্যতম কারণ হিসেবে অন্তর্ঘাতকে দায়ী করছেন দলের একাংশ। বাগদা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী পরিতোষ সাহা পরাজিত হয়েছেন বিজেপি প্রার্থী বিশ্বজিৎ দাসের কাছে। ৯৭৯২ ভোটে হেরেছেন তিনি।
এই হারকে কেন্দ্র করে দলীয় কোন্দল ফের মাথাচাড়া দিয়েছে বাগদায়। সোমবার দলের নেতা-কর্মীদের একাংশ বাগদা পঞ্চায়েত সমিতির অফিসে গিয়ে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন। তাঁরা বিক্ষোভও দেখান।
তাঁদের দাবি, দলীয় প্রার্থীর পরাজয়ের পিছনে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূলের গোপা রায় এবং সহ সভাপতি তরুণ ঘোষের ভূমিকা ছিল। পরিতোষের অভিযোগ, “দলের কর্মীরা ভোটে দিনরাত এক করে পরিশ্রম করেছেন।
কিন্তু গোপা রায়, তরুণ ঘোষদের মতো কিছু নেতা-নেত্রী তৃণমূলের হয়ে মিটিং-মিছিল করেও বিজেপির হয়ে কাজ করেছেন। তাঁরা প্রায় প্রকাশ্যে লোকজনকে বিজেপির হয়ে নামিয়ে দিয়েছিলেন। দলীয় নেতৃত্বকে আগেই জানিয়েছিলাম। এ বার পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট পাঠিয়ে তাঁদের দল থেকে অপসারণের দাবি জানাব।” অভিযোগ অস্বীকার করে গোপা বলেন, “কখনও দলবিরোধী কাজ করিনি।
এ দিন যাঁরা সমিতির অফিসে গিয়েছিলেন, তাঁরাই ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে দলীয় প্রার্থীর বিরোধিতা করেছিলেন। এঁরা তোলাবাজ। দলীয় পতাকা নিয়ে পিঠ বাঁচানোর চেষ্টা করছেন। দলের উচিত এই সব জঞ্জাল এ বার সাফ করা।”
তরুণ বলেন, “কোথায় দলের বিরোধিতা করলাম বুঝতে পারছি না।” দলের জেলা কো-অর্ডিনেটর গোপাল শেঠ বলেন, “সরকারি অফিসে তালা দেওয়া উচিত নয়। কোনও বক্তব্য থাকলে দলীয় নেতৃত্বকে জানানো উচিত। বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে।”
দীর্ঘ দিন ধরেই বাগদায় নেতাদের পারস্পরিক সম্পর্ক জেলা তৃণমূলের মাথা ব্যথার কারণ। দলীয় কোন্দল মেটাতে ভোটের আগে কড়া পদক্ষেপ করেছিলেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। হেলেঞ্চায় এসে দলের জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, “আপনারা নিজেদের মধ্যে কচকচানি বন্ধ করুন। সকলকে এক সঙ্গে কাজ করতে হবে।” ভোটের ফল প্রকাশের পরে অবশ্য দেখা যাচ্ছে, নেতৃত্বের দাওয়াই কাজ করেনি।
বিজেপি প্রার্থী বিশ্বজিৎ বলেন, “মানুষের ভোটে আমি জয়ী হয়েছি। তৃণমূল মানুষের রায়কে স্বীকার করতে জানে না। পঞ্চায়েত ভোটে এরাই মানুষকে ভোট দিতে দেয়নি। এ বার মানুষ তার বদলা নিয়েছেন।”