West Bengal Assembly Election 2021

Bengal Polls: ব্যারাকপুরে অশান্তি ঠেকাতে আগাম গ্রেফতার তিন হাজার

মঙ্গলবার দুপুরে জগদ্দল ও ভাটপাড়া বিধানসভার সংযোগস্থল মেঘনা মোড়ে দেখা গেল, গাড়ি দাঁড় করিয়ে নাকা-তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ব্যারাকপুর শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২১ ০৭:০৮
Share:

নজরদারি: গাড়ি থামিয়ে চলছে তল্লাশি। মঙ্গলবার, ভাটপাড়ায়। মাসুম আখতার

রাত পোহালেই ভোট ব্যারাকপুরে। আগামী কাল, বৃহস্পতিবার ব্যারাকপুর মহকুমার একটি এবং ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের সাতটি কেন্দ্র মিলিয়ে মোট আটটি বিধানসভায় ভোট। অতীতের গোলমালের নিরিখে শিল্পাঞ্চলের সাতটি বিধানসভার মধ্যে কয়েকটিতে গোলমালের আশঙ্কা করা হচ্ছে বলে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা নির্বাচন কমিশন সূত্রের খবর। ভোটের দিন যে কোনও ধরনের গোলমাল, অশান্তি এড়ানোর জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা যথাসম্ভব মজবুত রাখতে তৎপর পুলিশ ও নির্বাচন কমিশন। ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই সন্দেহভাজন ৩০০০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। স্পর্শকাতর এলাকাগুলিতে নিয়মিত রুট মার্চ করছে আধা সেনা।

Advertisement

মঙ্গলবার দুপুরে জগদ্দল ও ভাটপাড়া বিধানসভার সংযোগস্থল মেঘনা মোড়ে দেখা গেল, গাড়ি দাঁড় করিয়ে নাকা-তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। রাস্তায় দাঁড়িয়ে রয়েছেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরাও। ভোট ঘোষণার পরে সাম্প্রতিক সময়ে এই মেঘনা মোড়েই বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহের বাড়ির সামনে এক রাতে তুমুল বোমাবাজি হয়েছিল। তার পরেই নির্বাচন কমিশনের তোপের মুখে পড়ে ব্যারাকপুর কমিশনারেটের পুলিশ। অশান্তি একেবারে থেমে না গেলেও এলাকায় পুলিশি তৎপরতা বাড়তে দেখা গিয়েছে। ইতিমধ্যেই কয়েকটি জায়গায় বোমা ও আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির কারখানার সন্ধান পেয়েছে পুলিশ। ১০০-র বেশি বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়েছে।

আবার গত ৩১ মার্চ মনোনয়ন জমা দেওয়ার দিনে ব্যারাকপুরে মহকুমা শাসকের দফতরের বাইরেই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন তৃণমূল ও বিজেপির কর্মী-সমর্থকেরা। ওই ঘটনায় এক দুষ্কৃতী গুলিও চালায়। এ সবের নিরিখে ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের ভোট নিয়ে চিন্তিত প্রশাসন। প্রশাসনের একটি সূত্র বলছে, জগদ্দল, ভাটপাড়া, নৈহাটি, বীজপুরের মতো কেন্দ্রগুলি নিয়ে উদ্বেগে রয়েছে নির্বাচন কমিশনও।

Advertisement

২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের পরে ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রে উপ-নির্বাচনকে ঘিরে এলাকায় তুমুল গোলমাল হয়। পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর, বোমাবাজি— সবই হয়েছিল তখন। কাঁকিনাড়া বাজার, কাটাপুকুর, কাটাডাঙা-সহ ভাটপাড়া এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছিল রাজনৈতিক অশান্তি। আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় ক্লাব এবং একটি রাজনৈতিক দলের কার্যালয়েও। বেশ কয়েক দিন ধরে চলা ওই গোলমালে ব্যাহত হয় স্বাভাবিক জনজীবনও।

সেই সবের কথা মাথায় রেখে এ বার সতর্ক রয়েছে প্রশাসনও। দুষ্কৃতীদের নিয়ন্ত্রণ করতে তাদের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া, গোলমাল পাকাতে পারে এমন লোকজনকে গ্রেফতার করে ভোট পর্যন্ত তাদের জামিন না দিতে আদালতের কাছে আবেদন করা-সহ একাধিক পদক্ষেপ করা হয়েছে বলেই দাবি পুলিশের। জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, ১১০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় জওয়ান, ১১০টি কুইক রেসপন্স টিম-সহ পুলিশের বিরাট বাহিনী তৈরি রাখা হচ্ছে।

এ দিন ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে ঘুরে মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, উপ-নির্বাচনের গোলমালের মতো পরিবেশ তৈরির আশঙ্কা খুব বেশি না করলেও ভোটের দিন কী হবে, তা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে অনেকের মধ্যেই। এলাকার লোকজনই জানিয়েছেন, এ বার ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের কয়েকটি বিধানসভায় রাজনৈতিক সমীকরণ বদলেছে। সেই সব জায়গায় জিততে পূর্ণ শক্তি নিয়ে ঝাঁপাবে তৃণমূল ও বিজেপি। ফলে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট দেওয়ার জন্য পুলিশ ও নির্বাচন কমিশনের দিকেই তাঁরা চেয়ে আছেন বলে জানিয়েছেন শিল্পাঞ্চলের বাসিন্দারা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement