মোতায়েন: ভিড়ে গ্রামে পুলিশ। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক
বোমাবাজি, গুলি চালানোর পাশাপাশি নানা অভিযোগে বৃহস্পতিবার দিনভর উত্তপ্ত থাকল বনগাঁ মহকুমা এবং হাবড়া-অশোকনগরের ভোট। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কেন্দ্রীয় বাহিনী বা পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে। এ দিন হাবড়া বিধানসভার নারায়ণপুরে তৃণমূলের কয়েকটি ক্যাম্প ভাঙচুর ও কর্মীদের মারধর করার অভিযোগ ওঠে কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে। রাউতারা এলাকায় জমায়েত সরাতে বাহিনী লাঠি চালায় বলে অভিযোগ। ফুলতলা এলাকাতেও বাহিনী লাঠি চালিয়েছে বলে অভিযোগ।
হাবড়ায় তৃণমূল প্রার্থী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, “তৃণমূলের কর্মীদের মারধর করেছে, ক্যাম্প ভেঙেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। কমিশনের কাছে অভিযোগ করেছি।” প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
হাবড়ার বিজেপি প্রার্থী রাহুল সিংহ বলেন, “ভোট অবাধ ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে। গণতন্ত্রের জয় হয়েছে। জ্যোতিপ্রিয় গোলমাল পাকানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে ঘরে ঢুকে গিয়েছেন।”
অশোকনগরের দোগাছিয়া এলাকায় জমায়েত সরাতে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে জনতার গোলমাল হয়। পুলিশ লাঠি চালায়। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছোড়া হয়। এক পুলিশ কর্মী জখম হয়েছেন।
অশোকনগরের ট্যাংরা এলাকায় বোমাবাজি হয়। অভিযোগ, কেন্দ্রীয় বাহিনী গুলি চালিয়েছে। দু’জন তৃণমূল কর্মী জখম হয়েছেন। বাগদার রনঘাট এলাকায় পুলিশ গুলি চালিয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। বিজেপির দাবি, কয়েকজন জখম হয়েছেন। বাগদা থানার ওসি উৎপল সাহা এবং এক পুলিশ কর্মী জখম হয়েছেন। উৎপলের মাথায় ধারাল অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয় বলে অভিযোগ।
বনগাঁ উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের ভিড়া গ্রামে কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে তৃণমূলের পঞ্চায়েতের সদস্য আলাউদ্দিন মণ্ডল-সহ চারজনকে লাঠিপেটা করার অভিযোগ ওঠে। ওই বিধানসভার তৃণমূল প্রার্থী শ্যামল রায়ের অভিযোগ, “ভোটগ্রহণ কেন্দ্র থেকে দূরে রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন কর্মীরা। আচমকা বাহিনীর জওয়ানেরা এসে লাঠিপেটা করে। বাহিনী বিজেপির হয়ে কাজ করছে।” বাহিনীর দাবি, জড়ো হয়ে লোকজন ভোটারদের প্রভাবিত করছিল। তাঁদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বুধবার রাতে তৃণমূল কর্মীরা বনগাঁ পুরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যে দলীয় পতাকা লাগানোর কাজ করছিলেন। অভিযোগ, কেন্দ্রীয় বাহিনী সেখানে গিয়ে লাঠিপেটা করেছে। তৃণমূলের এক কর্মী জখম হয়েছেন। তাঁকে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। পুরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডেও কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে তৃণমূল কর্মীদের মারধরের অভিযোগ ওঠে। ৫ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের বুথ শিবিরে ঢুকে বাহিনী মারধর করেছে বলে অভিযোগ।
বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক দেবদাস মণ্ডল বলেন, “বাগদায় রাজ্য পুলিশ তৃণমূলের মদতে গুলি চালিয়েছে। সাতবেড়িয়ায় আমাদের এজেন্টকে মারধর করা হয়েছে।” জেলা তৃণমূল কো-অর্ডিনেটর গোপাল শেঠ বলেন, “কয়েকটি ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভূমিকা ভাল ছিল না। জনগণ রুখে দিয়েছে। তা ছাড়া, ভোট শান্তিপূর্ণ হয়েছে।” সিপিএম নেতা পঙ্কজ ঘোষ এ দিন বলেন, “ভোট পর্ব শান্তিতেই মিটেছে।”