‘রাজু’ থেকে ‘রাজ’। বহিরাগত হিসেবে বাংলা ছবির ইন্ডাস্ট্রিতে পা রেখে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছেন। এ বার রাজনীতির ময়দানে নতুন অভিযান বাংলা ছবির এই সফল পরিচালকের। নির্বাচন কমিশনের কাছে হলফনামায় পেশ করেছেন নিজের সম্পত্তির বিবরণ।
২০১৯-’২০ আর্থিক বর্ষে রাজের উপার্জন ছিল ৫৪ লক্ষ ২৭ হাজার ৯৭০ টাকা। তাঁর স্ত্রী শুভশ্রী উপার্জন করেছিলেন ১ কোটি ১৭ লক্ষ ২২ হাজার ৮৮০ টাকা। তাঁদের উপর নির্ভরশীল হিসেবে সন্তান ইউভানের নাম উল্লেখ করেছেন রাজ।
ব্যারাকপুর কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী রাজের হাতে এই মুহূর্তে আছে ২৫ হাজার ৯০৬ টাকা। তাঁর স্ত্রী শুভশ্রীর কাছে আছে ১৫ হাজার ৭২০ টাকা।
বিভিন্ন ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে রাজের নামে আছে যথাক্রমে ১ লক্ষ ১১ হাজার ৮৩৫ টাকা ৮ পয়সা, ২২ হাজার ১৮৭ টাকা ১৮ পয়সা, ৬ হাজার ৪৭৫ টাকা ৪৮ পয়সা, ৩৫ হাজার ৫৮৪ টাকা ২২ পয়সা, ১৪ হাজার ৪৭৫ টাকা ৮৩ পয়সা, ৭ হাজার ৪১৪ টাকা ৮৯ পয়সা এবং ৮ হাজার ৭৩৮ টাকা ৬১ পয়সা।
রাজের স্ত্রী শুভশ্রীর নামে ব্যাঙ্কের বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে গচ্ছিত আছে ৫ লক্ষ ৮ হাজার ৭৪৭ টাকা ১১ পয়সা, ২ হাজার ৬৭২ টাকা ৫৭ পয়সা, ২৪ লক্ষ ৪২ হাজার ৬১১ টাকা ৭৯ পয়সা এবং ২৪ লক্ষ ১৫ হাজার ৪২৮ টাকা ১০ পয়সা।
৮টি স্থায়ী আমানতে রাজ রেখেছেন ৫ লক্ষ টাকা করে। শুভশ্রীর নামে রয়েছে ৫৭টি স্থায়ী আমানত। গচ্ছিত রয়েছে প্রায় আড়াই কোটি টাকা।
শেয়ারবাজারে রাজ কিছু বিনিয়োগের কথা উল্লেখ করেননি। শুভশ্রীর কাছে রয়েছে ৯ লক্ষ টাকার বেশি বন্ড।
একাধিক বিমা করেছেন রাজ। নির্ধারিত সময়ের পরে সেগুলি থেকে পাওয়ার কথা যথাক্রমে ২০ লক্ষ টাকা, ৭ লক্ষ ৩৯ হাজার ৮৯৪ টাকা, ২০ লক্ষ টাকা, ১০ লক্ষ টাকা, ১০ লক্ষ টাকা, ৫০ লক্ষ টাকা, ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা, ১০ লক্ষ এবং ৫০ লক্ষ টাকা।
শুভশ্রীও বেশ কিছু বিমার ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করেছেন। নির্দিষ্ট সময়ের পর সেখান থেকে পাওয়া যাবে যথাক্রমে ১৬ লক্ষ ২৮ হাজার ২৪৩ টাকা, ২৩ লক্ষ ৯৪ হাজার টাকা, ৩ লক্ষ ১ হাজার ৮৯০ টাকা, ১০ লক্ষ টাকা, ৬০ লক্ষ টাকা এবং ৪ লক্ষ টাকা।
দু’টি গাড়ি আছে রাজের। ২০১৯ সালে কেনা ভলভো সংস্থার গাড়ির দাম ৮০ লক্ষ ২৭ হাজার ৪৯১ টাকা এবং ২০১৮-য় কেনা টাটা নেক্সনের দাম ৮ লক্ষ ৭৪ হাজার ৫৩৭ টাকা। শুভশ্রীর নামে কোনও গাড়ি নেই।
রাজের কোনও মূল্যবান গয়না নেই। শুভশ্রীর কাছে থাকা ১৮৬.৯৭ গ্রাম সোনার গয়নার দাম ৫২ লক্ষ ৩৩ হাজার ৬৮৩ টাকা ৭৯ পয়সা।
হালিশহরে ১৩ হাজার ৫০৩.৬ বর্গফুটের একটি জমি আছে রাজের। ২০১২ সালে জমিটি তিনি কিনেছিলেন ১১ লক্ষ ২৬ হাজার ৬৫৩ টাকায়। জমিটির বর্তমান বাজারদর প্রায় ৬৮ লক্ষ ৭৩ হাজার ৩৩২ টাকা।
ব্যবসায়িক কারণে রাজডাঙা মেন রোডে একটি বাড়ি কিনেছেন রাজ। ২০১৬ সালে বাড়িটি কিনতে তাঁর খরচ হয়েছিল ১ কোটি ৮৩ লক্ষ ৩১ হাজার ২৬১ টাকা। বাড়িটির বর্তমান বাজারদর প্রায় ১ কোটি ৬৫ লক্ষ ৩৬ হাজার ৪৮০ টাকা।
রাজ এবং শুভশ্রী থাকেন আনন্দপুরের ‘আরবানা’ আবাসনে। ২০১০ সালে সেখানে ফ্ল্যাট কিনেছিলেন ১ কোটি ৬১ লক্ষ ৩১ হাজার ৮৬০ টাকায়। ফ্ল্যাটের বর্তমান বাজারদর প্রায় ২ কোটি ১ লক্ষ ৫৩ হাজার ৫০০ টাকা।
মোটা অঙ্কের ব্যাঙ্কঋণও চলছে রাজের নামে। ১ কোটি ৪ লক্ষ ৭৯ হাজার ৯৫৮ টাকার গৃহঋণ এবং ৪৬ লক্ষ ৬৯ হাজার ৪৩০ টাকার গাড়ির ঋণ চলছে তাঁর।
স্ত্রীর কাছ থেকেও ১০ লক্ষ টাকার ঋণ নিয়েছেন বলে হলফনামায় জানিয়েছেন রাজ।
শুভশ্রীও ঋণ নিয়েছেন। তবে কোনও ব্যাঙ্কে নয়। তিনি ঋণ করেছেন ৩ জন ব্যক্তি এবং একটি সংস্থার কাছে। তাঁর ঋণের অঙ্ক যথাক্রমে ১ লক্ষ ৮৬ হাজার টাকা, ২৭ লক্ষ ৯০ হাজার ১০০ টাকা, ৭ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা এবং ১০ লক্ষ টাকা।
২০০০ সালে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেছেন রাজ। পরিচালনা ও প্রযোজনার পাশাপাশি তিনি নিজেকে ব্যবসায়ী বলেও পরিচয় দিয়েছেন। তাঁর স্ত্রী পেশাদার অভিনেতা।
রাজের নামে অস্থাবর সম্পত্তির মূল্য ৩ কোটি ৩৯ লক্ষ ৩১ হাজার ৭৫ টাকা ১৯ পয়সা। স্ত্রী শুভশ্রীর অস্থাবর সম্পত্তি আছে ৫ কোটি ৫৫ লক্ষ ৭ হাজার ৯৯৬ টাকা ৩৬ পয়সার।
রাজের স্থাবর সম্পত্তির বর্তমান বাজারদর ৪ কোটি ৩৫ লক্ষ ৬৩ হাজার ৩১২ টাকার। শুভশ্রীর নাম কোনও স্থাবর সম্পত্তির উল্লেখ নেই হলফনামায়।