হতেই পারতেন ইঞ্জিনিয়ার। কিন্তু ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া শেষ করলেন না। নামী সাহিত্য পত্রিকায় কিছু দিন কাজ করার পরে দূরদর্শনে সংবাদপাঠক হলেন দীপক। সে কাজেও মন বসল না। পা পাখলেন অভিনয়ের দুনিয়ায়। নামী চিত্রশিল্পীর ছেলেকে দর্শক চিনলেন অভিনেতা চিরঞ্জিত চক্রবর্তী পরিচয়ে।
দীর্ঘ কয়েক দশক বাংলা ছবিকে শাসন করার পরে চিরঞ্জিত এলেন রাজনীতির দুনিয়ায়। ২০১১ এবং ২০১৬ সালে পর পর দু’বার বারাসত কেন্দ্র থেকে বিধায়ক। এ বারও তিনি নিজের পুরনো কেন্দ্রে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে। নির্বাচন কমিশনের কাছে জানিয়েছেন তাঁর সম্পত্তির বিবরণ।
২০১৯-’২০ আর্থিক বর্ষে চিরঞ্জিতের উপার্জন ছিল ৩৪ লক্ষ ৬১ হাজার ৯৪০ টাকা। তাঁর স্ত্রী রত্নাবলীর উপার্জন ৬ লক্ষ ৪৮ হাজার ৯০০ টাকা। এই মুহূর্তে চিরঞ্জিতের হাতে আছে নগদ ৩৮ হাজার ৯৯ টাকা ৯০ পয়সা। তাঁর স্ত্রীর কাছে আছে ১০ হাজার ৫১৩ টাকা ৩৭ পয়সা।
বিভিন্ন ব্যাঙ্কে চিরঞ্জিতের নামে গচ্ছিত আছে যথাক্রমে ৩ কোটি ৭১ লক্ষ ৫ হাজার ৪৬৯ টাকা, ২২ লক্ষ ৬৩ হাজার ৪৯৯ টাকা, ৩৭ হাজার ২০৭ টাকা ৬ পয়সা, ২ লক্ষ ১০ হাজার ৭৫২ টাকা ১৭ পয়সা, ২ লক্ষ ৩৩ হাজার ২৫ টাকা ৬৪ পয়সা এবং ৩ লক্ষ ৩১ হাজার ৮৩৭ টাকা।
তাঁর স্ত্রীর নামে বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে জমা আছে ৬৮ হাজার ৫৯৯ টাকা ৮৬ পয়সা, ৩০ হাজার ৯৬ টাকা ৮ পয়সা, ২৮ হাজার ১০২ টাকা, ৫ লক্ষ টাকা, ১০ লক্ষ টাকা এবং ৩৮ লক্ষ টাকা।
শেয়ারবাজারে অভিনেতা-বিধায়ক বিনিয়োগ করেছেন ৮ লক্ষ ২০ হাজার টাকা, সাড়ে ৪ লক্ষ টাকা এবং ১৫ লক্ষ টাকা। তাঁর স্ত্রী বিনিয়োগ করেছেন ৭ লক্ষ টাকা, দেড় লক্ষ টাকা এবং ২ লক্ষ টাকা।
এনএসএস, ডাকঘরে সঞ্চয় প্রকল্পে চিরঞ্জিত বিনিয়োগ করেছেন ২ লক্ষ টাকা। তাঁর স্ত্রী বিনিয়োগ করেছেন ১ লক্ষ ৩২ হাজার টাকা, ৮০ হাজার টাকা এবং সাড়ে ১২ লক্ষ টাকা।
চিরঞ্জিতের একটি গাড়ি, মাহিন্দ্রা স্করপিয়ো। ২০১৯ সালে কিনেছিলেন ১৩ লক্ষ ১৫ হাজার ১৯০ টাকা দিয়ে।
অন্যান্য মহার্ঘ্য জিনিসের মধ্যে অন্যতম চিরঞ্জিতের কাছে থাকা সোনার গয়না। তাঁর নেকলেস এবং দু’টি আংটির দাম ২০০১ সালে ছিল ১ লক্ষ ৫৩ হাজার ৩৪৫ টাকা।
স্ত্রীর কাছে আছে একটি সোনার চেন, মঙ্গলসূত্র, তিন জোড়া কানের দুল, ৩টি বালা, ২ জোড়া চূড়, ১০ জোড়া চুড়ি এবং ১ জোড়া বাউটি-সহ কিছু গয়না। ১৯৮৯ সালের হিসেবে এই অলঙ্কারের মূল্য প্রায় ১ লক্ষ ১৫ হাজার ৫০০ টাকা।
হলফনামায় তাঁর একটি বাড়ির কথা উল্লেখ করেছেন চিরঞ্জিত। টালিগঞ্জে ডক্টর মেঘনাদ সাহা সরণিতে ওই ফ্ল্যাট তিনি ১৯৯২ সালে কিনেছিলেন ৯ লক্ষ ৩৪ হাজার ৬৬২ টাকায়। ফ্ল্যাটের বর্তমান বাজারদর প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা।
ব্যাঙ্কে চিরঞ্জিতের নামে ৮ লক্ষ ৫৭ হাজার ৩৮৫ টাকার গাড়ির ঋণ চলছে। হলফনামায় নিজের পরিচয় চিরঞ্জিত দিয়েছেন অভিনেতা হিসেবে। মূল উপার্জন বিধায়ক হিসেবে প্রাপ্ত বেতন এবং অভিনয় সূত্রে পাওয়া পারিশ্রমিক। তাঁর স্ত্রী গৃহবধূ।