প্রচারে কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী। নিজস্ব চিত্র।
২০১১ সাল ভোটে জিতে মন্ত্রী হয়েছিলেন। ঠিক পাঁচ বছর পর ২০১৬-র বিধানসভা ভোটে হেরেও যান। ২০২১-এ একই কেন্দ্রে ফের তৃণমূলের প্রার্থী রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী। তবে এ বার ভোটের প্রচারে নেমে আগে ভাগেই ‘ক্ষমা’ চেয়ে নিলেন। রীতিমতো লিফলেট বিলি করে লিখিত ভাবে জানালেন আগের ‘দুর্ব্যবহার’-এর জন্য তিনি ক্ষমাপ্রার্থী। আর এমন হবে না। জনতা যেন ভোটটা তাঁকেই দেন।
মালদহের ইংরেজবাজার বিধানসভা কেন্দ্রে এই নিয়ে তৃতীয়বার তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন কৃষ্ণেন্দু। মঙ্গলবার সকালে তাঁকে দেখা গেল এলাকায় লিফলেট বিলি করতে। সঙ্গে ছিলেন তাঁর স্ত্রী কাকলি চৌধুরী এবং অনুগামী তৃণমূলকর্মীরা। যাঁকে সামনে পেয়েছেন তাঁর হাতেই ওই প্রচারপত্র দিয়েছেন তাঁরা। প্রচারপত্রে লিখিত ভাবে ক্ষমা চেয়েছেন কৃষ্ণেন্দু। ‘বিনম্র নিবেদন’ শীর্ষক ওই লিফলেটে তিনি লিখেছেন, ‘আমার অফিসের কিছু লোকের ব্যবহারে আপনারা দুঃখ পেয়েছেন। আমি তার জন্য দুঃখপ্রকাশ করছি’।
২০১১-য় মালদহের ইংরেজবাজার কেন্দ্র থেকে ভোটে জিতে মন্ত্রী হয়েছিলেন কৃষ্ণেন্দু। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভায় খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ মন্ত্রীও হয়েছিলেন তিনি। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, মন্ত্রী হওয়ার পর থেকেই বদলে যেতে শুরু করে তাঁর ব্যবহার। অনুগামীদের দুর্গ পেরিয়ে মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করাটা একটা সময়ে অসম্ভব হয়ে পড়ে। এর পর ২০১৬-র নির্বাচনে হেরে যান তিনি। কৃষ্ণেন্দু তাঁর বিলি করা লিফলেটে জানিয়েছেন, তাঁর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়েছিলেন কিছু স্বার্থান্বেষী মানুষ। নিজের দায়িত্ব থেকে তিনি কখনওই সরে আসেননি। পরে কৃষ্ণেন্দু বলেন, ‘‘দফতরের কর্মীদের আচার-আচরণ নজরে রাখার জন্য এখন আমি সিসি ক্যামেরা বসিয়েছি। যদি কোনও কর্মী দুর্ব্যবহার করেন, তবে তা সংশোধন করাও হচ্ছে।’’
২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনে মালদহের ইংরেজবাজার কেন্দ্রে কৃষ্ণেন্দুর বিরুদ্ধে ভোটে জেতেন বাম-কংগ্রেস সমর্থিত নির্দল প্রার্থী নীহাররঞ্জন ঘোষ। সেই নীহার এখন তৃণমূলেই। তিনি এ বারের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থীও। তবে চাঁচোলের। ইংরেজবাজারের জন্য আগের বারের হেরে যাওয়া প্রার্থী কৃষ্ণেন্দুকেই বেছে নিয়েছে তৃণমূল।
তবে তৃণমূলের প্রার্থীর এই ক্ষমাপ্রার্থনাকে কটাক্ষ করে জেলা বিজেপি-র সভাপতি গোবিন্দচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘এই ধরনের দুঃখপ্রকাশে জনতার মন গলানো যাবে না। মানুষ কৃষ্ণেন্দুবাবুর আচরণ ভুলে যায়নি। এত সহজে তা ভোলানোও যাবে না।’’