ফাইল চিত্র।
তৃণমূল প্রার্থী তো ওয়াক ওভার দিয়েছে। শুরু থেকে এমনই প্রচার ছড়িয়ে দিয়েছিল বিজেপি। যদিও শুরু থেকে নিজের জয়ের বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী ছিলেন বিধাননগরের তৃণমূল প্রার্থী সুজিত বসু। তাঁর দলীয় কর্মীদের দাবি ছিল, দলত্যাগীরা ভোট পাবে না।
তাঁদের সেই বিশ্বাস প্রতিফলিত হল ভোটে। যদিও জয় সহজ ছিল না। কারণ, প্রাক্তন কাউন্সিলর থেকে মেয়র, তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যোগ দিয়েছিলেন। সঙ্গে নিয়েছিলেন তাঁর সমর্থকদের একাংশ। সেই প্রাক্তন মেয়র সব্যসাচী দত্ত এ বারে ছিলেন তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী। দু’জনের ‘মধুর’ সম্পর্ক সুবিদিত। ফলে ছিল অন্তর্ঘাতের আশঙ্কা।
দুই শক্তিশালী প্রার্থীর লড়াই ঘিরে অশান্তির আশঙ্কা ছিল বাসিন্দাদের। বিক্ষিপ্ত কিছু অশান্তি হলেও অবশ্য মানুষ নির্বিঘ্নে ভোট দিয়েছিলেন। তৃণমূল কর্মীদের কথায়, “সব্যসাচী দত্ত বহিরাগত নিয়ে এসেও কিছু করতে পারেননি।” যার ফলস্বরূপ আখেরে তৃণমূলের পক্ষেই মত দিলেন জনগণ। যে জয়ের ব্যবধান আট হাজারেরও বেশি। তৃণমূল কর্মীদের মতে, সব্যসাচী বিজেপির প্রার্থী হওয়ায় জয় সহজ হয়েছে। মেয়র হিসেবে ওঁর ব্যর্থতা সকলেই জানেন। তা ছাড়া বিপদে মানুষ সুজিত বসুকেই পাশে পেয়ে থাকেন। তাই মানুষও ওঁর পাশে দাঁড়ালেন।
সুজিতবাবু বলছেন, “আগেই বলেছিলাম, বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে একমাত্র মুখ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফের তা প্রমাণ হল। ২০২৪ সালে কী হতে পারে, তারও ইঙ্গিত দিলেন মানুষ। নতমস্তকে জনগণকে প্রণাম জানাই। করোনা সংক্রমণে যাঁদের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের পরিবারের প্রতি পূর্ণ সমবেদনা জানাচ্ছি।”
তবে সল্টলেকের মূল অংশে জয় সহজে আসেনি। কখনও ফলাফল তৃণমূলের দিকে, তো পরের রাউন্ডেই বিজেপির দিকে। শেষে অবশ্য ব্যবধান অনেকটাই বাড়িয়ে দেন সুজিত। এ দিন তিনি বাড়িতে বসে ফলাফলের দিকে নজর রাখছিলেন। বাড়ি থেকে খবর রাখছিলেন বিজেপি প্রার্থীও। যিনি বলেছিলেন, “ওয়াক ওভার দিয়েছে তৃণমূল। শুধু জয়ের শংসাপত্র নেওয়ার অপেক্ষা।”
তৃণমূল কর্মীদের বক্তব্য, যে ভাবে তৃণমূলের প্রার্থী এবং কর্মীদের সম্পর্কে অশালীন মন্তব্য করেছেন বিজেপি প্রার্থী, তা মানুষ মেনে নিতে পারেননি। জয়ী প্রার্থী সেই প্রসঙ্গে বলছেন, “পাগলে কি না বলে। আমি নীচে নেমে কুকথা বলতে পারি না, তার মানে এই নয় যে আমি দুর্বল। এটা আমার রুচিতে বাধে।” সঙ্গে সঙ্গেই দলীয় কর্মীদের উদ্দেশ্যে তাঁর মন্তব্য, “আমাদের দায়িত্ব বেড়ে গেল। শান্ত, সংযত আচরণ করতে হবে। মানুষের বিপদে দাঁড়ানোই এখন প্রধান কাজ।”
যদিও গণনা কেন্দ্রে সুজিত বসুর আসার সময়ে কর্মীদের উচ্ছ্বাসে জয়ী প্রার্থীর সেই আবেদনের প্রতিফলন ছিল না।
আর কী বলছেন বিজেপির প্রার্থী? সব্যসাচীকে এ দিন বার বার ফোন করেও সাড়া মেলেনি। তাঁর ফোন ছিল “নট অ্যাভেলেবেল”।