প্রতীকী চিত্র
দেওয়ালে ভোটের প্রচার লেখা ছিল তৃণমূল প্রার্থীর নামে। ওই তল্লাটেই দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে ব্যানার ঝোলাতে এসেছিলেন বিজেপি কর্মীরা। অভিযোগ, তাদের প্রার্থীর নাম ঢেকে যাবে জানিয়ে তৃণমূলের তরফে ওই জায়গায় বিজেপি কর্মীদের ব্যানার ঝোলাতে বারণ করা হয়। তা নিয়েই গোলমাল বেধে যায় দু’পক্ষের মধ্যে। যা এক সময়ে সংঘর্ষের রূপ নেয়। এই ঘটনায় এক পুর প্রশাসক-সহ আট জন তৃণমূল নেতা-কর্মী আহত হন। যদিও বিজেপির পাল্টা দাবি, তৃণমূলের লোকজনের হাতে প্রহৃত হয়ে তাদেরও কয়েক জন হাসপাতালে ভর্তি।
বৃহস্পতিবার রাতে বারাসত পুরসভার সাত নম্বর ওয়ার্ডের ৫৭ কাঠা এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। তৃণমূলের কর্মীরা জানান, ওই জায়গায় বারাসত বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী চিরঞ্জিত চক্রবর্তীর নামে একটি দেওয়ালে লেখা ছিল। তার অদূরেই বিজেপি প্রার্থী শঙ্কর চট্টোপাধ্যায়ের একটি ব্যানার ঝোলাতে আসেন দলের লোকজন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, তৃণমূলের তরফে বিজেপির লোকজনকে ওই ব্যানার একটু দূরে ঝোলাতে বলা হয়। তৃণমূলের যুক্তি, বিজেপির তরফে যে ভাবে ব্যানার ঝোলাতে চাওয়া হচ্ছিল, তাতে চিরঞ্জিতের নাম লেখা দেওয়ালটি আড়াল হয়ে যাচ্ছিল। বিতর্ক মেটাতে পুর প্রশাসক অরুণ ভৌমিকও ওই জায়গায় তাঁর দল নিয়ে হাজির হন। অভিযোগ, বিজেপির লোকজন তাঁদের ব্যানার সরাতে রাজি হননি। তার জেরেই প্রথমে বচসা বাধে দু’তরফে। অচিরেই তা হাতাহাতিতে পৌঁছে যায়।
অভিযোগ, দলে ভারী থাকায় প্রথমে তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরাই বিজেপির লোকজনকে ধাক্কাধাক্কি করে ওই জায়গা থেকে সরিয়ে দেন। এমনকি, এক বিজেপি সমর্থককে চড় মারা হয় বলেও অভিযোগ। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, প্রাথমিক ভাবে বিজেপির কর্মী-সমর্থকেরা পিছু হটলেও পরে তাঁরা দলবল নিয়ে এসে তৃণমূল কর্মীদের কার্যত ঘিরে মারধর করেন। তাঁদের সঙ্গে বাঁশ, রডও ছিল বলে তৃণমূলের অভিযোগ। তাঁরা জানান, মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে অরুণবাবুরও। আহত কর্মী-সমর্থকদের বারাসতের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তৃণমূলের অভিযোগ, পুলিশ ঘটনাস্থলে থাকলেও গোলমাল নিয়ন্ত্রণে এগিয়ে আসেনি। যদিও বারাসত থানার দাবি, গোলমাল নিয়ে কোনও দলের তরফেই অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। ঘটনায় কেউ গ্রেফতারও হননি।
তৃণমূলের সভাপতি (শহর) অশনি মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘অরুণবাবুর সেখানে পৌঁছনোর খবর পেয়ে তাঁর পরিচিত লোকজনও পৌঁছে যান। অরুণবাবু বিজেপির একটি ছেলেকে বুঝিয়ে বলেছিলেন, চিরঞ্জিতের হোর্ডিং আড়াল হচ্ছে। সে চলে যাওয়ার পরে বিজেপির দুষ্কৃতীরা সেখানে পৌঁছে সংগঠিত ভাবে আক্রমণ চালায়।’’
যদিও বিজেপি প্রার্থী শঙ্কর চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, তৃণমূলের দুষ্কৃতীদের মারে তাঁদেরই লোকজন আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। বিজেপি কর্মীদের মার খেতে দেখে এলাকার মানুষই প্রতিবাদ করেন।