—ফাইল চিত্র।
কোচবিহারের শীতলকুচিতে ৪ জনকে হত্যার ঘটনার কথা বলতে গিয়ে রবিবার নন্দীগ্রামের প্রসঙ্গ টেনে আনলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুটো ঘটনাকে একই সরলরেখায় মিশিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেন তিনি। ২০০৭ সালের ১৪ মার্চ নন্দীগ্রামে গুলি চালানোর ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল ১৪ জন কৃষকের। নন্দীগ্রামের সেই ঘটনার কথা উল্লেখ করে রবিবার শীতলকুচির ঘটনাকে ‘গণহত্যার সামিল’ বলে দাবি করলেন তৃণমূল নেত্রী। ঘটনাচক্রে, যে সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম আন্দোলনকে ভর করে ২০১১ সালে ক্ষমতায় এসেছিল তৃণমূল, সেই নন্দীগ্রামেই এ বার প্রার্থী হয়েছিলেন মমতা। রবিবার শিলিগুড়িতে তিনি বলেন, “নন্দীগ্রামে গণহত্যার ঘটনা ঘটেছিল। এটাও একটা গণহত্যা।”
গুলি চালানো নিয়ে রবিবার কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন তৃণমূলনেত্রী। কেন গুলি চালানো হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। মমতার কথায়, “একটি নিয়ম আছে। লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্যাস, জলকামান ব্যবহার, রাবার বুলেট চালানো। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশিকাতেও তাই বলা আছে। কিন্তু তা না করে কেন গুলি চালানো হল?” মমতা প্রশ্ন তুলেছেন, দেহের উপরের অংশে গুলি চালানো নিয়েও।
কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে বুকে গুলি করে মারার অভিযোগ তুলেছেন মমতা। আর এই ঘটনা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নির্দেশেই ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। সেই সঙ্গে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের পদত্যাগের দাবিও জানিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী। মমতার দাবি, ‘‘সব কিছু শান্তিপূর্ণই ছিল, কোনও রকম ঝামেলা হয়নি।’’ নাম না করে বিজেপি-কে আক্রমণ করে তৃণমূলনেত্রী বলেন, “ওরা ভাবে মানুষকে ভয় দেখাতে হবে। কিন্তু মানুষ ভীত সন্ত্রস্ত নয়। মানুষ বিরক্ত।” ওই চার জনকে ‘নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়েছে’ বলেও রবিবার দাবি করেছেন মমতা।
শনিবার চতুর্থ দফার ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে ৪ জনের মৃত্যু হয়। তার পর থেকেই রাজ্য রাজনীতি উত্তাল। ৭২ ঘণ্টার জন্য কোচবিহারে রাজনৈতিক নেতাদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করে নির্বাচন কমিশন। মমতার অভিযোগ, গুলি-কাণ্ডের পর তথ্য ধামাচাপা দিতেই এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। তাঁর কথায়, “কমিশন যা করছে, তা নজিরবিহীন।” গুলি চালানোর ঘটনা ঘটল, তার পরেও কেন কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ‘ক্লিনচিট’ দেওয়া হল তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূল নেত্রী।