হলদিয়ায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।
নন্দীগ্রাম শুধুমাত্র স্লোগান নয়। জমি আন্দোলনের ভূমি। আর তিনি ‘স্ট্রিট ফাইটার’। তাই মাটি রক্ষায় লড়াই চালিয়ে যাবেন। বুধবার হলদিয়ায় নন্দীগ্রামের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়ে এমনটাই জানলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি তাঁর বার্তা, জমি আন্দোলনের সময়ও নন্দীগ্রামের পাশে ছিলেন, এখনও আছেন, আগামী দিনেও থাকবেন।
বুধবার মনোনয়নপত্র জমা দিতে নন্দীগ্রাম থেকে হলদিয়া কপ্টারে উড়ে এসেছিলেন মমতা। তার পর মঞ্জুশ্রী থেকে পদযাত্রা করে জেলাশাসকের দফতরে পৌঁছন। মনোনয়নপত্র জমা দেন। সেখান থেকে বেরিয়ে তিনি বলেন, ‘‘ভবানীপুর আমার ঘরের জায়গা। সারা বছর হিন্দু, মুসলিম, শিখ, সকলে মিলেমিশে থাকি। পুজোয় সব ক্লাব মিলে আনন্দ করি। ওখানে আলাদা করে সময় দিতে হত না। এক বার গেলেই চলত। কিন্তু শুরু থেকে নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। কৃষক আন্দোলন চলাকালীন টানা ২৬ দিনা ধর্না চালিয়েছিলাম। তাই সিঙ্গুর অথবা নন্দীগ্রামের মধ্যে যে কোনও একটা জায়গা থেকে দাঁড়াব ভেবে নিয়েছিলাম।’’
মমতা আরও বলেন, ‘‘নন্দীগ্রাম আমার কাছে শুধুমাত্র স্লোগান নয়। নন্দীগ্রাম কৃষি আন্দোলনের ভূমি। তাই শেষ বার এসে জানতে চেয়েছিলাম, নন্দীগ্রাম থেকে দাঁড়ালে কেমন হয়। তাতে স্বতঃস্ফূর্ত সাড়া পেয়েছিলাম। মানুষ সমর্থন জানিয়েছিলেন, উচ্ছ্বাস দেখিয়েছিলেন। তাঁদের উৎসাহ দেখেই মনস্থির করে ফেলি। নিজেকে স্ট্রিট ফাইটার মনে করি আমি। আমি এক জন সাধারণ নাগরিক। সে ভাবেই লড়ব।’’
মনোনয়ন জমা দেওয়ার আগে মঙ্গলবারই নন্দীগ্রাম পৌঁছে গিয়েছিলেন মমতা। সেখানে দলের কর্মিসভায় বক্তৃতাও করেন তিনি। তবে নিজের নয়া নির্বাচনী কেন্দ্রে এখনও সে ভাবে প্রচার শুরু করেননি তিনি। যে কারণে মঙ্গলবারের কর্মিসভা খানিকটা স্তিমিতই ছিল। কিন্তু বুধবার হলদিয়ায় মমতাকে কাছে পেয়ে উচ্ছ্বাসের বাঁধ ভাঙে কর্মী-সমর্থকদের। কপ্টার থেকে নেমে জেলাশাসকের অফিসের উদ্দেশে মমতা যখন হাঁটতে শুরু করেন, হাজার হাজার মানুষ তাতে শামিল হন। তৃণমূল নেত্রী মনোনয়ন দিয়ে বেরো পর্যন্ত জেলাশাসকের দফতরের বাইরেই দাঁড়িয়ে ছিলেন সকলে।
ঘটনাচক্রে, মমতা যে দিন মনোনয়ন জমা দিলেন, তখন তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী শুভেন্দু অধিকারী নন্দীগ্রামেই রয়েছেন। জানা গিয়েছে, বিজেপি প্রার্থী হিসেবে বৃহস্পতিবার মনোনয়ন জমা দেবেন তিনি। তাঁর হয়ে প্রচারের জন্য ইতিমধ্যেই মিঠুন চক্রবর্তী, যোগী আদিত্যনাথ, স্মৃতি ইরানির নাম উঠে আসছে। নন্দীগ্রামের বিভিন্ন মন্দিরে যাওয়া নিয়ে বুধবার মমতাকে কটাক্ষ করেন শুভেন্দু। দলের নির্বাচনী কার্যালয় উদ্বোধন করতে গিয়ে মমতার নাম না করে তিনি ‘ভেজাল হিন্দু’ বলে কটাক্ষ করেন।