বাঁকুড়া বিধানসভার এ বারে তৃণমূলের প্রার্থী অভিনেত্রী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। লাইট-সাউন্ড-ক্যামেরার পরিচিত গণ্ডি থেকে সরে এসে ভোটের ময়দানে নেমেছেন টলিউডের এই নায়িকা।
নিজের সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে জমা দিয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী। তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ, গাড়ি, বাড়ি, পেশা, অতীতে কোনও অপরাধ করেছেন কি না... নির্বাচনী বিধি মেনে যাবতীয় কিছু হলফনামায় জানিয়েছেন তিনি। জানিয়েছেন সম্পত্তির পরিমাণও।
সায়ন্তিকা থাকেন সল্টলেকের লাবনী এস্টেট-এ। ২০০৮ সালে সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক হন তিনি।
অন্যান্য তারকা প্রার্থীরা প্রায় সকলেই যেখানে কোটিতে বিরাজমান, সায়ন্তিকা সে তুলনায় বেশ খানিকটা পিছিয়ে রয়েছেন।
নির্বাচন কমিশনের কাছে জমা করা হলফনামা অনুযায়ী তাঁর ব্যাঙ্ক, গাড়ি মিলিয়ে কোটির গণ্ডি পেরতে পারেনি। উল্টে সঞ্চয় এবং ব্যাঙ্কের কাছে তাঁর ঋণের পরিমাণ একে অপরকে সমানে টক্কর দিচ্ছে।
তাঁর হাতে নগদ টাকা আছে মাত্র ৪৩ হাজার ১২৭। বন্ধন, অ্যাক্সিস, এইচডিএফসি এবং আইসিআইসিআই মিলিয়ে মোট ৮টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট রয়েছে তাঁর। এর মধ্যে তিনটি যৌথ অ্যাকাউন্ট।
কিন্তু ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্টের সংখ্যা অনেক হলেও তাতে জমা টাকার পরিমাণ নামমাত্র। বন্ধন ব্যাঙ্কের একটি যৌথ অ্যাকাউন্ট ছাড়া আর প্রায় কোনও অ্যাকাউন্টেই উল্লেখযোগ্য পরিমাণ টাকা জমা নেই।
বন্ধন ব্যাঙ্কের ওই যৌথ অ্যাকাউন্টেই একমাত্র ৩৪ হাজার ৭৯৬ টাকা রয়েছে তাঁর নামে। আর আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের একটি অ্যাকাউন্টে রয়েছে ১ হাজার ৩৮৯ টাকা। আর একটি অ্যাকাউন্টে রয়েছে ২৭৭ টাকা। একটি ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে রয়েছে ১ টাকা। বাকি ৪টি অ্যাকাউন্টের ব্যালান্স শূন্য!
৮টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট মিলিয়ে তাঁর মোট সঞ্চিত অর্থের পরিমাণ দাঁড়ায় ৩৬ হাজার ৪৬৩ টাকা। হলফনামার হিসাব অনুযায়ী তাঁর হাতে নগদ রয়েছে ৪৩ হাজার ১২৭ টাকা।
সায়ন্তিকার হলফনামায় সঞ্চয়ে খানিক অনীহার ঝলক দেখা দিলেও গাড়ি এবং গয়নার প্রতি তাঁর আলাদা ভালবাসা রয়েছে বোঝাই যায়।
তাই ব্যাঙ্ক ব্যালান্স না থাকলেও ৪৩ লাখ ৫৬ হাজার ৪৩৬ টাকার একটি মার্সিডিজ বেন্জ কিনেছেন তিনি। ২০১৮ সালে গাড়িটি কেনেন তিনি।
এ ছাড়া ৩.৫২ গ্রাম ওজনের সোনার গয়না রয়েছে তাঁর। সঙ্গে রয়েছে বহুমূল্য আরও অলঙ্কার, যার আনুমানিক বাজারমূল্য ১ লাখ ২৩ হাজার ৪৩৬ টাকা।
এইচডিএফসি ব্যাঙ্কে তাঁর ১৯ লাখ ৯১ হাজার ৮৯১ টাকার গাড়ি ঋণ রয়েছে। আইসিআইসি ব্যাঙ্কের কাছে ১৪ লাখ ৯৭ হাজার ১৮ টাকার ব্যক্তিগত ঋণ রয়েছে। এ ছাড়া এইচডিএফসি ক্রেডিট কার্ডে ৪ লাখ ৫৪ হাজার ৯৩৩ টাকা এবং অ্যাক্সিস ব্যাঙ্কের ক্রেডিট কার্ডে ১ লাখ ৪৩ হাজার ৩৯৭ টাকা পরিশোধ করতে হবে।
অর্থাৎ তাঁর মোট ঋণ ৪০ লাখ ৮৭ হাজার ২৪০ টাকা। এর বাইরে ৩ লাখ ১০ হাজার টাকার জিএসটি এখনও জমা দেননি তিনি। ব্যাঙ্ক ব্যালান্স, স্থাবর-অস্থাবর মিলিয়ে তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ মাত্র ৪৬ লাখ ৩৯ হাজার ৫২ টাকা।
সায়ন্তিকার নিজের নামে কোনও বাড়ি, ফ্ল্যাট কিংবা জমি নেই। ২০২০-২১ অর্থবর্ষে তিনি মোট ১১ লাখ ১৫ হাজার ৬০ টাকা উপার্জন করেছেন বলে হলফনামায় জানিয়েছেন।