ছবি: সংগৃহীত।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে দেশের অনুন্নয়নের খবর পৌঁছয় না। পরিযায়ী শ্রমিকদের দুর্দশার খবরও তিনি রাখেন না। দেশে অনাহারে মৃত্যুর কথাও জানতে পারেন না তিনি। অথচ হোয়াটসঅ্যাপ-ফেসবুক বন্ধ হওয়ার খবর মোদীর কাছে থাকে। রবিবার তৃণমূলের হয়ে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় ভোটপ্রচারে গিয়ে গেরুয়া শিবির তথা মোদীকে এ ভাবেই আক্রমণ করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে তাঁর দাবি, যে সমস্ত বিজেপি নেতা ভোটপ্রচারে রাজ্যে আসছেন, তাঁরা ভুঁইফোড় বহিরাগত। ভোটের পর তাঁদের খুঁজে পাওয়া যাবে না।
নীলবাড়ি দখলের লড়াইয়ের প্রথম দফা শুরু আগামী ২৭ মার্চ। তার আগে শেষ রবিবারের প্রচারে পূর্ব মেদিনীপুরে গিয়ে জনসভা থেকে রোড শো— সবেতেই গেরুয়া শিবিরের বিরুদ্ধে একের পর এক তির ছুড়েছেন জোড়াফুল শিবিরের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ মুখ অভিষেক।
শনিবার খড়্গপুরের জনসভা থেকে বাংলার উন্নয়ন নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন মোদী। হোয়াটসঅ্যাপ-ফেসবুক বন্ধ থাকার প্রসঙ্গ টেনে মোদী বলেছিলেন, ‘‘৫০-৫৫ মিনিটের জন্য হোয়াটসঅ্যাপ-ফেসবুক-ইনস্টাগ্রাম ডাউন হয়ে গিয়েছিল। তবে বাংলায় তো ৫০-৫৫বছর ধরেই উন্নতি আটকে রয়েছে।’’ রবিবার নিজের ভাষণে সে প্রসঙ্গ তুলে মোদীকে পাল্টা আক্রমণ করেছেন অভিষেক। বলেছেন, ‘‘হোয়াটসঅ্যাপ বা ফেসবুক বন্ধ থাকার খবর প্রধানমন্ত্রীর কাছে থাকে। অথচ দেশে অনাহারে মৃত্যু হলে, তাঁর কাছে খবর থাকে না। দেশের ১৪ শতাংশ নারী নির্যাতন হয় বিজেপিশাসিত রাজ্যে, সে খবরও তিনি রাখেন না। অপরিকল্পিত লকডাউনের জন্য শ’য়ে শ’য়ে মৃত্যু হয়েছে। পানীয় জল, খাবার না পেয়ে মৃত্যু হয়েছে পরিযায়ীদের। প্রধানমন্ত্রীর কাছে খবর নেই। দলিত মেয়ের মৃত্যুর খবরও রাখেন না নরেন্দ্র মোদী। কারণ তাঁদের লড়াইটা হোয়াটসঅ্যাপ-ফেসবুকে। আর আমাদের লড়াইটা মানুষকে সঙ্গে নিয়ে মাঠে–ময়দানে।’’
নীলবাড়ির লড়াইয়ে গেরুয়া শিবিরের হয়ে রবিবার বাঁকুড়ায় সভা করেছেন মোদী। পূর্ব মেদিনীপুরের এগরায় জনসভা এসেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও। এ রাজ্যে আসা মোদী-শাহের মতো বিজেপি নেতাদের ভুঁইফোড়় বহিরাগত বলে কটাক্ষ করেছেন অভিষেক। তিনি বলেন, ‘‘যাঁরা বাংলায় সভা-সমিতি করতে আসছেন, তাঁরা বাংলা বলতে জানেন না। বাংলা পড়তে-লিখতেও জানেন না। বাংলার সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, কৃষ্টি জানেন না। এমনকি ইতিহাসও জানেন না।’’ অভিষেকের দাবি, এ রাজ্যে ভোটের লড়াই আসলে ‘‘ওই ভুঁইফোড় বহিরাগত নেতা বনাম বাংলার মেয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।’’ সেই সঙ্গে তাঁর কটাক্ষ, ‘‘ওই নেতারা আসলে কালীপুজোর সময়কার শ্যামাপোকা। কালীপুজোর শ্যামাপোকাদের দেখা গেলেও তার পর তাদের খুঁজে পাওয়া যায় না। ভোট সময় ওই নেতারাও পরিযায়ীদের মতো বাংলায় আসেন। ভোট মিটে গেলেও তাঁদের আর দেখা যায় না।’’
বিজেপি-কে আক্রমণের পাশাপাশি অভিষেকের দাবি, ফের বিধানসভা দখল করবে তৃণমূল। তাঁর কথায়, ‘‘তৃতীয় বার মুখ্যমন্ত্রীর আসনে বসবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।’’